Published on: মে ১৪, ২০১৮ @ ১৬:৩৬
এসপিটি নিউজ ব্যুরোঃ যা আশঙ্কা করা হয়েছিল শেষ পর্যন্ত তাই হল রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে। নিরাপত্তার ফাঁক দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় হিংসার বলি বেড়ে দাঁড়াল ১৪। যার মধ্যে পাঁচ জনই হল তৃণমূলের। ভোটের পড়ল দুপুর তিনটে পর্যন্ত ৫৬শতাংশ। বিরোধীরা বলছে, এমনটা হবে তা তো আগেই আশঙ্কা করা হয়েছিল। এভাবে কি ভোট হয়?ইতিমধ্যে কেন্দ্র রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে ভোট চলার সময় খোদামবাড়িতে মারা গেছে দুই সিপিএম কর্মী। মৃতদের নাম যজ্ঞেশ্বর ঘোষ ও অপু মান্না। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বিজেপি কর্মী তপন মণ্ডল, নওদায় মারা গেছে শাহিন শেখ নামে এক নির্দল কর্মী। কোচবিহারের গোপালপুরে মারা গেছে দুলাল ভৌমিক। অভিযোগ, তিনি নাকি ছাপ্পা ভোটে বাধা দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় বুথ দখলকে কেন্দ্র করে বোমাবাজি। মৃত্যু হল ভোলা শেখ দফাদারের। শান্তিপুরে বিবেকানন্দ রোডে গণপিটুনিতে এক দুষ্কৃতীর মৃত্যু হয়েছে। তেহট্টে মারা গেল তৃণমূল কর্মী কৃষ্ণপদ সরকার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে নয়াপাড়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আরিফ আলি গাজি নামে এক তৃণমূল কর্মী নিহত হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায় পাঁচপোতার একটি বুথে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে। তাইবুর গায়েন নামে এক সিপিএম সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে।দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমান্ডিতে একটি বুথে এদিন এক দল বহিরাগত জোড় করে ঢুকতে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বাধা দেয়। দু’পক্ষের মধ্যে বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। আর সেই সময় চলে গুলি। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বিশু টুডু নামে এক ব্যক্তি। আর তারপরই শুরু হয়ে যায় মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে টানাটানি। বিজেপি-তৃণমূল দ’পক্ষের দাবি-বিশু তাদের কর্মী।যাদেরই কর্মী হোক বিশু সে কিন্তু আর কোনওদিনই কার ও পতাকা বহন করতে পারবে না। স্থানীয়রা ধিক জানাচ্ছেন এধরনের রাজনীতি আর ভোটের নামে প্রহসনকে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে নিহত হয়েছেন তৃণমূল কর্মী অমিত সাহা।বুথের ভিতর ঢুকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে তার মৃত্যু হয়।উত্তর ২৪ পরগনার বানীপুরে সংঘর্ষে মৃত উজ্জ্বল শুর নামে এক তৃণমূল কর্মী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারে খোকন বৈদ্য নামে এক তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার
এছাড়াও একাধিক জায়গায় চলেছে গুলি-বোমার লড়াই। কোথাও চলে সংঘর্ষ। মুর্শিদাবাদের শ্যামনগরে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ২ মহিলা সহ চারজন। কোচবিহারে বোমাবাজিতে আহত হয়েছে এক পুলিশ কর্মী। বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে বীরভূমের মল্লারপুরে।বোমাবাজির হাত থেকে রেহাই পায়নি কেশপুরও। সেখানেও চলেছে বোমাবাজি। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় ইট। এমনকী, এক নির্দল প্রার্থীর নেতৃত্বে এক দল দুষ্কৃতী তৃণমূল এজেন্টদের মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।এই ঘটনায় পাঁচ তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছে। রানিগঞ্জে শাসক দলের কর্মীদের সঙ্গে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের এমন সংঘর্ষ বাঁধে যাতে এলাকা রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। পরিস্থিতির ভয়াবহতার আঁচ বুঝে এলাকা ছেড়ে দৌড়তে থাকে ভোটাররা। কোচবিহারের দিনহাটার ১৫১ নম্বর বুথের বাইরেও চলে বোমাবাজি ও গুলি। সকালের দিকে এই জেলার গীতালদহেও একটি বুথে বন্ধ হয়ে যায় ভোটগ্রহণ। মুখে কালো কাপড় বাঁধা দুস্কৃতীরা সোজা ঢুকে পড়ে বুথের মধ্যে। যা দেখে ভয়ে কাঁপতে থাকেন ভোট কর্মীরা। তারা জেলা পরিষদের ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়।শান্তিপুরেও বুথ দখলের চেষ্টা হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি বাইকে। এর ফলে কিছু সময় ভোটগ্রহণ পর্ব বন্ধ থাকে।
হুগলির খানাকুলে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর স্বামীকে মারধর করের অভিযোগ উঠেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে সেখানকার একটি বুথ। তারকেশ্বরে বুথ জ্যামের অভিযোগে ১৬জনকে আটক করেছে পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার পরিত্যক্ত গুদাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৬০টি তাজা বোমা।জ্যাংরায় বোমাবাজির অভিযোগ জমা পড়েছে। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে ব্যালট বক্সে আগুন ধরানোর অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তবে সবচেয়ে চাঞল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীতে। পূর্বস্থলীর ১৩/১ নম্বর বুথে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটারদের ভোট দেওয়ার ছবি ধরা পড়েছে জি ২৪ ঘণ্টার টিভি নিউজ চ্যানেলের ক্যামেরায়। প্রার্থী সেকথা স্বীকার ও করেছেন। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে লোক ঢূকিয়ে ভোট লুঠের অভিযোগ আনলেন। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, যে মন্ত্রী এসব অভিযোগ করেছেন, উনি এসব অভিযোগ ভালোই করতে পারেন। আসলে নিজেদের সন্ত্রাসকে ঢাকা দিতেই এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। কি হচ্ছে সবাই তা দেখছে।
ছবি-নদিয়ার শান্তিপুরে আগুনে পুড়ছে বাইক(পিটিআই, হিন্দুস্তান টাইমস)
Published on: মে ১৪, ২০১৮ @ ১৬:৩৬