Published on: আগ ২৯, ২০১৮ @ ২১:৫৩
এসপিটি নিউজ, ঢাকা, ২৯ আগস্টঃ সাংবাদিকতার কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির সামনেই দুষ্কৃতীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হলেন বাংলাদেশের পাবনা জেলার সাংবাদিক সুবর্ণা আক্তার নদী। মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ শহরের রাধানগর মহল্লায় নিজের ভাড়া বাড়ির সামনেই তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে পালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ এই ঘটনায় তাঁর প্রাক্তন শ্বশুর শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল হোসেনকে আটক করেছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, “এফচ এই মর্মান্তিক ঘটনায় অত্যন্ত ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ। উত্যাকারীদের অতি দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য আমি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ তৎপরতার আহ্বান জানাই।”
জানা গেছে, সুবর্ণা বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘আনন্দ টিভি’র পাবনা প্রতিনিধি এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক জাগ্রত বাংলার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন। তিনি পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর মেয়ে। তার ৬ বছরের একটি শিশু কন্যা সন্তান রয়েছে।
এদিকে বুধবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের মানববন্ধন থেকে হত্যাকারীদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পাবনা প্রেসক্লাব সড়ক সংলগ্ন তার অফিসে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির সামনে আগে থেকে ওত পেতে ছিল দুর্বৃত্তরা। সুবর্ণা সেখানে পৌঁছতেই তারা তাকে ঘিরে ফেলে পেটে, মাথা ও ঘাড়ে অতর্কিত ভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এসময় তার চিৎকারে বাসা থেকে মা-মেয়ে এবং আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে রাতেই পাবনা প্রেসক্লাব ও পাবনা রিপোটার্স ইউনিটির নেতৃবৃন্দসহ সাংবাদিকরা হাসপাতালে ছুটে যান। পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসসহ জেলা পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবায়দুল হক জানান, নিহত সুর্বণার মা মর্জিনা খাতুন মেয়ের হয়ে হয়ে বুধবার তিন জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে পাবনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুবর্ণার প্রাক্তন শ্বশুর শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল হোসেনকে আটক করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে এ হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে না পারলেও কয়েকটি ইস্যুকে সামনে নিয়ে পুলিশ মাঠে নেমেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই তা প্রকাশ করা যাচ্ছে না। ময়না তদন্ত শেষে বুধবার বাদ আসর এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে জানাজা নামাজ শেষে তাকে বালিয়াহালট গোরস্থানে দাফন করা হয়।
সুবর্ণার বড় বোন চম্পা খাতুন জানান, সুবর্ণার প্রথম স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হলে দ্বিতীয় বিয়ে হয়। যৌতুক ও শারীরিক নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে ২০১৭ সালের ৩০ মে তার ২য় স্বামী রাজিব হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন তিনি। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। ওই মামলার কারণেই সুবর্ণাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার বড় বোন চম্পা খাতুন। তার মেয়ে প্রথম স্বামীর।
Published on: আগ ২৯, ২০১৮ @ ২১:৫৩