পর্যটনের প্রসারে স্বদেশ দর্শন ২.০ বেছে নিয়েছে দেশের ৪৬টি গন্তব্য, প্রসাদ-এ ৪১টি ধর্মীয় স্থান, আছে পূর্ব ভারতও

Main দেশ ধর্ম ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জুলা ৩০, ২০২৩ @ ২১:৩২
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৩০ জুলাই: পর্যটনকে এখন একটা আলাদা মাত্রা দিয়েছে ভারত সরকার। বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পর্যটন মন্ত্রক এখন পর্যটনের প্রসারে নানা ধরনের উন্নয়ন মূলক কাজ করে চলেছে। আর তারই দুটি দিক হল- স্বদেশ দর্শন ও প্রসাদ। এই দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যটন মন্ত্রক দেশের ৪৬টি গন্তব্য ও ৪১টি ধর্মীয় স্থান কিংবা শহরকে চিহ্নিত করে তার উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে। যাতে সেখানে ঘুরতে যাওয়া মানুষ অথবা পর্যটকরা এক সুস্থ ও অনুকূল পরিবেশে তাদের ভ্রমণকে উপভোগ করতে পারে। ভারতের পর্যটন মন্ত্রকের অধীন ইণ্ডিয়া ট্যুরিজম, কলকাতার রিজিওনাল ডিরেক্টর (পূর্ব) ড. সাগ্নিক চৌধুরী এই খবর দিয়ে বলেছেন যে এই প্রকল্পের সুবিধা ইতিমধ্যেই পূর্ব ভারত পেয়েছে।

‘পর্যটন মন্ত্রক তার স্বদেশ দর্শন ও প্র্সাদ-এর মাধ্যমে পর্যটন বিকাশ জোর দিচ্ছে’

ড. সাগ্নিক চৌধুরী সংবাদ প্রভাকর টাইমস-কে জানিয়েছেন- “ পর্যটন মন্ত্রক তার স্বদেশ দর্শন এবং জাতীয় মিশন অন পিলগ্রিমেজ রিজুভেনেশন অ্যান্ড স্পিরিচুয়াল হেরিটেজ অগমেন্টেশন ড্রাইভ (প্র্সাদ) এর ফ্ল্যাগশিপ স্কিমগুলির অধীনে পর্যটন অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধাগুলির বিকাশের জন্য যথাযথ জোর দিচ্ছে। স্বদেশ দর্শন দেশে থিম-ভিত্তিক ট্যুরিস্ট সার্কিটের পরিকল্পনা করে। এই ট্যুরিস্ট সার্কিটগুলি একটি সমন্বিত পদ্ধতিতে উচ্চ পর্যটন মূল্য, প্রতিযোগিতা এবং স্থায়িত্বের নীতির ভিত্তিতে তৈরি করা হবে। উন্নয়নের জন্য স্বদেশ দর্শনের অধীনে ১৫টি বিষয়ভিত্তিক সার্কিট চিহ্নিত করা হয়েছে। এই থিমগুলির মধ্যে রয়েছে বৌদ্ধ সার্কিট, কোস্টাল সার্কিট, ডেজার্ট সার্কিট, ইকো সার্কিট, হেরিটেজ সার্কিট, হিমালয়ান সার্কিট, কৃষ্ণ সার্কিট, উত্তর-পূর্ব সার্কিট, রামায়ণ সার্কিট, গ্রামীণ সার্কিট, আধ্যাত্মিক সার্কিট, সুফি সার্কিট, তীর্থঙ্কর সার্কিট, উপজাতীয় সার্কিট এবং বন্যপ্রাণী সার্কিট।”

বকখালি, তাজপুর, হেনরি আইল্যান্ড, শঙ্করপুরকে বেছে নেওয়া হয়েছে

ইতিমধ্যেই কোস্টাল সার্কিটের অধীনে পশ্চিমবঙ্গের বকখালি, তাজপুর, হেনরি আইল্যান্ড, শঙ্করপুরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রসাদ প্রকল্পে এ রাজ্যে বেলুড় মঠ ও বিহারের গয়া, ওডিশার পুরীতে কাজ হয়েছে। এখনও পূর্ব ভারতে একাধিক রাজ্যে এই দুই প্রকল্পে কাজ চলছে।বলেন ড. সাগ্নিক চৌধুরী।

পর্যটন খাতে ২৪০০ কোটি টাকা

একই সঙ্গে তিনি যোগ করেন ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে পর্যটন খাতে ২৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।পর্যটন অবকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ১৭৪২কোটি টাকা ।প্রচার এবং ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য ২৪২ কোটি টাকা। স্বদেশ দর্শন প্রকল্পের জন্য ১৪১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রসাদ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। সেই কাজ এখন দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। পাশাপাশি, উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির প্রচারের জন্য ২২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

