RTDC আনছে নয়া কনসেপ্ট-ডেস্টিনেশন ম্যারেজ, সংশোধিত হয়েছে নীতি-এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর (ফিনান্স)

Main অর্থ ও বাণিজ্য এসপিটি এক্সক্লুসিভ দেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

  • ‘প্যালেস অন হুইলস’-এর মতো ট্রেনে ছাত্র ও বয়স্করাও ছাড় পেতে চলেছে, যা নিঃসন্দেহে এক বড় খবর।
  • রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগম এক নয়া পলিসি নিয়ে এসেছে। যেখানে তারা সব অংশীদারদের সামিল করেছে।
  • আরটিডিসি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদেরো ছাড় দিতে চলেছে।
  • রাজস্থান সরকার গ্রামীণ পর্যটনেও জোর দিয়েছে, যেখানে ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’, ‘গ্রামীণ পর্যটন’, স্পট পিকনিক আছে।

Published on: ফেব্রু ১৭, ২০২০ @ ২২:৫৭

Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৭ ফেব্রুয়ারি:  এক ঝটিকা সফরে কলকাতা এসেছিলেন রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগম বা আরটিডিসি-র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর(ফিনান্স) ড হোসিয়ার সিং। সংবাদ প্রভাকর টাইমস-কে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাজস্থান পর্যটন নিয়ে দিলেন কিছু নতুন সংবাদ।রাজস্থান পর্যটনকে সারা দেশের মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছে দিতে নয়া উদ্যোগ নিয়েছে তারা। আনতে চলেছে এক নয়া কনসেপ্ট, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডেস্টিনেশন ম্যারেজ’।পাশাপাশি সেখানকার পর্যটন নীতিও সংশোধন করা হয়েছে। যার ফলে এখন থেকে ‘প্যালেস অন হুইলস’-এর মতো ট্রেনে ছাত্র ও বয়স্করাও ছাড় পেতে চলেছে, যা নিঃসন্দেহে এক বড় খবর।

সংবাদ প্রভাকর টাইমস-এর মুখোমুখি আরটিডিসি-র কর্তা সঙ্গে কলকাতার আধিকারিক

সোমবার মধ্য কলকাতায় এক হোটেলে বিশেষ সাক্ষাৎকারে সংবাদ প্রভাকর টাইমস-এর মুখোমুখি হন আরটিডিসি-র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ফিনান্স) ড হোসিয়ার সিং। রাজস্থানের পর্যটনে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের অংশগ্রহণ নিয়ে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে তিনি এও জানান, রাজস্থান সরকার পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক কাজ করছে। তবে তা সঠিকভাবে সমস্ত স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্নগবাদ মাধ্যমের একটা বড় ভূমিকা থাকা উচিত। আমরা সংবাদ মাধ্যমের উপর ভরসা রাখি। রাজস্থান পর্যটন বিভাগ ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।যা নিয়ে বিস্তারিত বলেন রাজস্থান পর্যটনের এই কর্তা। এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের কলকাতা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হিঙ্গলাজ দন রত্নু।

