PHARMACON: আনছে একাধিক প্রোডাক্ট, কোম্পানির কর্ণধার শোনালেন এই উদ্বেগের কথাগুলি

অর্থ ও বাণিজ্য এসপিটি এক্সক্লুসিভ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান রাজ্য
শেয়ার করুন

  • আগামিদিনে ইঞ্জেক্টেবল এবং অ্যান্টি বায়োটিকের উপর কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে আসার চিন্তা-ভাবনাও আছে ফার্মাকনের।
  • আমাদের পশ্চিমবঙ্গে শুধু নয়, দুগ্ধজাতীয় প্রাণীর সংখ্যাটা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
  • পোলট্রি এখন একটা অংশের হাতে চলে গেছে। এটা পরিচালনা করে ওই মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলি।
  • সঠিক লোকের হাতে ছাগলের বাচ্চা পৌঁছচ্ছে না, উদ্বেগ প্রকাশ ফার্মাকন কর্তার।

রিপোর্টার– অনিরুদ্ধ পাল

Published on: অক্টো ৫, ২০১৯ @ ১৮:১৯

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৫ অক্টোবর:  প্রাণী সম্পদের ক্ষেত্রে যেসমস্ত কোম্পানি পশ্চিমবঙ্গজুড়ে কাজ করছে তার মধ্যে প্রথম সারিতে থকবে ফার্মাকন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির নাম। রাজ্যের মধ্যে বেশ ভালো জায়গায় অবস্থান করছে তারা। আগামিদিনে এই কোম্পানি বেশ কিছু প্রোডাক্ট বাজারে আনতে চলেছে।তবে কোম্পানির কর্ণধার সঞ্জয় রায় প্রাণী সম্পদের বেশ কিছু বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা জানালেন। যেগুলির প্রতি নজর দিলে একদিকে যেমন দুগ্ধ জাতীয় প্রাণীর সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হবে ঠিক তেমনই রাজ্য ভিত্তিক এই ধরনের কোম্পানিগুলির সাহায্যে রাজ্য তার রাজস্ব বাড়াতে সক্ষম হবে।কি বললেন ফার্মাকনের কর্ণধার সঞ্জয় রায়- আসুন শোনা যাক তাঁর মুখেই।

যে প্রোডাক্টগুলি ফার্মাকন বাজারে আনতে চলেছে

সঞ্জয়বাবু জানালেন- “আগামিদিনে ফিড সাপ্লিমেন্টের উপর কয়েকটি নতুন প্রোডাক্ট তারা বাজারে আনছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ১) পিএনবি গোল্ড চিলেটেড একটি মিনারেলস।এটা সাধারণতঃ দুগ্ধজাতীয় প্রাণীর ক্ষেত্রে চলে। এটা দুগ্ধ উৎপাদন বাড়ায়। একই সঙ্গে গ্রোথ বাড়ানোর কাজ করে। এছাড়া ফ্যাট পারসেন্টেজ বাড়বে। এছাড়াও আমারা আনতে চলেছি-২) একটি মাল্টি ভিটামিন এইচ।অন্যান্য সমস্ত কিছুর পাশপাশি বায়োটিন এবং জিঙ্ক দিয়ে তৈরি এই প্রোডাক্ট। এটা প্রধাণতঃ পোলট্রির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এর কাজও গ্রোথ বাড়ানো। ৩) আগামিদিনে ইঞ্জেক্টেবল এবং অ্যান্টি বায়োটিকের চিন্তা-ভাবনাও আছে। আশা করছি, এ বছর শেষের দিকে এগুলি বাজারে নিয়ে আসতে পারব।”

আনছে মাছের জন্য ব্যবহৃত সামগ্রীও

“এছাড়া আমরা পাশাপাশি মাছের জন্যও চিন্তা-ভাবনা করছি। মাছের জন্য ব্যবহৃত কিছু প্রোডাক্ট আনার পরিকল্পনা আছে। আমাদের যে প্রোডাক্টগুলো আছে তার মধ্যে কিছু কিছু প্রোডাক্ট মাছে খুব ভালো চলছে। আমাদের মাথায় আছে আরও কিছু প্রোডাক্ট মাছের জন্য নিয়ে আসা।” জানালেন সঞ্জয়বাবু।

