
সংবাদদাতা-বাপ্পা মন্ডল
ছবি-বাপন ঘোষ
Published on: এপ্রি ২০, ২০১৯ @ ০০:২৩
এসপিটি নিউজ, ঝাড়গ্রাম, ১৯ এপ্রিলঃ একটা কথা সব সময় মেনে চলা উচিত- তা হল, যেখানে যেমন সেখানে তেমন। বিশ্বের সমস্ত অরণ্য এলাকাতেই একটা রীতি মেনে চলে সেখানকার বাসিন্দারা। বাইরের কেউ যদি সেই রীতি ভেঙে ফেলে তবে তাকে তার শাস্তি ভোগ করতে হয়। আর তা দিয়ে থাকে সেই অরণ্যের অধিপতি। অর্থাৎ সেখানকার অরণ্যের প্রধান প্রাণীটি। যেমনটা হল আজ শুক্রবার ঝড়গ্রাম জেলার ৫ নম্বর রাজ্য সড়কে।
গভীর জঙ্গলে হাতির দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়ায় তাদের দেবী
1) এই সড়কটিকে বলা হয়ে থাকে ঝাড়গ্রামে প্রবেশের দ্বার। আর এখানে ‘দ্বাররক্ষী’র দায়িত্ব পালন করে থাকে দাঁতালের দল। সব সময় এদের দেখা যায় না। হাতি বিশেষজ্ঞ আসামাএর বাসিন্দা পাররবতী বড়ুয়ার কাছে একটা ঘটনার কথা শুনেছিলাম যে হাতিদের মধ্যেও নাকি তাদের দেবতা ঘুরে বেড়ান। রাতের অন্ধকারে গভীর জঙ্গলে সেই দেবী থাকেন হাতির পালের সঙ্গে। আসামের জঙ্গলে হাতির খোঁজে বেড়িয়ে একবার তাঁরও সেই অভিজ্ঞতা চাক্ষুষ করার সৌভাগ্য হয়েছিল। নারীবেশে থাকা সম্পূর্ণ কালো বর্ণের এলোকেশী সেই দেবী বিশালাকার হাতির দলের মধ্যে মিশে থাকেন। তিনি নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন হাতিদের। হাতিরা তাকে মা হিসেবে মান্য করে থাকে। খুব কম মানুষেরই সেই দেবীকে দর্শন করার সৌভাগ্য হয়েছে।জানিয়েছিলেন পার্বতী বড়ুয়া।
‘দ্বাররক্ষী’ দিলেন কড়া শাস্তি
2) ঝাড়গ্রামের এই ৫ নম্বর রাজ্য সড়কেও কিন্তু হাতির দল ঘুরে বেড়ায়। না জেনে অনেকেই এই হাতির দলের বিরুদ্ধে নানা ধরনের আচরন করে থাকে। যা হাতির দেবী মেনে নেয় না। অরণ্যের এই হাতির দলকে মেনে চলা উচিত। তারা স্বাধীনভাবে বিচরন করে থাকে। ৫ নম্বর রাজ্য সড়কে তারা কার্যত ‘দ্বাররক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকে।
আজ যখন সেই ‘দ্বাররক্ষী’ হাতি তার দুই সঙ্গিকে নিয়ে সেখানে দাঁড়িয়েছিল তখন বেশ কয়েকটি গাড়ি দূরেই দাঁড়িয়ে যায়। ওই তিনটি হাতি সরে গেলে তবেই তারা আবার যাত্রা শুরু করবে। এভাবেই অপেক্ষা করছিল বেশ কিছু গাড়ি। এটাই নাকি ওখানকার গাড়ি চালকরা মেনে চলেন। কিন্তু এসব নিয়ম তোয়াক্কা করার প্রয়োজন ম্নে করেনি এক বাইক আরোহী। তার কাছে এসব গাল্গল্প মনে হয়েছে। তিনি মনে করেছিলেন এসব গাজাখুড়ি গল্পকে গুরুত্ব না দিয়ে চলেই যাওয়া যাক না, কি আর হবে!কি হবে তিনি তৎক্ষনাৎ টের পান। তার কাছে যা গাঁজাখুড়ি ঠেকেছিল সেটাই হয়ে ওঠে একেবারে বাস্তব। অর্থাৎ ‘নিয়ম লঙ্ঘনকারী’ ওই বাইক আরোহীকে যথযথ সাজা দিতে পিছপা হয়নি ‘দ্বাররক্ষী’ হাতিটি। বাইকটিকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে পা দিয়ে একেবারে গুঁড়িয়ে দেয় সে। কোনওরকমে পালিয়ে প্রাণে বেঁচে যায় সেই বাইক আরোহী। টের পায় জঙ্গলের ‘দ্বাররক্ষী’র ক্ষমতা।
Published on: এপ্রি ২০, ২০১৯ @ ০০:২৩