
Published on: এপ্রি ১৪, ২০২৫ at ১৯:৫৭
এসপিটি নিউজ, কলকাতা ও রামনগর, ১৪ এপ্রিল : যোগীরাজ শ্যামাচরণ লাহিড়ির দেখানো পথেই লোকশিক্ষা এবং লোকসেবা দিয়ে চলেছেন তিনি। রামনগরে অখন্ড শ্রী ক্রিয়াযোগ সাধন মন্দির আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা গুরুজী আচার্য দেবানন্দ শাস্ত্রী। ন’বছর ধরে আস্রমে নাগেশ্বর মহাদেবের কুম্ভাভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন তিনি। গতকাল ১৩ এপ্রিল এগড়ায় কুদি গ্রামে আদি গঙ্গায় স্নান করে মুক্তিশ্বর মহাদেবের পুজো দিয়ে আড়াইশো ভক্ত যাত্রা করে রামনগরের সাধন মন্দির আশ্রমের উদ্দেশে। সেখানে এসে নাগেশ্বর মহাদেবের কুম্ভাভিষেক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
অখন্ড শ্রী ক্রিয়াযোগ সাধন মন্দির আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা গুরুজী আচার্য দেবানন্দ শাস্ত্রী এদিন সংবাদ প্রভাকর টাইমস-কে দূরভাসে জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে মন্দিরে এই কুম্ভাভিষেক অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছিল। সেই থেকে এই অনুষ্ঠান সমানে হয়ে আসছে। স্থানীয় ভক্ত্রা আদি গঙ্গা থেকে জল নিয়ে এগড়ার কাছে কুদিস্থিত মুলতেশ্বর মহাদেবের পুজো সেরে সেই জল নিয়ে অখন্ড শ্রী ক্রিয়াযোগ সাধন ধামের আশ্রমে এসে নাগেশ্বর মহাদেবের কুম্ভাভিষেক করেন। এবার এই কুম্ভাভিষেক যাত্রায় প্রায় ২৫০জন অংশ নিয়েছিলেন। যত দিন যাচ্ছে মানুষের উৎসাহ তত বাড়ছে।
নাগেশ্বর মহাদেবের আবির্ভাব কিভাবে হল
শিব পুরাণ অনুসারে, পুরাকালে দারুক নামে এক রাক্ষস রাজত্ব করত। দারুকের উৎপাতে সব মানুষ পরিত্রাণের জন্য মধুসূদন সুঁবরিব লগাত পরিছিল। দারুকের পত্নী ছিল দারুকী। দারুকী দেবী পার্বতীর উপাসিকা ছিল। পার্বতী দারুকীর প্রতি সন্ত্তষ্ট হয়ে তাঁদের রাজত্ব করা অরণ্যটির নাম দারুকবন আখ্যা দেন। সঙ্গে এই আশীর্বাদ প্রদান করেন যে, দারুকী যেখান দিয়েই যাবে দারুকবনও সেই স্থান দিয়ে গমন করবে। পরবর্তী সময়ে দেবতারা দারুকের রাজ্য আক্রমণ করায় দারুক নিজ পত্নীকে পার্বতীর বরদান সুপ্রয়োগ করার জন্য আদেশ দেয়। সেই হিসাবে দারুকী সাগরতীর দিয়ে পলায়ন করে এবং দারুকবনও সেই জায়গা দিয়ে গমন করে। নিরাপদ স্থান থেকে দারুক পুনরায় সকলের উপর অত্যাচার আরম্ভ করার জন্য ধরে। এবার দারুক সুপ্রিয়কে বন্দী করে। সুপ্রিয় মহাদেবের পরম উপাসক। সুপ্রিয় বন্দীগৃহে কিছুমাত্র বিচলিত না হয়ে শিবলিংগ স্থাপন করে মহাদেবের স্ত্ততি আরম্ভ করে। সুপ্রিয়র প্রার্থনাতে সন্ত্তষ্ট হয়ে মহাদেব দর্শন দেন এবং দারুককে বধ করার জন্য সুপ্রিয়কে অস্ত্র প্রদান করেন। মহাদেবের বরদানে ধন্য হয়ে সুপ্রিয় দারুককে বধ করতে সক্ষম হয়। এর পর সুপ্রিয় মহাদেবকে সেই স্থানে বিরাজমান হয়ে থাকার জন্য অনুরোধ করায় মহাদেব নিজ জ্যোতি দ্বারা জ্যোতির্লিংগ স্থাপন করে নিজ ভক্তের মনোকামনা পূরণ করেন। মহাদেবকে নাগেশ্বর অর্থাৎ নাগ (সাপ)এর ঈশ্বর রূপে পূজা করা হয়। এজন্য মহাদেবের য়ার এক নাম নাগেশ্বর মহাদেব।
‘পুরাণ পুরুষ যোগীরাজ শ্যামাচরণ লাহিড়ি ‘ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে- “তিনি বলতেন মানব জন্ম দুর্লভ ও ক্ষণস্থায়ী। তাই এমন সাধনা করা উচিত যাহা দ্বারা ইহ জন্মেই জন্ম-মৃত্যুর কবল থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সেজন্য তাঁকে কখনও উপবাস বা স্থূল পূজা করিতে দেখা যায় নাই। তিনি কেবলমাত্র লোকশিক্ষার জন্য বৎসরে একদিন শিবরাত্রির দিন উপবাস করিতেন। বলিতেন আমি যদি না করি লোকে করিবে না। “
ঠিক সেভাবেই রামনগরে অখন্ড শ্রী ক্রিয়াযোগ সাধন মন্দির আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা গুরুজী আচার্য দেবানন্দ শাস্ত্রী মহারাজ স্থানীয় ভক্তদের বিশ্বাসকে মর্যাদা দিয়ে এই কুম্ভাভিষেক প্রক্রিয়া অনুষ্ঠান গত নয় বছর ধরে সম্পন্ন করে আসছেন। তারই পরিচালনায় এই কুম্ভাভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে।
Published on: এপ্রি ১৪, ২০২৫ at ১৯:৫৭