
সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল ছবি-রামপ্রসাদ সাউ
Published on: জানু ২৩, ২০১৮ @ ২২:২৭
এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ২৩ জানুয়ারিঃ কথায় বলে বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বন। কথাটা একেবারেই নির্ভুল। না হলে লক্ষ্মী-সরস্বতী পুজো! অনেকের মনেই হয়তো প্রশ্ন জাগছে-এ আবার কিরকম পুজো? লক্ষ্মী পুজো হয় সবাই জানে। সরস্বতী পুজোর কথাও কারও অজানা নয়। কিন্তু তাই বলে লক্ষ্মী-সরস্বতী পুজো। লক্ষ্মী-নারায়নের পুজো হয় সবাই জানে তাই বলে লক্ষ্মী-সরস্বতী! হ্যাঁ, এমন ধরনের পুজোও আছে। আর তা হয় আমাদের পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মহাশোল গ্রামেই। যেখানে সিংহ বাড়িতে ২০০ বছর ধরে চলে আসছে এই পুজো।
সাড়ম্বরে পূজিত ও পালিত হচ্ছে মহাশোল ক্ষত্রিয় বংশের লক্ষী সরস্বতী পুজো। কথিত আছে নয় পুরুষ আগে অর্থাৎ প্রায় ২০০ বছরের কাছাকাছি সময়ে এই পুজোর প্রচলন হয়েছে। সেই থেকে বংশানুক্রমে এই পুজো চলে আসছে। গ্রামের ‘পাঁচবংশে’র সবথেকে বয়স্ক পুরুষ এই সিংহ বাড়ির পুজোর মূল আহ্বায়ক। গ্রামের পক্ষে চিত্তরঞ্জন সিংহ, দুলাল চন্দ্র সিংহ, নিরঞ্জন সিংহ, নেপাল সিংহ এই বছরের পরিকল্পনাগুলি তুলে ধরেন ও বলেন এই পুজোর ইতিবৃত্ত।
কথিত আছে, সিংহ বংশের আদি পুরুষ সৈজন সিংহ বিহার থেকে প্রায় সাত পুরুষ আগে বাংলায় এসে মহাশোল মৌজাতে জমি কিনে বসতি স্থাপন করেন। তারপর মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। পুরোহিত সঞ্জয়বাবু বলেন, কথিত আছে মাঘ মাসের এক রাতে বর্তমান মন্দির প্রাঙ্গনে রাত্রিযাপন করা গ্রামের কয়েকজন বয়স্ক দুই বোনের স্বপ্নাদেশ পান-এই স্থানে যেন লক্ষ্মী-সরস্বতীর পুজো শুরু করা হয়। সেই সময় মাঘ মাস ও সরস্বতী পুজো নিকটে হওয়ায় দেবী লক্ষ্মী-সরস্বতী পুজো শুরু হয়। সেই থেকেই মহাশোল গ্রামে মা লক্ষ্মী-সরস্বতী পুজো এক মেড়ের মধ্যে দাসদাসীসহ প্রচলিত হয়।
পরবর্তীকালে এই পুজো উপলক্ষ্যে চব্বিশ প্রহর ধরে হরিবাসরের আয়োজন করা হয়। তখনকার একচালার খড়ের মন্দির এখন নতুনরূপে হরিমন্দির হয়েছে। পরবর্তীকালে প্রায় ১০০ বছরেরও অধিক সময় ধরে পুজোর পরের দিন সকালে অধিবাস করে অখন্ড হরিনাম চব্বিশ প্রহর ধরে সূচনা করা হয় ও মেলার আয়োজন হয়। এই উপলক্ষে মহাশোলের সিংহ পরিবারের ও আশপাশের জগন্নাথপুর, খেমাকাটা, ঝাঁটিয়াড়া,মন্ডলকূপী গ্রামের গ্রামবাসীরা ও তাদের আত্মীয়স্বজনরা এসে উপস্থিত হয় ও মেলায় অংশগ্রহণ করে। এইভাবে মেলার কয়েকদিন মিস্টি, জিলেপি সহ বিভিন্ন দোকান বসে ও মেলায় ব্যাপক জনসমাগম হয়। এইভাবে পুজো ও হরিনাম সহ মেলা সাত দিনের হয়।
Published on: জানু ২৩, ২০১৮ @ ২২:২৭