
Reporter: Aniruddha Pal
এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৩ জুন: পুজোর মরশুমের আগে একেবারে তৈরি তামিলনাড়ু পর্যটন। গত দু’বছরের ধাক্কা কাটিয়ে উঠে দক্ষিণের এই রাজ্য পর্যটনে নতুন করে সেজে উঠেছে। বাংলার মানুষের কাছে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে তামিলনাড়ু খুবই পছন্দের গন্তব্য। সেকথা স্বীকার করে নিয়ে পর্যটন আধিকারিক ইলোংগোভান বলেছেন যে তাদের রাজ্যে মোট যে পর্যটক যায় তার ৫০ শতাংশই হল বাংলার। বাকি অন্যান্য রাজ্যের।
টিটিডিসি আর তামিলনাড়ু সম্পর্কে কিছু কথা
তামিলনাড়ু ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (টিটিডিসি) ১৯৭১ সালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পর্যটন সম্পর্কিত অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে তামিলনাড়ুতে পর্যটনের প্রচারের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।তামিলনাড়ু অনেক কারণেই একটি চমৎকার পর্যটন স্থান। একটি বহু-গন্তব্য রাজ্য। এর রয়েছে গৌরবময় সংস্কৃতি ও ইতিহাস। বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতার একটি রয়েছে তামিলনাড়ুতে । এটি দ্রাবিড় শিল্প ও সংস্কৃতির আবাসস্থল যা এর স্বতন্ত্র সঙ্গীত এবং নৃত্য দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। অর্থাৎ
আম উৎসব, চা উৎসব, সঙ্গীত উৎসব, নৃত্য উৎসব, ইত্যাদি তামিলনাড়ুকে পর্যটকদের কাছে খুবই আপন করে নিতে সাহায্য করেছে। ৩০ হাজারেরও বেশি মন্দির, আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র এবং ঘন বন, প্রচুর বন্যপ্রাণী, বড় পর্বতমালার মতো বিভিন্ন ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য সহ “মন্দিরের দেশ” হিসাবে উল্লেখ করা হয়। , সমুদ্র সৈকত, পাহাড়ি রিসর্ট ইত্যাদি। তামিলনাড়ু তুষার আচ্ছাদিত চূড়া ছাড়া সব কিছু দেখার জন্য এক এবং সকলকে আলোকিত করে।
গত ১০ জুন থেকে ১২ জুন কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল পর্যটন মেলা ২০২২। সেখানে নিজেদের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছিল তামিলনাড়ু পর্যটন। তিন দিন বহু মানুষের ভিড় হয়েছিল তামিলানাড়ুর প্যাভিলিয়নে। বহু মানুষ এসেছেন। তারা দেখেছেন। খোঁজ-খবর নিয়েছেন। কেউ কেউ বেড়ানোর পরিকল্পনাও সেরে ফেলেছেন। এই প্রসঙ্গে তামিলনাড়ু পর্যটনের আধিকারিক ইলাঙ্গোভান সংবাদ প্রভাকর টাইমস-কে আগের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। বলেন ২০২০ সালে তামিলানড়ুতে পর্যটকদের উপস্থিতি খুব খারাপ ছিল। মাত্র ৫-৬ শতাংশ। ধীরে ধীরে পর্যটকদের উপস্থিতির হার বাড়ছে। এতে বড় ভূমিকা পালন করে