টাফি’র মিটিং-এ জিএসটি-টিসিএস, ভিসা নিয়ে মুল্যবান পরামর্শ

Main দেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: ডিসে ২২, ২০২৩ at ০৯:১৪
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২২ ডিসেম্বর: ট্রাভেল এজেন্টদের জন্য খুবই মূল্যবান সেশন-এর আয়োজন করে তাফি (ট্রাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া)। সেখানে জিএসটি- টিসিএস এবং ভিসা আপডেট নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই দুটি বিষয়ে এদিন বিশষজ্ঞরা তাদের মূল্যবান পরামর্শ ট্রাভেল এজেন্টদের দিয়েছে।কলকাতায় ফ্লোটেল-এ টাফি’র এই মিটিং-এ সদস্য ছাড়াও এয়ারলাইন কোম্পানি থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রের লোকন উপস্থিত ছিলেন। এদিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিল- ‘কেক মিক্সিং’ ইভেন্ট।

অনিল পাঞ্জাবি, টাফি’র ন্যাশনাল কমিটির মেম্বার

“এদিন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেশন রাখা হয়েছিল”

“আজ আমাদের মাসিক মিটিং ছিল। সেখানে দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল- এক, জিএসটি এবং টিসিএস এবং দুই, এই বিষয়ে টাফি’র বম্বে অফিস সুপারিশ করেছে যে আমাদের যে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট আছে অর্জুন অ্যক্রুয়ালা। তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেখানে ট্রাভেল এজেন্টদের জন্য নিত্য এয়ার টিকিট কিভাবে করা যায়, ট্যাক্স কতটা লাগে। দ্বিতীয় যেটা ছিল তা হল ভিসা। বিদেশে যেতে যে ভিসা লাগে সেই সম্পর্কে আপডেট জানা। নতুন কি আসছে- এই সম্পর্কে ভিসা সম্পর্কে জানাতে ভিএফএস থেকে একটা টিম-কে ডাকা হয়েছে।তাদের টাফি’র মিটিং-এ ডাকা হয়েছে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের আপডেট দেওয়ার জন্য। এটা একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেশন ছিল। সেই সঙ্গে আমাদের একটা ট্রেড মার্ক হয়েছে যে ‘সিগ্নেচার ইভেন্ট’। গত বছরও এটা দারুনভাবে হয়েছে। তা হল- ‘কেক মিক্সিং’। ক্রিসমাসের আগে, সেটা একটু করা হয়েছে। এর মধ্যে ট্রাভেল এজেন্টস, এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিরা এসেছেন। এটা কেক বানিয়ে অনাথদের দেওয়া যাবে।”

“আগামী বছর অনেক কাজ হবে বলে আশা করছি”

“এখানে ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি খুব ভালোই গেছে। কোভিডের পর এবছর একেবারে স্বাভাবিক গতিতে চলে এসছে। লোক এখন ডোমেস্টিক, ইন্টারন্যাশনাল অনেক যাচ্ছে। পুজোর মরশুম খুব ভালো গেছে। ট্যুরিজম অনেক বেড়েছে। আমি দেখছি যে সরকারি সমর্থন যেভাবে পাচ্ছি সেই দিকে নজর রেখে আমার অ্যাসোসিয়েশন মিলিয়ে আগামী বছর অনেক কাজ হবে বলে আশা করছি। সব অ্যাসোসিয়েশন করে। তারা নিজেদের মতো করে করছে। টাফি একটু অন্য রকম চিন্তা করে। সদস্যরা কি লাভ করবে সেদিকে আমাদের অ্যাসোসিয়েশন সবসময় নজর দেয়। আমাদের শেষ মিটিং-এ ইউএস কন্স্যুলেট থেকে এসছিল। একই সঙ্গে সাইবার ক্রাইম নিয়েও দারুন আলোচনা হয়েছিল। সেটি আবার ব্যবস্থা করব। টাফি একটু আলাদা করে কাজ করছে।”

“ইস্টার্ন ইন্ডিয়ায় নজর আছে যে কিভাবে একে আলাদা লেভেলে নিয়ে যাওয়া যায়”