প্রকাশ করলেন উদ্বেগও

  • বাজারে নতুন নতুন প্রোডাক্ট আনার কথা জানালেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি উদ্বেগও প্রকাশ করেন। সঞ্জয়নবাবু জানালেন- ” আমাদের পশ্চিমবঙ্গে শুধু নয়, দুগ্ধজাতীয় প্রাণীর সংখ্যাটা দিন দিন কমে যাচ্ছে। একটা সময় খাটালের লোকজনরা কুরবানির সময় গরু বেচে দিত।একটা গরুকে সে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিল। কিনে সে গরুটির থেকে দু’তিন বছর দুধ নিল। এর পর গরুটি যখন আর কাজে লাগছে না প্রোডাকশন সেভাবে দিচ্ছে না তখন তা বেচে দেয়। সেইসময় কুরবানির সময় এই গরুগুলিকে মোটা দামে বেচতে পারে। অর্থাৎ ৭০ হাজার টাকায় কেনা গরুগুলি এক থেকে দেড় লাখ টাকায় বেচে দিতে পারে। তার ফলে তারা বাইরে থেকে আবার সেই বিক্রির টাকায় বিদেশি গরু নিয়ে আসতো।কিন্তু ইদানীং সেই জিনিসটা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। যার জন্য এখন ক্যাটলের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। যেহেতু তারা কিছু পাচ্ছে না সেহেতু তারা এর এই সব প্রাণী পালনে অনীহা প্রকাশ করছে। আমরা আজ ১০ থেকে ২০ টাকা দামে জল খাই অথচ এক লিটার দুধের দামও সরকারি মূল্যে রয়েছে সেই ২০ টাকা।”
  • দুগ্ধজাতীয় প্রাণীর ক্ষেত্রে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি পোল্ট্রি সম্পর্কেও প্রকাশ করলেন উদ্বেগ। জানালেন-” পোলট্রি এখন ইনট্রিগেশনের হাতে চলে গেছে। এটা পরিচালনা করে ওই মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলি। তারাই এটাকে নিয়ন্ত্রণ করে। যখন বাজারে দেখা যায় মুরগি কেউ খাচ্ছে না, যখন দেখা যায় মাছের চাহিদা ভালো রয়েছে, আর তখন বাজারে সেই সময় দেখা যায় মুরগির দামটা অনেক নীচে নেমে গেছে।এরফলে কৃষকরা সেভাবে পয়সা পায় না। আবার দেখা যাচ্ছে বাজারে চিকস-এর দাম এমন হাই করে দিচ্ছে পাশপাশি ফিডের দামটাও বেড়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিক কারণে চাষিরা চাষ করতে পারছে না। সব সময় একটা ক্রাইসিস মুডে রেখে দেওয়া হয়। সরকার কিন্তু গো-সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়েছে। ব্লকে ব্লকে মুরগি যোগান দিচ্ছে। ছাগলের বাচ্চা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এগুলো টিকছে না। কিন্তু সত্যি যদি টিকত কিংবা যার দরকার যে লোকটা পেলে পরে পুষতো তার থেকে রিকোভারি করে আবার দুটো বাচ্চ আবার করতো দেখা যাচ্ছেও সেই মানুষগুলি ছাগলের বাচ্চা পাচ্ছে না।এর পিছনে কি চলছে তা বুঝে নিন। অথচ যারা ছাগলের বাচ্চা পাচ্ছে তারা সেগুলো করছে না। একটু বড় হলেই তারা সেগুলো বেচে দিচ্ছে। এটা একটা অন্য ধরনের ব্যাপার চলছে।”
  • কিন্তু এখনও পর্যন্ত কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে কালো ছাগলের কিন্তু একটা বড় জায়গা আছে। কালো ছাগলের ক্রস বাইটের সম্ভাবনা থাকে। তাতে বাচ্চার সংখ্যা বাড়ে। আর সেই বাচ্চা গুলো অনেক বেশি শক্ত সমর্থ হয়। কিন্তু যে বাচ্চা গুলো দেওয়া হচ্ছে সেগুলো নানা কারণে বাঁচছে না।- বলেন সঞ্জয়বাবু।

জিএসটি-তে চলে যাচ্ছে লাভের টাকা

সঞ্জয়বাবু জানালেন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা। যেটা এখন একটা বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে এইসমস্ত রাজ্যভিত্তিক সফল কোম্পানিগুলির ক্ষেত্রে। শোনালেন সেই কথা। কেন রাজ্য স্তরের এই কোম্পানিগুলির ইচ্ছা থাকলেও তারা বেশি এগোতে পারে না জানালেন সেকথাও- “আমরা পিছিয়ে পড়েছি একটাই কারণে, আমাদের যে ফিড সাপ্লিমেন্টগুলো আছে সেগুলো জিএসঅটি এক্সামটেড। কিন্তু আমার এই প্রোডাক্টগুলো তৈরি করতে যে কাঁচা মালগুলো লাগে সেগুলো সবই জিএসঅটি দিয়ে কিনতে হয় যার ফলে কি হয় আমাদের ১৮ শতাংশ জিএসঅটি লেগে যায় বানাতে গিয়ে। সেটা আমাদের লাভের অংশ থেকে চলে যাচ্ছে। এর পরেও আমরা চেষ্টা করি আমাদের উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মানকে ঠিক রেখে তার দামটাকে ধরে রাখার চেষ্টা করি। এই কারণে আমরা একটু পিছিয়ে পড়েছি। যার ফলে আগেও আমরা সরকারি প্রোগ্রামগুলিতে আগেও সহযোগিতা করতাম। এখন আর তা পারি না। পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র আমাদের পণ্য পাওয়া যায়। চিকিৎসকরাও আমাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে সন্তুষ্ট।”

Published on: অক্টো ৫, ২০১৯ @ ১৮:১৯


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

84 + = 94