পশ্চিমবঙ্গ। কারণ। এই রাজ্য হল তামিলানাড়ুর খুব গুরুত্বপূর্ণ বাজার। এখানকার বহু মানুষ প্রতি বছর তামিলনাড়ুর সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণ করেন। এখানে যত মানুষ ভ্রমণ করেন তার ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ভ্রমণ করেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে। অন্য সব রাজ্য মিলিয়ে থাকে বাকি ৫০ শতাংশ।
ইলাঙ্গোভান বলেন- এখন পরিস্থিতি অনেকটা ভালো। স্বাভাবিকভাবেই অগ্রগতি ঊর্ধমুখী। গত দু’বছরে মানুষ পর্যটনের কথা ভাবতেই পারেনি। কারণ, কোভিড তাদের ঘরে আটকে রেখেছিল। আজ পরিস্থিতি বদলেছে। মানুষ আবার ঘর ছেড়ে বেরোতে শুরু করেছে। ফলে পর্যটন এখন এগোচ্ছে। আগের চেয়ে ভালো জায়গায় যাচ্ছে।
আমাদের মূল আকর্ষণ হল আধ্যাত্মিক পর্যটন। আছে বিচ ট্যুরিজম। বিশ্বখ্যাত মনুমেন্ট।ভারতে মোট ৪৫ মনুমেন্ট আছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই তামিলনাড়ুতে। পাহাড়ি স্থান উটি।
কোথায় যাবেন, কি দেখবেন
- কোডাইকানালঃ কুরিঞ্জি আন্দাভর টেম্পল, বেরিজাম লেক, মৈর পয়েন্ট, পাইন ফরেস্ট, মান্নাভানুর ইকপো ট্যুরিজম স্পট, থালাইয়ার ফলস, ডল্পিন’স নোজ, দিন্দিগুল রক ফোর্ট, পামবার ফলস সহ আরও নেক কিছু।
- চেন্নাইঃ তামিলনাড়ুর রাজধানী। আছে বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত মারিনা বিচ। এছাড়া আরও অনেক দেখার জায়গা আছে।
- চিদম্বরমঃ ভগবান নটরাজের বিখ্যাত মন্দির এখানে অবস্থিত।
- কোর্টাল্লামঃ ‘স্পা অব দ্যা সাউথ’ বলকা হয়। এখানে আসার সময় হল জুন থেকে সেপ্তেম্বর। আছে অসাধারণ একটি ওয়াটার ফলস। এছাড়াও আছে থিরুচেন্দুর মুরুগান টেম্পল, থিরুনেলভেলি, কৃষনাপূরম, তেঙ্কাশি এবং মুদান্থুরাই টাইগার সাঞ্চুয়ারি।
- হোগেনাক্কালঃ এই জায়গাটিকে স্বাস্থকর বলে অভিহিত করা হয়। এখানেও এক উন্দর ওয়াটার ফলস আছে। ব্যাঙ্গালোর হল এর নিকটবর্তী বিমানবন্দর।
- কাঞ্চিপূরমঃ হাজার মন্দিরের শহর হল কাঞ্চিপূরম।
- কন্যাকুমারীঃ তিনটি সমুদ্রের সঙ্গমস্থল। এখানে আছে কুমারী আম্মান তেম্পল। ১৩৩ ফুট উঁচু থিরুভাল্লুভার স্ট্যাচু, গান্ধী মেমোরিয়াল বিচ, বিবেবকানন্দ মেমোরিয়াল।
- মাদুরাইঃ আছে মন্দির এবং গান্ধী মিউজিয়াম। মুরুগান টেম্পল,ভগবান আজাগর টেম্পল, পালানি টেম্পল, সুরুলি ওয়াতার ফলস, কোর্টাল্লাম ওয়াটার ফলস, ভাইগাই ড্যাম সহ আরও অনেক।
- মামাল্লাপূরমঃ এখানে বিশ্ব ঐতিহ্যমন্ডিত মনুমেন্ট পল্লাভাস। আছে শোর তেম্পল, টাইগার কেভ।
এছারাও আছে মেঘামালাই, মুদুমালাই, নাগোর, উটি, রামেশ্বরম, শ্রীপূরম, তাঞ্জাভুর, তিরুচেন্দুর, তিরুভান্নামালাই, তিরুচিরাপল্লী, ট্র্যাণকুইবার, ভেলাঙ্কান্নি, ভাল্পারাই, ইয়েলাগিরি, ইয়ারকৈর।