Published on: মার্চ ২১, ২০১৮ @ ১৬:১২
এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ জন্মের সময় তাঁর পিতামহ নবজাতককে দেখে বলে উঠেছিলেন ‘বিসমিল্লাহ’। পরবর্তীকালে এই নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান।তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত ধার্মিক শিয়া মুসলমান। যদিও জ্ঞানের দেবী সরস্বতীর প্রতি ছিল তাঁর অশেষ ভক্তি ও নিষ্ঠা। তিনি দেবী সরস্বতীর পুজোও করতেন। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতকে তিনি বিশ্বের দরবারে এক উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। সানাই আর বিসমিল্লাহ খান এখন এক সমার্থক শব্দ হয়ে গেছে।গুগল ডুডল আজ ২১ মার্চ বুধবার সানাই গুরু উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী অস্তাদ বিসমিল্লাহ খানের ১০২তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাল।
বাবা পয়গম্বর খান ও মা মিঠানের দ্বিতীয় সন্তান বিসমিল্লাহ ১৯১৬ সালের ২১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তাঁকে কামরুদ্দিন বলে ডাকা হত। ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীত ঘরানার মধ্যেই বড় হতে থাকেন বিসমিল্লাহ। সানাইকে তিনি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত জগতে বিশেষ আসনে প্রতিষ্ঠিত করেন।
অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী ও মার্জিত রুচিশীল মানুষ ছিলেন ওস্তাদ বিসমিল্লাহ সাহেব। খুব সাধারণ জীবন-যাপন করতেন তিনি। সাইকেল-রিকশাই ছিল তাঁর চলাচলের মূল বাহন।তিনি বলতেন সঙ্গীত দেখার বিষয় নয় শোনার বিষয়।বেনারসে বিশ্বনাথ মন্দিরের সানাই বাদক ছিলেন তিনি। তাঁর মহানুভবতায় সেসময় আস্মুদ্র হিমাচল নতমস্তকে সম্মান জানাতেন তাঁকে।তাঁর সঙ্গীত প্রতিভাকে কুর্নিশ জানিয়েছিল গোটা বিশ্ব-যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল আফগানিস্তান, ইউরোপের একাধিক দেশ, ইরান, ইরাক, কানাডা, পশ্চিম আফ্রিকা, আমেরিকা, রাশিয়া, জাপান, হংকং সহ বহু দেশ। দেশের সেরা চার বেসামরিক সম্মানও লাভ করেছিলেন ভারতীয় সঙ্গীত জগতের এই মহামানব। যার মধ্যে আছে ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী।
১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি দিল্লির লালকেল্লায় ভারতের প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসে ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খানের সানাই আজও চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। সেদিন এই সানাই গুরু তাঁর সানাইতে তাঁর অন্তরের মাধুরী ঢেলে রাগ কাফি বাজিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন। তাঁর সানাই তো উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত জগতে এক দিগন্ত খুলে দিয়েছে। একদিকে তিনি যেমন শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকবেন ঠিক তেমনই হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন ভারতীয় সঙ্গীত জগতের এই মহামানব।
অবশেষে ২০০৬ সালের ২১ আগস্ট নেমে এল ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এক অন্ধকার দিন। সনজ্ঞীতের এই মহামানব চির নিদ্রায় শায়িত হলেন। রেখে গেলেন তাঁর উজ্জ্বল কীর্তি। যা আজও ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতকে সারা বিশেষ মর্যাদার আসন দিয়ে চলেছে।
Published on: মার্চ ২১, ২০১৮ @ ১৬:১২