আজমিরে খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর দরগা ও পুস্করে ব্রহ্মার মন্দির দর্শন করলেন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ

Main দেশ ভ্রমণ
শেয়ার করুন

Published on: মে ১৪, ২০১৮ @ ২১:২১

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ ভারতের মধ্যে এই দুটি জায়গার আধ্যাত্মিক মাহাত্ম্য অপরিসীম। সারা বিশ্বেই এর সুনাম ছড়িয়ে আছে। রাষ্ট্রপতি রামলাল কোবিন্দ সোমবার সেই দুটি স্থান রাজস্থানের আজমিরে খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর দরগা এবং পুস্করে জগৎপিতা ব্রহ্মার মন্দির দর্শন করলেন।

চিশতীয় ধারায় ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক হলেন খাজা মইনুদ্দিন চিশতী। ‘গরিবে নেওয়াজ’ নামেও তিনি পরিচিত। খাজা মইনুদ্দিন চিশতী পারস্যের সিসটান রাজ্যের চিশতীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর যখন ১৫ বছর বয়স তখন তাঁর পিতা-মাতা মারা যান। শোনা যায়, তিনি তাঁর পিতার কাছ থেকে একটি উইন্ডমিল ও ফলের বাগান উওরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিন তাঁর সমস্ত সম্পত্তি গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। এরপর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য বুখারার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সেখান থেকে ফিরে তিনি প্রসিদ্ধ সুফি সাধক খাজা উসমান হারুনীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। ২০ বছর গুরুর সেবায় থাকার পর উসমান হারুনী তাঁকে খিলাফত বা সুফি প্রতিনিধিত্ব প্রদান করেন।

এরপর খাজা মইনুদ্দিন চিশতী সারা পৃথিবীর বহু দেশ ভ্রমণ করে আরব হয়ে ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান হয়ে লাহোর পরে আজমিরে এসে বাস করতে শুরু করেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ হল “আনিসুল আরওয়াহ”। পীর উসমান হারুনীর নির্দেশে ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম ধর্ম প্রচারে খাজা মইনুদ্দিন চিশতী ছিলেন একজন ঐতিহাসিক সুফি ব্যক্তিত্ব। প্রতিবছর ১ রজব থেকে ৬ রজব পর্যন্ত আজমির শরীফে তাঁর সমাধিস্থলে ওরস অনুষ্ঠিত হয়। নানা ধর্ম, বর্ণ, গোত্রের মানুষের মহামিলন হয় সেখানে।

পুস্করে ব্রহ্মাজীর মন্দির ঘিরেও আছে ইতিহাস। পুস্কর ভারতের প্রাচীন শহরের মধ্যে অন্যতম। রাজস্থানের আজমির জেলায় অবস্থিত আরাবল্লী রেঞ্জে পুস্করে তীর্থ। যার অর্থ হল তীর্থ স্থলের রাজা। এখানে অনেক মন্দির আছে, তবে তার মধ্যে পুস্করই সবচেয়ে প্রসিদ্ধ। পুস্কর ঝিল লাগোয়া এই মন্দির সারা বিশ্বে হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান। পুস্করের এই হ্রদে ৫২টি ঘাট আছে।

শোনা যায়, পুরাকালে এক রাক্ষস মানুষদের হত্যা করত। ব্রহ্মাজী তখন পদ্মের উপর মন্ত্র জপ করে সেই রাক্ষসকে বধ করেব। পুস্করে তিনটি জায়গায় পদ্মের কিছু অংশ পড়ে। পরে এই জায়গাগুলিকে জেষ্ঠ্য, মধ্য ও কনিষ্ঠ পুস্কর বলা হয়।রাক্ষসীর হাত থেকে পুস্করকে রক্ষা করার জন্য ব্রহ্মাজী ফের একটি যজ্ঞের আয়োজন করেন। আর সেই যজ্ঞে ব্রহ্মাজীর স্ত্রী সাবিত্রীদেবীর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সেই সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। আর তাই তিনি যজ্ঞ সম্পূর্ণ করতে গায়ত্রী নামে এক কন্যাকে বিয়ে করে ফেলেন। আর তারপরই সাবিত্রীর কাছে তাঁর স্বামীর বিয়ের খবর পৌঁচতেই তিনি ক্ষুব্ধ গয়ে ব্রহ্মাজীকে অভিশাপ দিয়ে বলেন, আপনি দেবতা হয়ে যে কাজ করেছেন এজন্য আপনাকে এর সাজা ভুগতেই হবে। কোথাও আপনার পুজো হবে না। কেউ আপনার পুজো করবে না। একথা শুনে সব দেবতারা ত্রাহি ত্রাহি করে ওঠে। সকলেই দেবী সাবিত্রীকে অভিশাপ ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ জানায়। এরপর দেবী সাবিত্রী দেবতাদের অনুরোধ মেনে বলেন, ঠিক আছে শুধু মাত্র এই পুস্করেই আপনার পুজো হবে। বিশ্বের আর কোথাও আপনি পুজো পাবেন না। যদি কেউ আপনার পুজো করে তবে তার সর্বনাশ হবে। এরপর ভগবান বিষ্ণু ভমাজীকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন। তাই দেবী সাবিত্রী তাঁকে অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন, আপনাকে স্ত্রীর বিরহের কষ্ট সইতে হবে। আর তাই ভগবান বিষ্ণুকে ত্রেতা যুগে রাম অবতারে জন্মে ১৪ মাস বনবাসে কাটিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিরহের কষ্ট সইতে হয়েছিল।

এদিন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ এই দুটি পবিত্র স্থান দর্শন করেন।

Published on: মে ১৪, ২০১৮ @ ২১:২১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 1 = 2