“কলকাতায় টাফি, টাই সবাই মিলিয়েই কাজ করে। আমি দায়িত্ব ছেড়ে এখন ন্যাশনাল কমিটির সদস্য হয়েছি। এখন চেয়ারম্যান হয়েছেন বিলোলাক্ষ দাস। এখন দেখছি যাতে ন্যাশনাল কমিটি ইস্টার্ন চ্যাপ্টার মিলিয়ে কিছু যদি করা যায় সেদিকেই আমাদের নজর থাকছে। টাফি’র ন্যাশনাল কমিটি থেকে সব সময় সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। মেম্বারশিপ ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে। ট্যুরিজমটা শ্রী দাস দেখছেন। সব মিলিয়ে ইস্টার্ন ইন্ডিয়ায় নজর আছে যে কিভাবে একে আলাদা লেভেলে নিয়ে যাওয়া যায়। এখানে আমাদের মরুভূমি ছাড়া সবই আছে। প্রমোট করা যায়। তাই সরকার সহযোগিতা করছে। ভিতরে কাজ হচ্ছে। অনেক কাজই হচ্ছে।”

টাফি’র চেয়ারম্যান ( ইস্টার্ন চ্যাপ্টার) বিলোলাক্ষ দাস

“সমাজে এখন ট্রাভেল এজেন্টদের ভূমিকার পরিবর্তন হয়েছে”

“সমাজে এখন ট্রাভেল এজেন্টদের ভূমিকার পরিবর্তন হয়েছে। সেখানে আমাদের আপগ্রেডেশন হওয়ার দরকার আছে। পুনর্মূল্যায়ন করা। মানুষ আমাদের কাছে আসছে। কিন্তু তার কারণটা পৃথক হয়ে গেছে। মানে তারা যখন কোনও জায়গায় আটকে যাচ্ছে দরকার পড়ছে তখন তারা আসছে। আগে কোনও জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। এখন তারা ইনফর্মেশন নিচ্ছে। নিজেরা বেছে নিচ্ছে। তারপর আসছে আমাদের কাছে আসছে। সেখানে আমাদের ভূমিকা অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। সেটা বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে হোক, পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে হোক কিংবা ভিসা করার ক্ষেত্রে। বিভিন্ন ব্যাপারে সেটা হয়ে গেছে।”

“ট্রাভেল কমন্সালটেন্ট হয়ে উঠছে ট্রাভেল এজেন্টরা”

“এটা সমস্যা বলব না, এটা ভালো হয়েছে। তাতে প্রশ্ন আরও মজবুত হয়ে গেছে। লোকে খুব স্পেসিফিক প্রশ্ন করছে। সেটা আমাদের পক্ষে সুবিধাই হয়েছে। সে একটা মোবাইলে কিংবা কম্পিউটারে ইন্টারনেটে দেখছে। সে তো জানতে পারছে না যে কোনটা ঠিক। সেটাকে তাদের ভিতরে ছড়িয়ে দেওয়াই আমাদের কাছে একটা মাথাব্যাথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন তারা ভাবছে যে তাদের ভূমিকা আসলে কি? ট্রাভেল কন্সালটেন্ট হিসাবে আমরা লোকজনকে একটা সৎ উপদেশ দিতে পারছি। বেড়াতে যাওয়াটা যে ঠিকঠাক হতে পারে সেটা যে আমরা বিশেষজ্ঞ সেটা ধীরে ধীরে সমাজ বুঝতে পারছে।সেটা আমাদের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হয়েছে।”

“লোকে বুঝতে শিখেছে আর তার পুরস্কারটা পাচ্ছি”

“লকডাউনের পর লোকে বুঝতে শিখে গেছে যে মাঝখানে যদি একটা মানুষ থাকে তার মতো জিনিসটাকে সমাধান করতে পারবে। নর্মালি হলে তো সমস্যা নেই। কিন্তু অন্য কিছু ঘটলে তখন তা নিয়ে ভাবছে। তাই বেড়াতে যাওয়া কিংবা ভ্রমণ সংগক্রান্ত কোনও সমস্যা হলে তারা বুঝতে পারছে ট্রাভেল এজেন্টদের কতটা গুরুত্ব আছে। তা নিয়ে কিন্তু মানুষ সচেতন হয়েছে। লোকে বুঝতে শিখেছে আর তার পুরস্কারটা পাচ্ছি।”

“সরকারের পক্ষে যদি সদর্থক উদ্যোগ না নেওয়া হয় তাহলে এটা খুবই শক্ত”

