
এসপিটি নিউজ, ডেবরা(পশ্চিম মেদিনীপুর), ২২ ডিসেম্বর: বিনা টিকিটে ভ্রমণ দন্ডনীয় অপরাধ।ধরা পড়লে ফাইন না হলে জেল। রেলের তরফ থেকে এমন কত বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়ে থাকে এজন্য রেল কত টাকা খরচও করে। কিন্তু সেই রেল যদি টিকিট কাটতে আগ্রহী যাত্রীদের টিকিট দিতে না পারে তাহলে তাদের কি সাজা হতে পারে সেটা কি এবার লেখা হবে বা বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে? বোধ হয় নয়। অন্তত আমাদের দেশে তো তা একেবারেই অলীক ভাবনা। কিন্তু রেলের গা ছাড়া মনোভাবের জন্যই কিন্তু আজ শুক্রবার হাওড়া-খড়্গপুর রুটের রাধামোহনপুর স্টশনে এসে টিকিট কাটতেই পারলেন না। যার ফলে তারা ট্রেনেও উঠতে পারলেন না। বাধ্য হয়ে তারা স্টেশনে ট্রেন আটকে রেখে ক্ষোভ উগরে দিলেন।
আজ বেলার দিকে কিছু যাত্রী ট্রেন ধরবেন বলে ডেবরার রাধামোহনপুর স্টেশনে এসেছেন। টিকিট কাটতে যেবেন বলে যেই না টিকিট কাউন্টারের দিকে পা বাড়িয়েছেন দেখেন সেই টিকিট কাউন্টারই যে বন্ধ হয়ে আছে। ভাবুন, একবার, ছুটির দিনও নয়, একেবারে কাজের দিন। দিনের সবচেয়ে ব্যস্ত সময়। আর তখন স্টেশনে টিকিট কাউন্টার কিনা বন্ধ আছে। কয়েকজন যাত্রী জানার চেষ্টা করেছিলেন। কেউ সঠীকভাবে বলতেই পারেনি কেন এভাবে বন্ধ হয়ে আছে টিকিট কাউন্টার। আর টিকিট না করে ট্রেনে চাপাই যে মহাপাপ, বলছে খোদ রেল দফতর। না হলে যে তারা মোটা টাকা জরিমানা না দিতে পারলে শ্রীঘরে ঢুকিয়ে ছাড়বে। আর এখন নিজেরাই কিনা বন্ধ করে রেখেছে টিকিট কাউন্টার। যাত্রীদের মুখে এভাবেই ঘুরছিল এসব কথাবার্তা।তাদের প্রশ্ন, আমরা টিট না কেটে উঠলে কালো পোশাকধারীরা আমাদের পাকড়াও করেন। এখন আমরা টিকিট কাটতে চাইছি, অথচ তারাই আমাদের কোণও টিকিটের ব্যবস্থা করে দিতে পারছেন না। বন্ধ করে রেখে দিয়েছে কাউন্টার। কয়েকজন রেল্কর্মী জানালেন, লোক না থাকার জন্যই বন্ধ আছে কাউন্টার। যাত্রীদের প্রশ্ন, এই যে কথাটা আপনি আমাদের বললেন তাহলে এভাবেই আমাদের যখন ধরবে তখন আপনি আপনার এই জবাবটাই দিয়ে দেবেন, কি পারবেন তো? অবস্থা বেগতিক বুঝে মানে মানে সরে পড়েন সেই রেলকর্মী। তখন বাধ্য হয়ে রেলযাত্রীরা রাধামোহনপুরে কিছু সময় এল অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়।
আজ বেলা ১২টা থেকে ট্রেন অবরোধ করেন তাঁরা। প্রায় দুঘণ্টা চলে অবরোধ। আটকে পড়ে একাধিক ট্রেন। ডেবরার রাধামোহনপুর স্টেশনে মাঝেমধ্যেই বন্ধ থাকে টিকিট কাউন্টার। ট্রেনের সময়ে টিকিট পান না যাত্রীরা। দীর্ঘদিন অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। তাই আজ বেলা ১২টা থেকে রাধামোহনপুর স্টেশনে অবরোধ করেন যাত্রীরা। দক্ষিণ-পূর্ব শাখার হাওড়া-খড়গপুর রুটের আপ ও ডাউন লাইনে একাধিক লোকাল এবং দূরপাল্লার ট্রেন আটকে পড়ে এই অবরোধের জেরে।ঘটনাস্থানে গিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তোলে রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এদিনের ঘটনা রেলের কাছে কিন্তু প্রশ্ন রেখে দিয়ে গেল-রেল ভুল করলে তাকে কে শাস্তি দেবে, শুধু কারণ আর অজুহাত দেখিয়েই কি দিনের পর দিন পার পেয়ে যাবে রেল?