প্রসাদ প্রকল্পে ২৫টি রাজ্যে ৪১টি ধর্মীয় শহর/স্থান

প্রসাদ প্রকল্পের অধীনে, ২৫টি রাজ্যে ৪১টি ধর্মীয় শহর/স্থান উন্নয়নের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে।  এগুলি হল-  অমরাবতী এবং শ্রীশৈলম (অন্ধ্রপ্রদেশ), কামাখ্যা (আসাম), পরশুরাম কুন্ড (লোহিত জেলা, অরুণাচল প্রদেশ), পাটনা এবং গয়া (বিহার), বালমেশ্বরী দেবী মন্দির (রাজনান্দগাঁও, ছত্তিশগড়), দ্বারকা ও সোমনাথ (গুজরাট), গুরুদ্বার নাডা সাহেব (পঞ্চকুলা, হরিয়ানা), মা চিন্তাপূর্ণি (উনা, হিমাচল প্রদেশ), হজরতবাল ও কাটরা (জম্মু ও কাশ্মীর), দেওঘর ও পরেশনাথ (ঝাড়খণ্ড), চামুন্ডেশ্বরী দেবী (মাইসুরু, কর্ণাটক), গুরুভায়ূর, সেন্ট থমাস আন্তর্জাতিক মন্দির (মালয়াত্তুর) এবং চেরামন জুমা মসজিদ (ত্রিশুর, কেরালা), ওমকারেশ্বর এবং অমরকন্টক (মধ্যপ্রদেশ), বাবেদপাড়া, পশ্চিম জয়ন্তিয়া পাহাড় এবং সোহরা (মেঘালয়), আইজওয়াল (মধ্যপ্রদেশ), কোহিমা এবং মোকোকচুং জেলা (নাগাল্যান্ড), ত্রম্বকেশ্বর (মহারাষ্ট্র), পুরী (ওড়িশা), অমৃতসর (পাঞ্জাব), আজমির (রাজস্থান), কাঞ্চিপুরম এবং ভেলাঙ্কনি (তামিলনাড়ু), ত্রিপুরা সুন্দরী (ত্রিপুরা), বারাণসী এবং মথুরা (উত্তরপ্রদেশ) ), বদ্রীনাথ, কেদারনাথ, গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রী (উত্তরাখণ্ড) এবং বেলুড় (পশ্চিমবঙ্গ)।

স্বদেশ দর্শন ২.০ প্রকল্পে ৪৬টি গন্তব্য

পাশাপাশি স্বদেশ দর্শন ২.০ প্রকল্পের অধীনে দেশের ২১টি রাজ্যে ৪৬টি গন্তব্যকে তুলে ধরা হয়েছে। এগুলি হল- উত্তরাখণ্ড-(পিথোরাগড়, ছমঘাট), সিকিম-(গ্যাংটক, গ্যালসিং), ওডিশা-(কোরাপুট), মধ্যপ্রদেশ-(চিত্রকূট, গোয়ালিওর), উত্তরপ্রদেশ-(নৈমিষারণ্য, প্রয়াগরাজ), হরিয়ানা-পঞ্চকুলা(মুরনি), তেলেঙ্গানা-(ভাঙ্গির), মহারাষ্ট্র- (সিন্ধদুর্গ), অন্ধ্রপ্রদেশ- (গান্ডিকোটা, আরাকু-লাম্বাসিংগি), অরুণাচল প্রদেশ-(বোমজির, মেচুকা), আসাম-জোরহাট, কোকরাঝাড়(মানস),বিহার- (গয়া, নালন্দা), চন্ডীগড়(কেন্দ্রশাসিত)-(চন্ডীগড়), গোয়া- (পোরভারিম, কোলবা), গুজরাত-(ঢোলাভিরা, দ্বারকা), কর্ণাটকা-(হাম্পি, মাইসোর), কেরালা- (কুমারাকম এবং বেপুর), লাদাখ(কেন্দ্রশাসিত)- (লেহ, কার্গিল), লাক্ষাদ্বীপ(কেন্দ্রশাসিত)- (লাক্ষাদ্বীপ), নাগাল্যান্ড-(নিউল্যান্ড এবং চুমুকেদিমা), মিজোরাম-(আইজল এবং চাম্পাই), পুদুচেরি(কেন্দ্রশাসিত)-(পুদুচেরি এবং কারাইকাল), পাঞ্জাব-(অমৃতসর, কাপুরথালা), রাজস্থান-(বুন্দি, যোধপুর), তামিলনাড়ু-(মমমালাপুরম এবং নীলগিরি), ত্রিপুরা-(আগরতলা, উন্নাকোট)।

ভ্রমণেও মিলবে এক বিশেষ আনন্দ-ড. চৌধুরী

ইন্ডিয়া ট্যুরিজম, কলকাতার রিজিওনাল ডিরেক্টর (পূর্ব) ড. সাগ্নিক চৌধুরী বলেন- এই কাজ যেভাবে এগোচ্ছে তাতে আগামিদিনে দেশের ভিতর মানূষ যখন কোথাও ঘুরতে যাবেন তখন তারা এক অন্য অনুভূতি পাবেন। ভ্রমণেও মিলবে এক বিশেষ আনন্দ। বেছে নেওয়া জায়গাগুলি পর্যটকদের কথা ভেবেই উন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে। শুধু আর কিছু দিনের অপেক্ষা।

Published on: জুলা ৩০, ২০২৩ @ ২১:৩২


শেয়ার করুন