প্রতিভা যখন মূল্যহীনঃ এশিয়ান গেমসের ব্রোঞ্জ জয়ী বেচছেন চা

খেলা দেশ
শেয়ার করুন

Published on: সেপ্টে ৭, ২০১৮ @ ১৫:২৪

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ এক সপ্তাহও হয়নি। জাকার্তা এশিয়ান গেমসে মাঠে নেমে দেশের সম্মান রক্ষা করেছেন। অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়েছে সোনা-রূপো। কিন্তু লড়াই ছেড়ে পিছু হটেনি। অবশেষে দেশকে ব্রোঞ্জ এনে দিয়েছেন হরিশ কুমার সেপাক টাকরো খেলায়। কিন্তু তাতে কার কি এল-গেল বলতে পারেন! কিভাবে আমাদের দেশ খেলাধুলোয় বেশি দূর এগোতে পারে না আবারও তার জ্বলন্ত প্রমাণ উঠে এল এই প্রতিভাধর হরিশ কুমারের রোজকার জীবনযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে।যে প্রতিভাকে ধরে রাখতে তাকে আরও ভালোভাবে গড়ে তুলতে হরিশদের মতো খেলোয়াড়দের একটা ব্যবস্থা করা উচিত ছিল, না আজ তাকেই খেলার পাশাপাশি পরিবারের কথা ভেবে বাবার ছোট্ট চায়ের দোকানে এসে চা বেচার কাজে তাকে সাহায্য করতে হচ্ছে। সত্যিই এ আমাদের কাছে এক বড়ই দুর্ভাগ্যের বিষয়!

সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলছিলেন হরিশ কুমার বলছিলেন, ” আমাদের অনেক বড় পরিবার। অনেক সদস্য। আয়ের পথ খুব সামান্য। তাই আমি বাবাকে আমাদের ছোট্ট চায়ের দোকানে চা বিক্রির কাজে সাহায্য করি। দিনে এর মধ্যে থেকেই চার ঘন্টা বের করে নিয়েছি অনুশীলনের জন্য। সময়টা এমনভাবে নিয়েছি যখন দোকান বন্ধ থাকে। দুপুর ২টো থেকে ৬টা। আমি চাই একটা ভালো চাকরি যা মার পরিবারকে সাহায্য করবে।”

ভাবুন তো এই ছেলেটি নিজের খেলা নিয়ে ভাববে না পরিবারের মুখে দুমুঠো খাবার কিভাবে তুলে দেবে তা নিয়ে ভাববে। আজ যদি তার একটা চাকরি হয়ে যেত তাহলে সে আরও খোলা মনে নিজের খেলায় মনোনিবেশ করতে পারত।

হরিশ তাঁর লড়াই আর সেপাক টাকরো খেলা নিয়ে বলছিলেন-“২০১১ সালে আমি এই খেলার সঙ্গে যুক্ত হই। আমরা যখন টায়ার নিয়ে খেলতাম তখন কোচ হেমরাজ আমাকে বেছে নিয়েছিল। এরপর তিনি আমাকে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (সাই)-এ নিয়ে যান। তারপর আমি প্রতি মাসে একটা টাকা পেতাম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ক্রীড়া সরঞ্জামও মিলত। আমি এরপর অনুশীলন চালিয়ে গেছি দেশের জন্য কিছু করে দেখাব বলে।”

হরিশের মা বলছিলেন তাঁর ছেলেকে তিনি কিভাবে খেলার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়ে গেছেন। তিনি বলেন,”আমার সন্তান অনেক লড়াই করে উঠে এসেছে। তার বাবা একজন অটো ড্রাইভার এবং আমাদের একটা ছোট্ট চায়ের দোকান আছে। সেখানে আমার ছেলে তার বাবাকে চায়ের দোকানে সাহায্য করে থাকে। আমি সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ যে তারা আমার সন্তানকে খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী দিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ তার কোচ হেমরাজের কাছে যিনি ছেলেকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দিতে পেরেছেন।”

হরিশের ভাই ধবন বলেন, “একটা সময় ছিল যখন আমাদের কাছে ভাড়া দেওয়ার মতো টাকা ছিল না। এই সময় তার কোচ হেমরাজ নিজে দায়িত্ব নিয়ে হরিশকে অনুশীলন করিয়েছেন এবং স্টেডিয়ামে প্রবেশ করিয়েছেন। পরে সাই আর্থিকভাবে মাসে সাহায্য করেছে। আমি এরপরও সরকারের কাছে আবেদন রাখতে চাই, ” সরকার যদি আমার ভাইকে একটা সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় তা হলে আমাদের পরিবারটা ভালোভাবে চলবে।”

Published on: সেপ্টে ৭, ২০১৮ @ ১৫:২৪


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 + = 22