‘প্যালেস অন হুইলস’এ ভারতীয় পর্যটকদের জন্য মিলবে এই সুযোগ

  • ড হোসিয়ার সিং এদিন প্রথমেই ‘প্যালেস অন হুইলস’ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আবেদন করেন এই প্রজেক্ট নিয়ে যেন বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয়।কারণ এটি রাজস্থান সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ প্রকল্প। ভারতের সম্মানজনক প্রকল্প। যা সাত রাত্রির ট্যুর। দিল্লি থেকে জয়পুর, জয়পুর থেকে সোয়াই মাধোপুর- চিতোরগড়-উদয়পুর-যোধপুর-জয়শলমীর এবং সেখান থেকে জয়পুর ফিরে আগ্রা হয়ে দিল্লি। এই হল ‘প্যালেস অন হুইলস’। এটা রেলের সাথে রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের যৌথ উদ্যোগ।এটা সম্পূর্ণভাবেই এক ইন্ডিয়ান প্রজেক্ট। এ থেকে বিদেশি রাজস্ব ও ডলারও আসছে। এটা খুবই ভালো প্যাকেজ। এর চাহিদা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যাপকভাবে আছে।”
  • “আমরা ঠিক করেছি যে ভারতীয় যেসব পর্যটক যারা এতদিন কোনও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছিল না তাদের আমরা ডিসকাউন্ট দিচ্ছি। এমনকী তাদের সময়ের সঙ্গেও বোঝাপড়া করেছি। যাতে তারা সাত রাতের জায়গায় তিন রাত করতে পারে। আমরা তাদের উপর সেই ভরসা রেখেছি। যাতে তারা জয়পুর থেকে জয়শলমীর পর্যন্ত যেতে পারে। বাকি তিনদিন আমরা পূরণ করে নিতে পারবো। কারণ কিছু মানুষ আছে যাদের কাছে সময় খুবই কম। যারা ভারতে এসেছে কোনও অনুষ্ঠানে যাবে হাতে সময় খুব কম তারা এর সুবিধা নিতে পারবে।”
  • ড হোসিয়ার সিং জানান- “রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগম এক নয়া পলিসি নিয়ে এসেছে। যেখানে তারা সব অংশীদারদের সামিল করেছে। আমরা এখন ব্যক্তিগতভাবেই ডিসকাউন্ট দিচ্ছি। একই সঙ্গে তাদের আমরা কিছু কূপনও দিচ্ছি রাত পিছু সময় ধরে। আগে আমরা এটা করিনি। এখন আমরা সেদিকেও নজর দিয়েছি। আমরা বুঝেছি দেশের মধ্যেও এর বাজার অনেক বেশি আছে। আমার দেশই তো আমার কাছে অর্ধেক বিশ্ব। এখানেও তাই এই সুযোগ থাকা দরকার। সিনিয়র সিটিজেনদের আমরা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকি। তাই তাদেরও আমরা তুলে ধরতে চাইছি যেখানে পেনশনার্সরাও আছেন। এমন কী কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পর্যন্ত আমরা ডিসকাউন্ট দিচ্ছি।”

“পরিকাঠামো থাকলেও তা পুরোপুরি ব্যবহার হচ্ছে না”

“আমাদের রাজস্থানের প্যাকেজ ট্যুর খুব সুন্দর। আপনারা যদি অন্য রাজ্যের দিকে তাকান তাহলে দেখতে পাবেন রাজস্থানের মতো এত কিছু সেখানে নেই। তামিলনাড়ুতে দুটি মন্দির দেখবেন। কলকাতায় আমি দুই দিন ধরে দেখলাম এখানে সেরকম দেখার কিছু নেই। এখানে শ্বাস নেওয়ার জায়গা পর্যন্ত নেই। এখানে বড় বড় বিল্ডিং ছাড়া তো কিছুই নেই। আপনাদের কাছে এমন কিছু নেই যা রাজস্থানের কাছে আছে। আমাদের ওখানে প্রচুর পর্যটক আসছে ঠিকই তবে আমাদের সুবিধাও আছে অনেক। আমাদের ওখানে থাকার জন্য শতকরা ৫০ ভাগ স্থান আছে। তাই যে পরিকাঠামো আমরা তৈরি করেছি তা পুরোপুরি ব্যবহার হচ্ছে না।লোক সেখানে যেতে চায়। সরকার চেষ্টা করে চলেছে। সেখানে কেউ প্রতারিত হয় না। কথা সেই দিতে পারে যে কথা রাখতে পারে। সরকার তো কখনোই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয় না।” বলেন ড হোসিয়ার সিং।

