সিআইডি-র জেরায় সারাদিন বাড়িতেই ‘ বন্দি ‘ বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ, বিক্ষোভে আটকে গেলেন আধিকারিকরা

রাজ্য লোকসভা ভোট 2019
শেয়ার করুন

  1. বিজেপি বলছে- “সিআইডিকে দিয়ে আমাদের প্রচার বন্ধ করা যাবে না। হিতে বিপরীত হবে ,ভোট বাড়বে বিজেপির।”

  2. ভারতী ঘোষ বললেন- “একজন প্রার্থীকে হেনস্তা করতেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এভাবে সিআইডিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করতেই সিআইডির জেরা।”

সংবাদদাতা– বাপ্পা মন্ডল

ছবি-বাপন ঘোষ

Published on: এপ্রি ১৯, ২০১৯ @ ২২:৫২

এসপিটি নিউজ, ঘাটাল, ১৯ এপ্রিলঃ কয়েক মাস আগে ছিল এক রকম পরিস্থিতি। আর এখন আর এক রকম। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে যখন সোনা কান্ড সহ চারটি মামলা করে রাজ্য সরকার তখন তিনি শুধুই প্রাক্তন পুলিশ সুপার। আর এখন তিনি বিজেপির লোকসভার প্রার্থী। ভোটের কাজে প্রতিদিনই ছুটতে হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু এজন্য তদন্ত তো আটকে থাকবে না। তাই সিআইডি-র জেরার সামনে তাঁকে হাজিরা দিতেই হল। কলকাতা থেকে আসা সিআইডির প্রতিনিধি দল শুক্রবার তাঁকে দুই ধাপে সারা দিনে মোট ছয় ঘণ্টা ধরে জেরা করেন। ফলে এদিন তাঁর সমস্ত নির্বাচনী কর্মসূচি বাতিল হয়ে যায়। আর বিজেপি কর্মীরা এটা মেনে নিতে পারেনি। তাই সিআইডি দলটি যখন জেরা শেষ করে ফিরে যাচ্ছিলেন ঠিক তখন তারা আধিকারিকদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অবশেষে প্রার্থী ভারতী ঘোষ এসে তাদের উদ্ধার করে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা করিয়ে দেন।

বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে সিআইডি, উদ্ধারে ভারতী ঘোষ

1) শুক্রবার দাসপুরের কলমিজুড়ে ভাড়া বাড়িতে বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে টানা ৬ ঘণ্টা ধরে জেরা করেন সিআইডি-র স্পেশাল সুপারিনটেনডেন্ট ইন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তী ও ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট-এর নেতৃত্বে 16 জনের একটি দল।জেরা করে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছিলেন, সেই সময় বিজেপি কর্মী্রা তাদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।

পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন ভারতী ঘোষ। ভারতী ঘোষ বিজেপি কর্মী সমর্থকদের শান্ত হওয়ার নির্দেশ দেন এবং তিনি দাঁড়িয়ে থেকে বিক্ষোভরত বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সরিয়ে দেন। ভারতী ঘোষ দাঁড়িয়ে থেকে সিআইডি আধিকারিকদের গাড়িগুলি ওই এলাকা থেকে বের করে দেন।

ভারতী ঘোষের ভাড়াবাড়িটির চারিদিকে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।কিছুটা দূরে ছিল রাজ্য পুলিশ, তা সত্ত্বেও কয়েকশো বিজেপি কর্মী শুক্রবার সন্ধ্যায় সিআইডি আধিকারিকদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।

বিজেপি কর্মীদের দাবি-ভারতী ঘোষ ‘নির্দোষ’

2) বিজেপির কর্মীরা দাবি করেন- “ভারতী ঘোষ ‘নির্দোষ’।তাঁকে লোকসভা নির্বাচনের মুখে হেনস্থা করার জন্য এবং তিনি যাতে প্রচার করতে না পারেন তার জন্য সিআইডি এই সময়ে তাঁকে জেরা করতে এসেছে। তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।”এভাবে ভারতী ঘোষকে আটকে রাখা যাবে না বলে সিআইডিকে জানিয়ে দেয় বিজেপি কর্মীরা। “সিআইডিকে দিয়ে আমাদের প্রচার বন্ধ করা যাবে না। হিতে বিপরীত হবে ,ভোট বাড়বে বিজেপির ।”

বিজেপি কর্মী সুজিত পাইন আরও বলেন-” ভারতী ঘোষ রাজ্য সরকারের হিংসার শিকার। রাজনৈতিকভাবে বিজেপি এর মোকাবেলা করবে। ভারতী ঘোষ সিআইডিকে  তদন্তে যাবতীয় পূর্ণ সহযোগিতা করছে। তা সত্ত্বেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশতঃ সিআইডি এই কাজ করছে।”

ভারতী ঘোষ বলেন- “দলীয় কর্মী-সমর্থকদের আমি বুঝিয়ে সরিয়ে দিয়েছি। সিআইডির প্রতিনিধি দলের ওপর কোনও কিছু হয়নি। তারা ভালোভাবেই এখান থেকে কলকাতা ফিরে গিয়েছেন।”

দিলীপ ঘোষ বললেন-এসব ফালতু কেস

3) শুক্রবার ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের পিংলায় রোড-শো , বড় সভা সবগুলি কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে| সভায় আসা কর্মী-সমর্থকদের নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে|এভাবে সারা দিন ধরে সিআইডি-র জেরার মুখে আটকে থাকাকে রাজনৈতিক অভিসন্ধি হিসেবে দেখছেন প্রার্থী ভারতী ঘোষ সহ বিজেপির কর্মীরা। সকালেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন- যারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে গেছে রাজ্য সরকার তাদের বিরুদ্ধে নানা কেস দিয়েছে। এসব ফালতু কেস।

ভারতীর প্রতিক্রিয়া

4) সিআইডি জেরা প্রসঙ্গে ভারতী ঘোষ বলেন, “আমি যাতে সারাদিন প্রচার করতে না পারি এজন্য ভোটের সময় একজন প্রার্থীকে হেনস্তা করতেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এভাবে সিআইডিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করতেই সিআইডির জেরা। সব গুরুত্বহীন প্রশ্ন করা হয়েছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই।” তিনি জনতার আদালতে এসব তুলে ধরে ভোটের প্রচার করবেন বলে দাবি করেন।

Published on: এপ্রি ১৯, ২০১৯ @ ২২:৫২


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

64 − 55 =