সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের মুখে নৈহাটি সেন্ট লুক’স ডে স্কুলের প্রশংসা

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: ডিসে ১৭, ২০২৩ at ২৩:৪৩
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, নৈহাটি, ১৭ ডিসেম্বর: আজ নৈহাটি সেন্ট লুক’স ডে স্কুলের বাৎসরিক অনুষ্ঠান এবং পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক এবং রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। স্কুলের অনুষ্ঠান দেখে অভিভূত সেচমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন- সেন্ট লুক’স ডে স্কুল বরাবরই নৈহাটির সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছে। পাশাপাশি এদিন সমবেত সঙ্গীত পরিবেশনকারী স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর নৈহাটি উৎসবের মঞ্চে গান গাওয়ার আমন্ত্রণও জানিয়ে গেলেন। মন্ত্রীর পথে হেঁটে নৈহাটির পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়ও স্কুলের প্রভূত প্রশংসা করলেন। দু’জনকেই এদিন স্কুলের পক্ষ থেকে সম্বর্ধিত করা হয়।

এদিন সেন্ট লুক’স ডে স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। স্কুলের প্রশংসা করে তিনি বলেন- “সেন্ট লুক’স ডে স্কুল বরাবরই নৈহাটির সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছে। এ বছরও এই স্কুল থেকে দু’জন স্ট্যান্ড করেছে। বরাবরই নৈহাটিতে যারা প্রথম সারির স্টুডেন্ট তারা এই স্কুল থেকেই নৈহাটির মুখ উজ্জ্বল করে। সেই জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞ। এই বছরও যারা কৃতী ছাত্র-ছাত্রী তাদের ২৫ ডিসেম্বর নৈহাটি উৎসবের মঞ্চ থেকে সম্মানিত করা হবে। আর একটা ঘোষণা আমি এখানে করে দিতে চাই- এই যারা পারফরম্যান্স করে গেলেন যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে সমবেত গান গাইলেন তারা নৈহাটি উৎসবের মঞ্চে ৩১ দিসেম্বর সন্ধ্যায় ছ’টায় পারফর্ম করবে। ওদের সাথে আমার দেখা হবে। এইখান থেকেই নৈহাটির বাংলার ছেলে-মেয়েরা মুখ উজ্জ্বল করবে। আমি দেখছিলাম গৌরবের ভাইপোকে। যে গি্টার বাজিয়ে লিড করছিল- এরাই তো বাংলার ভবিষ্যত। আপনারা পাশে থাকুন।”

এদিন নৈহাটি পুরসভার পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়ও সেন্ট লুক’স ডে স্কুলের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন-  “সত্যি প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য সেন্ট লুক’স ডে স্কুল। শেষ ভালো যার সব ভালো তার। আমি প্রথম থেকে মনে করেছিলাম যে সেন্ট লুকের পারিপার্শ্বিক পরিবেশটা যদি ভালো করে দেওয়া যায়। তাহলে সেন্ট লুকের ভিতরের পরিবেশটা এরা ভালো করে নেবে। এর দু’জন (প্রিন্সিপাল সাধনা ভট্টাচার্য ও সেক্রেটারি সুজিত ভট্টাচার্য) মিলে সেন্ট লুক’স স্কুলটাকে কেমন সুন্দরভাবে সাজিয়েছে। অনুষ্ঠানে একটার সঙ্গে একটার সমন্বয় দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আমি সাংস্কৃতিক জগতের মানুষ নই। অভিজ্ঞতা খুব কম। কিন্তু এত ভালো লাগছিল আমি মন দিয়ে শুনছিলাম। যারা শেষ অনুষ্ঠানটি করল তাদের প্রতি আমার স্যালুট রইল। তাদের প্রতি শুভেচ্ছা রইল, তারা আগামিদিনে আরও এগিয়ে চলুক। স্কুলের সুনাম গর্ব ছড়িয়ে দেয় ছাত্র-ছাত্রীরা।”

সেন্ট লুক’স ডে স্কুল এর এদিনের অনুষ্ঠান দেখে অভিভূত নৈহাটি পুরসভার পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায় কিছুটা আক্ষেপের সুরে বলেন- “আজকের এই কর্মসূচিতে আমি দেরী করে এসেছি। আমার দুর্ভাগ্য। আমি সুজিতবাবু(স্কুলের সেক্রেটারি সুজিত ভট্টাচার্য)কে কথা দিচ্ছি যে সামনের বার আগেই আসব। আপনি যখন ডাকবেন আম তখনই আসব। নৈহাটি পুরভার পক্ষ থেকে যেটুকু করার তা চেষ্টা করি।ম্যাডাম(প্রিন্সিপাল সাধনা ভট্টাচার্য) খুব ভাল মানুষ। ম্যাডামকে যখনই কোনও সাহায্য সহযোগিতার কথা বলা যায় ম্যাডাম দু’হাত তুলে এসগিয়ে আসেন। আমি সেন্ট লুক’স ডে স্কুলের আরও অগ্রগতি কামনা করি।”

এদিনের অনুষ্ঠানে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। সেখানে ইংরাজি ও হিন্দি নাটক পরিবেশিত হয়। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কোরিওগ্রাফিতে ছাত্রীদের অনবদ্য নৃত্য পরিবেশিত হয়, যা উপস্থিত সকলের প্রশংসা কুড়োয়।সমবেত সঙ্গীত মাতিয়ে দেয় গোটা অনুষ্ঠানকে।

এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে সম্বর্ধিত করা হয় বিশিষ্ট অধ্যাপক ও নৈহাটি বঙ্কিম গবেষনাগারের দায়িত্বে থাকা রতন নন্দী ও নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (শিক্ষা) কানাইলাল আচার্য। এছাড়াও কয়েকজন কৃতী প্রাক্তনীদের বাবা-মা-কে স্কুলের পক্ষ থেকে সম্বর্ধিত করা হয়। এই পর্বটি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে যথেষ্ট উপযোগী হয়ে ওঠে। উপস্থিত প্রাক্তনীদের বাবা-মা এই স্কুলের সঙ্গে তাদের ছেলে-মেয়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে সুন্দরভাবে বর্ণনা করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি স্কুলের প্রিন্সিপাল সাধনা ভট্টাচার্যের আন্তরিকতা, স্নেহ, মমতার গভীরতা বর্ণনা করেন তারা। কিভাবে এই স্কুল আজ একতা বৃহত্তর পরিবার হয়ে উঠেছে তারা সেকথাও সুন্দরভাবে বর্ণনা করেন। স্কুলের কৃতী প্রাক্তনী যারা কেউ আজ আইআইটি, কেউ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ সরকারি আধিকারিক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদের কয়েকজন এদিনের অনুষ্ঠানে নিজেদের ছাত্রজীবনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

এদিনের অনুষ্ঠানে এবারের আইসিএসই ২০২৩ ব্যাচের কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের বিশেষ ফলক দিয়ে সম্মান জানানো হয়। যারা ১০০ শতাংশ নম্বর কিংবা সবচেয়ে নেশি নম্বর পেয়েছে তাদের পুরস্কৃত করা হয়। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য – অরুনাভ দত্ত ও দেবাদৃতা বিশ্বাস। অরুণাভ ৯৯.৪% পেয়ে রাজ্যে তৃতীয় স্থান পেয়েছে। দেবাদৃতা ৯৯% পেয়ে রাজ্যে পঞ্চম স্থান অর্জন করে।

Published on: ডিসে ১৭, ২০২৩ at ২৩:৪৩


শেয়ার করুন