গ্রামীণ পর্যটনে হয়েছে ব্যাপক উন্নয়ন

রাজস্থানে এখন কংগ্রেসের সরকার চলছে। সেই সরকার পর্যটনকে কিভাবে দেখছে? এই প্রশ্নের জবাবে রাজস্থান সরকারের পর্যটন দফতরের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ফিনান্স) জানান- “আমাদের রাজ্য সরকার বর্তমানে পর্যটনকে আরও বেশি করে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। এই সরকার তো পর্যটনকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ, এর মাধ্যমে তো কর্মস্থান তো হয়ে থাকে। এর ফলে তৃণমূল স্তরে কর্মসংস্থান তৈরি হয়ে থাকে। গ্রামীণ পর্যটনেও তো প্রচুর মানুষ আসবে। আপনি যদি জয়শলমীরের বিভিন্ন গ্রামে যান তাহলে দেখবে কতখানি উন্নয়ন হয়েছে সেখানে। ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’, ‘গ্রামীণ পর্যটন’, স্পট পিকনিক আছে।”

ট্যুরিস্ট পুলিশ

“আমাদের রাজ্যে পর্যটকরা সব সময়ই সুরক্ষিত। আমরা পর্যটকদের কথা ভেবে তৈরি করা হয়েছে ট্যুরিস্ট প্রোটেকশন ফোর্স বা ‘টিপিএফ’। আমাদের ওখানে সমস্ত পর্যটক সুরক্ষিত এবং নিরাপদ। তাদের দিকে আমাদের সর্বদা খেয়াল রাখা হয়। আমরা আমাদের রাজ্যের সমস্ত জায়গায় কড়া নজর রাখি, শুধুমাত্র জয়শলমীর নয়। প্রতি জেলাতেই আমাদের নজর আছে। আমাদের রাজ্যে পর্যটকদের সুরক্ষায় স্পেশাল সেল করা হয়েছে। যাকে আমরা নাম দিয়েছি ‘ট্যুরিস্ট প্রোটেকশন ফোর্স’।” বলেন ড সিং।

শ্রেয়া গুহ দফতরকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর

তিনি আরও বলেন- “সরকার চলে পলিসির মাধ্যমে। সরকারের খুব সুন্দর পর্যটনের উপর পলিসি আছে। আমি তো শ্রেয়া গুহর নির্দেশেই কাজ করি। উনি আরটিডিসি-র চেয়ারম্যান আবার প্রিন্সিপল সেক্রেটারিও আছেন। উনি খুব সুন্দর চেষ্ঠা চালাচ্ছেন এই দরফতরকে আগে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। উনি নিজেও কলকাতার একজন মানুষ। খুব ভালো কাজ করছেন। তিনি খুব সুন্দরবভাবেই দফতরকে পরিচালনা করছেন।”

নয়া কনসেপ্ট আনছে আরটিডিসি

এখন আমাদের নয়া কনসেপ্ট- ডেস্টিনেশন ম্যারেজ। যেমন যোধপুর। কারণ যোধপুরে এমন কিছু সুবিধা আছে যা অন্য কোথাও নেই। এক নম্বর- আতিথেয়তা, দুই নম্বর- শান্তি, তিন নম্বর- পরিকাঠামো যেমনটা তাদের করা দরকার সেটাই তারা করতে পারে। চার নম্বর- খাবার। নানা ধরনের খাবার।