“সারা দেশে টাফি’র ১২টা চ্যাপ্টার আছে। ইস্টার্ন ইন্ডিয়া সবচেয়ে বড় চ্যাপ্টার। কিন্তু এখান থেকে ট্যুরিস্টরা বেশি যায়। কিন্তু এখানে ব্যবসাটা খুব কম। এখানে এখানে লোকের আসাটা অনেক কম। এখানে মরুভূমি ছাড়া সবই আছে। কিন্তু সরকারের পক্ষে যে অতি সক্রিয়তা থাকা দরকার সেটা নেই। ইস্টার্ন চ্যাপ্টারের প্রতিটি রাজ্যের ক্ষেত্রেই এই একই অবস্থা।এখন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া নয়া পলিসিতে অগ্রাধিকার পাচ্ছে কিন্তু এখানে বিজনেস এত কম যে বলাড় মোট ণোয়। এখানে সচেতনতাও কম। ট্যুরিস্ট ফ্রেন্ডলি ব্যাপারটা নেই। অনেক কিছু আপগ্রেড হওয়া দরকার আছে। আমরা যতই করিনা কেন সরকারের পক্ষে যদি সদর্থক উদ্যোগ না নেওয়া হয় তাহলে এটা খুবই শক্ত। অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করছি যে কি করে আরও সচেতন করা যায়।”

জিএসটি এবং টিসিএস নিয়ে আলোকপাত করেন সিএ অর্জুন অ্যাক্রুয়ালা

এদিনের আলোচনায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল জিএসটি এবং টিসিএস বিষয়। এই বিষয়ে উপস্থিত ট্রাভেল এজেন্টদের আলোকপাত করেন চার্টার্ড অ্যাকাউণ্ট্যান্ট অর্জুন অ্যাক্রুয়ালা। যিনি মুম্বই-এ টাফি’র প্রধান কার্যালয়ের অডিট স্নগক্রান্ত কাজে যুক্ত। ট্রাভেল এজেন্টদের জিএটি এবং টিসিএস নিয়ে কাজ করার বিষয়ে যিনি খুবই অভিজ্ঞ। এদিন তিনি কলকাতায় টাফি’র মিটিং-এ আমন্ত্রিত ছিলেন। এদিন তিনি মূলতঃ তিনটি দিক এয়ারলাইন, হোটেলস এবং ট্রাভেল এবং ট্যুর প্যাকেজ-এ জিএস্টি-টিসিএস ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।এয়ারলাইনের টিকিট বিক্রি করার সময় একজন ট্রাভেল এজেন্ট কিংবা ট্যুর অপেরেটরকে কোন দিকগুলিতে নজর রাখতে হবে কিভাবে তার জিএসটি কাটা হচ্ছে এবং তাতে তার কতটা থাকছে এই বিষয় নিয়ে সিএ অর্জুন অ্যাকুয়ালা খাতায়-কলমে বুঝিয়ে দেন। দ্বিতীয়, হোটেল বুকিং-এ ট্রাভেল এজেন্টদের কতটা জিএসটি কাটা হয় এবং সেতা কোথায় যায় সেটাও বলেন তিনি। যে রাজ্যে যে হোতেল থাকে সেখানকার জিএসটি সেই রাজ্যেও একতা অংশ থাকে। এজন্য এসজিএসটি অর্থাৎ স্টেট জিএসটি য়াছে যা রাজ্যের কাছে যায় এবং আর একটি হল সিজিএসটি অর্থাৎ সেন্ট্রাল জিএসটি যা কেন্দ্রের কাছে যায়। এরপর তিনি সবশেষে আলচনা করেন ট্রাভেল প্যাকেজ এবং ট্যুর প্যাকেজ নিয়ে। ট্রাভেল প্যাকেজ এক্রকম হয় আর ট্যুর প্যাকেজ হয় আর এক রকম। অর্থাৎ ট্যুর প্যাকেজে থাকে থাকার ব্যবস্থা, পরিবহন, কোথায় কোথায় ঘুরবেন অর্থাৎ ল্যান্ড প্যাকেজ এবং অন্যান্য সব মিলিয়ে হয় ট্যুর প্যাকেজ। ট্যুর প্যাকেজে ৫% জিএসতি এবং ৫% টিসিএস দিতে হয়। তবে সিংগল বিলের ক্ষেত্রে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫% টিসিএস কাতা হয় ৭ লাখের উপরে অর্থাৎ ৭ লাখ তাকার বেশি হয়ে গেলেই সেটা ২০% দিতে হয়।

এদিনের মিটিং অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টাফি’র সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ ধর, থাই এয়ারওয়েজের সাজিদ আহমেদ খান, ভিএসএস-এর পক্ষে সাকিলা যোশ সহ অন্যান্যরা।

 

Published on: ডিসে ২২, ২০২৩ at ০৯:১৪


শেয়ার করুন