
Published on: মে ১৭, ২০১৮ @ ১৮:৩০
এসপিটি নিউজ ব্যুরোঃ ‘এ তো সেই চুপচাপ ফুলে ছাপ’-তবে এ ফুল ঘাস ফুল নয়, পদ্মফুল। এভাবে বিজেপি যে উঠে আসবে তা কিন্তু আশাই করেনি তৃণমূল নেতৃত্ব। তারা বলতে শুরু করেছিল এ রাজ্যে আর পদ্মই ফুটবে না কোনওদিন। সেখানে একটা দুটো নয় দোর্দন্ডপ্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা-মন্ত্রীদের ডেরায় ঢুকে তাদের ঘর দখল করে নেওয়া সাধারণ ব্যাপার নয়। তাও আবার এবার যে ধরনের ভোট হয়েছে তাতে তো এসব আশা করাই অবান্তর হয়ে উঠবে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিজেপি শাসক দলের চ্যালেঞ্জকে সাদরে গ্রহণ করে তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূমের মতো কঠিন জেলা থেকে মোট ১১টি পঞ্চায়েত।
এমনটা হবে তা তৃণমূলের কেউ আঁচ করতে পারেনি। খালি উন্নয়ন আর উন্নয়ন। তৃণমূল কংগ্রেস বুঝেছিল উন্নয়নের ফিরিস্তি কাজে লাগিয়েই বাজিমাত করে বেরিয়ে যাবে তারা পঞ্চায়েত ভোটে। এজন্য তারা বিরোধীদের রোখার নানা কৌশলও করেছিল বলে বিরোধীদের অভিযোগ। কিন্তু ফল বেরোতেই দেখা গেল সেসব কৌশল সব উন্নয়নের ভিতর গা ঢাকা দিয়েছে।
খোদ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা যার দায়িত্বে আছন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বীরভূম জেলা যার দায়িত্বে আছেন মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত স্নেহধন্য অনুব্রত মণ্ডল। আর বিজেপি এই দুই জেলা দিয়েই তাদের কার্যসিদ্দি করে দেখাল। যেখানে দেখা গেল বীরভূমে অনুব্রতর গড়ে ময়ূরেশ্বরের মল্লারপুর-১ এবং মহম্মদবাজারের গণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিল বিজেপি। যা তৃণমূলের বড় জয়ের মধ্যেও এক রকমের পরাজয়। একই অবস্থা পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা-২ ব্লকেও। সেখানেও দেখা গেল ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে বিজেপি ছিনিয়ে নিয়েছে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত। যার মধ্যে আছে আবার বাঘঘরা গ্রাম পঞ্চায়েত। এটা সেই পঞ্চায়েত যেখানে বাঘ ঢুকে পড়েছিল। শত চেষ্টা করেও বন দফতের সাধ্যে কুলোয়নি বাঘটিকে ধরার। আবার শিকার উৎসব শুরু হয়ে যাওয়ায় পঞ্চায়েত ভোটের কথা ভেবে তাতেও বাধা দেওয়া হয়নি। এমনকী নিরীহ বাঘটিকে আদিবাসীরা যখন হত্যা করল তাদের বাঁচানোর প্র্যাসও নিল সরকার। কিন্তু কী হল, সেই বাঘঘরার বাসিন্দারা কিন্তু পাশার ঘুঁটি উলটে দিল। চুপচাপ গিয়ে পদ্মে ছাপ মেরে এল। যার ফল বাঘঘোড়া এবার হাতছাড়া হয়ে গেল তৃণমূলের।
বিশেষ করে এই জেলা দেখার দায়িত্বে আছেন শুভেন্দু অধিকারী। এর আগে উপ-নির্বাচন করে তিনি বাজিমাত করলেও পঞ্চায়েতে কিন্তু তার কৌশল টিকল না অন্তত এই গড়বেতা-২ ব্লকে। যা ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল শিবিরকে বেশ চিন্তায় ফেলে দিল।
একই চিত্র দেখা গেল আবার বাঁকুড়া জেলাতেও। সেখানেও কিন্তু দেখা গেল পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত পুড্ডি, সারেঙ্গা বিক্রমপুর, কেঞ্জাকুড়া, মানকালী নিজেদের ধলে নিল বিজেপি। যা তৃণমূল শিবিরের কাছে বেশ অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াল।
Published on: মে ১৭, ২০১৮ @ ১৮:৩০