পর্যটকদের আরও বেশি করে টানতে যে পদক্ষেপ নিতে চলেছে আরটিডিসি

  • “পর্যটকদের আরও বেশি করে জ্ঞাত করা খুব প্রয়োজন। তবেই পর্যটনের প্রসার আরও বেশি হবে বলে মনে করেন রাজস্থানের এই পর্যটন আধিকারিক। দেখুন পর্যটকরা যেতে চায়। কিন্তু তাদের সব কিছু একেবারে ঠিকঠাকভাবে জানানো, তাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া, তাদেরকে খোঁজখবর দেওয়া খুব জরুরী। সেগুলি তারা পায় না।” জানান ড হোসিয়ার সিং।
  • “কিছু মানুষ এখান থেকে যায়। তারা জয়শলমীরে একদিনের ভ্রমণ করে চলে যায়। ৫০০ কিলোমিটার গেছে। এক রাত্রিত্র থেকে কিছুই দেখতে পায়নি। সঙ্গে তাদের বাচ্চা আছে। তাদের জানা প্রয়োজন যে সেখানে ঘুরতে যাওয়ার জন্য কতটা সময় রাখা দরকার। পর্যটন এমন একটা বিষয় যেখানে সম্পূর্ণ জ্ঞাত থাকা দরকার। পর্যটক যখন ঘর থেকে বের হয় তখন তাকে সব কিছু জানা দরকার। সরকার চেষ্টা করছে। কিন্তু সেটা এখনও সেভাবে পর্যটকদের কাছে পৌঁছচ্ছে না। অনেকে জয়শলমীরে যায়। কিন্তু সেখানে তারা দুইদিন থেকে হয়রান হয়ে যায়। তাদের জানানো দরকার যে এখানে দেখার কি কি আছে। কত কিলোমিটার তারা ঘুরতে পারবে। এত সময় তাদের লাগবে। এমন ধরনের তাদের পরিক্লপনা করতে হবে। সস্তা কোথায় হবে? কোথায় প্রতারিত হবে না। এসব পরিকল্পনা করা খুব জরুরী।”
  • “আমাদের যা কিছু আছে পর্যটন সম্পর্কিত যেমন রোড-ম্যাপ, পলিসি, ট্যারিফ কার্ড, পোস্টার, আমাদের অন্য সমস্ত কিছু আপনাদের হাতে তুলে দেব। যার মাধ্যমে আপনারা অনেক তথ্য পাবেন এবং তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন।এখান থেকে অনেকেই রাজস্থানে ঘুরতে যেতে যেতে চান কিন্তু যথাযথভাবে তথ্য তাদের কাছে থাকে না। সাংবাদিকরাই পারে এই দিকটা সঠিকভাবে তুলে ধরতে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে।”
  • “এজন্য রোড শো করা যেতে পারে। স্ক্রিন ডিস-প্লে করুন। একটা নতুন কনসেপ্ট আনা হচ্ছে।এখানে কমন ইনফরমেশন-এর একটা বড় রোল আছে। যেখানে সংবাদ মাধ্যমের একটা বড় ভূমিকা আছে। ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এই বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আপনাদের কাছে যে সুযোগ আছে যা নিয়ে আপনারা এই কাজ করতে পারেন। সিনিয়র সিটিজেন এবং ছাত্রদের আমরা ডিসকাউন্ট দেব বলে ঠিক করেছি। বাচ্চাদের উপর যা খরচ করা হবে তাই ফিরে আসবে। আপনি তাদের ভালো জিনিস দেখান।” বলেন ড হোসিয়ার সিং।

কলকাতায় বড় অফিস করা জরুরী

“বাঙালি পর্যটক সব থেকে বেশি যায় রাজস্থান ভ্রমণে। আরটিডিসি কলকাতা অফিসের পারফরম্যান্স ঠিক আছে। আরও ভালো করতে হবে। তবে কলকাতায় রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের অফিস খুবই ছোট। সে ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে পর্যটন কর্তা মেনে নিয়ে বলেন- আমরা চেষ্টা করছি এ ব্যাপারে কি করা যায়।আমি এ ব্যাপারে রাজস্থানে ফিরে গিয়ে কথা বলবো। কলকাতায় অবশ্যই নয়া অফিস হয়ে যাবে আশা করছি। ইচ্ছা তো আছে।”

পরিকাঠামোগতভাবে রাজস্থান খুব সুন্দর স্থান

“পরিকাঠামোগতভাবে রাজস্থান খুব সুন্দর। এখানে ব্যবস্থা খুব ভালো। অনেক আরামদায়ক। এখাঙ্কার পর্যটক খুব আন্তরিক। তারা শুধু পর্যটকই নয়, তারা নিরীক্ষক ও ইতিহাস নির্মাতা।তারা কিছু না কিছু শেখার জন্য যায়। এসব অন্য সব জায়গার পর্যটকদের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। এখানকার পর্যটক পর্যটন নিয়ে নকশা করে।” বলেন ড. হোসিয়ার সিং।

Published on: ফেব্রু ১৭, ২০২০ @ ২২:৫৭


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

54 − = 51