
Published on: জুন ২, ২০১৮ @ ২২:৩০
এসপিটি নিউজ, বারাকপউর, ২ জুনঃ একজন আইনজীবী হিসেবে আইনটা তিনি ভালোমতোই জানেন। আবার তৃণমূলের একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে জানেন রাজনৈতিকভাবে তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য কতটুকু। আর সেই তাগিদেই আজ শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন সম্রাট তপাদার।যেভাবে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কথা বলে তাঁর সুনামে কালি ছাটাতে গিয়ে আদালতের রায়ে চুপসে গেছেন যেখানে আদলত মুকুল রায়কে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে বলেছেন এবার তা নিয়েই প্রকাশ্যে মুখ খুললেন সম্রাট তপাদার।তাঁর হুমকি-মুকুল রায় যদি লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়ে নেয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাহলে তো মিটেই গেল। আর তা না হলে মুকুল রায়কে যেখানে দেখা যাবে সেখানেই কালো পতাকা দেখানো হবে।
এদিন সম্রাট বলেন, “মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সে মানুষকে প্রতারিত করেছে। আজ বড় বড় জায়গার বড় বড় কথা বলছেন সেই গদ্দার সেই চাটনিবাবু। আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সে কুকথা বলছে। আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন পশ্চিম বাংলার ছাত্র-যুবদের নিয়ে নতুন করে আমাদের বাঁচার একটা স্বপ্ন দেখাচ্ছে নতুন করে আশার আলো দেখতে পাচ্ছি তখন ব্যক্তিগত স্তরে তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা এবং তাঁর বিরুদ্ধে নানারকম অসত্য কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়।
বিশ্ব বাংলার লোগো নিয়ে মুকুল রায়ের যে অভিযোগ সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন সম্রাট পাল্টা বলেন, “বিশ্ববাংলার লোগো নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছিল আসলে বিজেপিতে ওনার কোনও জায়গা হচ্ছে না সেই জায়গাটা করার জন্য ব্যক্তিগত স্তরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমন করেছিলেন। কিন্তু কোর্টের রায়তে সেটা প্রমাণ হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেশ পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি সেই গদ্দার মুকুল রায়।”
কোর্ট তাঁকে এক মাসের মধ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছে। যে মিথ্যা কথা বলে বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল মুকুল রায়। কোর্ট সেটা বলেছে যে এই অসত্য এবং মিথ্যা কথা বলার জন্য আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে। এবং লিখিত ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। কোর্ট অর্ডার দিয়েছিল সেটা। এখনও পর্যন্ত মুকুল রায় লিখিতভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেননি। সম্রাট বলেন, “যেভাবে আপনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যাকে অপদস্থ করবার জন্য তাঁর নামকে বদনাম করবার জন্য অসত্য কথা বলেছেন, তাই আপনাকে পাবলিকলি ক্ষমা চাইতে হবে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের উদাহরন টেনে সম্রাট ফের বলেন,”আমরা ছাত্র-যুবরা যারা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বকে বিশ্বাস করি যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা জেনারেশন তৈরি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করা হাতে গড়া জেনেরেশন আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে মন্ত্রিসভা। ঠিক সেভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন চাইছে একটা নতুন প্রজন্মকে তৈরি করতে নতুন একটা নেতৃত্বকে তুলে আনতে এই ধরনের মুকুল রায় তাঁকে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এর প্রতিবাদ করা আমাদের রাজনৈতিকভাবে কর্তব্য বলে মনে করি। উনি যদি ক্ষমা চান তাহলে ব্যাপারটা মিটে যাবে। না হলে উনি এত সিকিউরিটি নিয়ে ঘুরছেন তারাও কিন্তু ওনার গাড়িকে আটকাতে পারবে না।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনে একাধিক তৃণমূল কর্মীদের খুন হওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা কিন্তু ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিচ্ছি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের সবচেয়ে বেশি লোক খুন হয়েছে। তারপরেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা কিন্তু পাল্টা কিছু করিনি।তার কারণ আমরা অহিংসাতে বিশ্বাস করি। কিন্তু হাত জোড় করে কথা বলা মানে ভদ্রতা, এটা দুর্বলতা নয়। ছেলের বয়সী একজনের বিরুদ্ধে কি ভাষা প্রয়োগ করছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এরপর উনি ক্ষমা না চাইলে ওনাকে আমরা যেখানে দেখব সেখানেই আমরা কালো ফ্ল্যাগ দেখাবো।”
মুকুল রায়ের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে করা মানহানি মামলা প্রসঙ্গে সম্রাট তপাদার বলেন, “আপনি মানহানি মামলা করেছেন। আপনার মানই নেই তার আবার হানি। আদালত তাঁর মানহানি মামলাও খারিজ করে দিয়েছে। তাতে আবার প্রমাণ হয়েছে যে আপনি একটা মিথ্যাবাদী লোক। কথা আর কাজের মধ্যে সমন্বয় নেই।”
“মুকুল রায় দিল্লিতে কিছু যুবক-যুবতীদের নিয়ে গিয়ে সার্কাস করছেন। আমি সেইসব যুবক-যুবতীদের কাছে আবেদন করি-আপনারা ওনাকে বিশ্বাস করবেন না। আমাদের মতো ছেলেরা ওনাকে বিশ্বাস করে ঠকেছি। ২৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে যেভাবে মুকুল রায় আমাদের মতো যুবকদের ঠকিয়েছে আপনারা সেভাবে ঠকবেন না। মুকুল রায়কে বিশ্বাস করা মানে সত্যকে অস্বীকার করা।” বলেন সম্রাট তপাদার।
Published on: জুন ২, ২০১৮ @ ২২:৩০