ডগ-শো’এ এসে প্রাণীদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন চন্দন সেন, তথাগতরা

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জানু ৮, ২০২৪ at ২১:২৩

Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৮ জানুয়ারি: সম্প্রতি শেষ হয়েছে বিজ্ঞান মেলা ২০২৪। গতকাল বেলগাছিয়ায় বিজ্ঞান মেলার শেষদিনে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল ‘ডগ-শো’। যেখানে বিভিন্ন জাতের পোষ্য কুকুর বা সারমেয় অংশ নেয়। প্রদর্শনীতে সেরাকে পুরস্কৃত করা হয় সুদৃশ্য ট্রফি দিয়ে। সেই ডগ-শো-এ হাজির ছিলেন চলচ্চিত্র ও নাট্য জগতের তিন উজ্জ্বল ব্যাক্তিত্ব অভিনেতা চন্দন সেন, তথাগত ব্যানার্জি এবং লোকনাথ দে। তারা সকলেই এদিন প্রাণীদের নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অভিনেতা চন্দন সেন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন- আমরা মাত্র আড়াইশো বছরে ১৬ হাজার প্রাণীকে মেরে ফেলেছি। ওদের সঙ্গে থাকুন।জীব-জগতের দুটি ভাগ- উদ্ভিদ ও প্রাণী। এই প্রাণিদের মধ্যে মানুষ, মশা, কুকুর, মাছি, হাতি, গণ্ডার সবাই আছে। আমরা বোধ হয় বাকিদের আর প্রাণী মনে করছি না মানুষ ছাড়া। সেটা মনে করার সময় এসে গেছে- বলেন অভিনেতা তথাগত ব্যানার্জি।

অভিনেতা চন্দন সেন বলেন- “১০০বছর হতে চলেছে আমাদের বিজ্ঞান মেলা, দেশের বিজ্ঞানমেলা। আপনারা বিজ্ঞান মেলা করছেন। কিন্তু বিজ্ঞান ছাড়া এখন অবিজ্ঞানকে নিয়ে এত বেশি মাতামাতি হচ্ছে সেখানে দাঁড়িয়ে আপনারা বিজ্ঞান মেলা করছেন সেজন্য আপনাদের অভিনন্দন জানাই।”

সমস্ত প্রাণীদের উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন- “শুধু কুকুর নয় সহকারীদের সঙ্গে থাকুন, ওরাও এই পৃথিবীর বাসিন্দা। আমরা ১৬ হাজার প্রাণীকে ইতিমধ্যে মেরে ফেলেছি। মেরেছি মাত্র ২৫০ বছরে। একটা ভিডিও-র উল্লেখ করে বলেন- “সেখানে দেখানো হয়্বেছে যে ডায়নোসর এসে বলছে আমরা ২১ কোটি বছর বাঁচতে পেরেছি। আর তোমরা মাত্র দেড় কোটি বছরে পৃথিবীর এই হাল করলে।” সবশেষে তাঁর আবেদন- এখনও সময় আছে আমাদের,  সহকারীদের সঙ্গে প্রকৃতির সঙ্গে বাঁচুন। বিজ্ঞানের সঙ্গে বাঁচুন। অবিজ্ঞানের থেকে দূরে থাকুন।

আর এই যে এত বাচ্চা এসছে এতে মন এত ভাল হয়ে যায় মনে হয় কোনও ক্লান্তি নেই। বাড়ি ফেরার পর একবার এসে সামনে এসে যখন দাঁরায়। আরও বেশি করে সহকারীদের সংগে থাকুন।

ওভিনেতা তথাগত বলেন- “আমরা একটা সময় কথা বলছি যেসময় চার্লস ডারউইনকে অস্বীকার করা হচ্ছে। সেসময় দাঁড়িয়ে এজটা বিজ্ঞান মেলায় এসছি। বিজ্ঞান মেলায় আসার পাশাপাশি আর একটা উদ্দেশ্য আছে সেখানে আপনারা যারা ছানাদের সন্তানদের নিয়ে এখানে এসছেন তাদের সাথে দেখা হওয়া। আমি একটা সিনেমা বানাচ্ছি। সেই সিনেমাটার নাম ‘পারিয়া’। সিনেমাটা রাস্তার কুকুরদের নিয়ে। আপনারা সে বিষয়ে কেউ কেউ জানেন। কেউ কেউ জানেন না। এই সিনেমাটা বানানোর মূল কারণ হয়তো এই বিজ্ঞান মেলার উদ্দেশ্যের সাথে মিলে যায়।”

“আমরা বড্ড অবহেলা করে ফেলছি। আমরা ভুলে গেছি ক্লাস ফাইভের বিজ্ঞান বইটা। যে বিজ্ঞান বইতে বড় বড় করে লেখা ছিল- জীব-জগতের দুটি ভাগ- উদ্ভিদ ও প্রাণী। এই প্রাণীদের মধ্যে মানুষ, মশা, কুকুর, মাছি, হাতি, গণ্ডার সবাই আছে। আমরা বোধ হয় বাকিদের আর প্রাণী মনে করছি না মানুষ ছাড়া। সেটা মনে করার সময় এসে গেছে। সেই মনে করা থেকেই আমার ছবি বানানো। আমি যেটা করেছি আমার সিনেমায় এই সময় যারা বঞ্চিত কিংবা অবহেলিত তাদের লড়াই-এর কথা তুলে ধরতে। তাই পারিয়াও রাস্তার কুকুরদের কথা সংগ্রামের কথা তুলে ধরবে। যে অত্যাচার মানুষ তাদের উপর দিনের পর দিন করে তার প্রতিবাদ করবে। আমি মনে করি যারা বিশ্বাস করেন – এখানে যারা এসছেন তারা তাদের কুকুর নিয়ে আসেননি তাদের সন্তানদের নিয়ে এসছেন।”

এদিন বিভিন্ন জাতের সারমেয়র প্রদর্শনী হয়। যেখানে ল্যাব্রাডর রিট্রিভার, গোল্ডেন রিট্রিভার, রটওয়েলার, পাগ, বিগেল সহ আরও অনেক। এই প্রদর্শনীর বিচারক ছিলেন পার্থ চ্যাটার্জি। তিনি বলেন- “ল্যাব্রাডর আজ ৩০ বছর ধরে পেট ডগ হিসাবে সারা পৃথিবীতে এক নম্বরে আছে। এদের ল্যাব্রাডর রিট্রিভর বলা হয়। তাদের তিনটি রঙ- কালো, হলুদ এবং চকলেট। এই ব্রিডটা খুবই পপুলার। ভারতে ল্যাব্রাডরের স্ট্যান্ডার্ড খুবই ভালো। এছাড়াও আছে গোল্ডেন রিট্রিভার।এরা খুবই ভাল। গোল্ডেন রিট্রিভার হল মাঝারি আকারের রিট্রিভার কুকুরের একটি স্কটিশ জাত। এটি একটি মৃদু এবং স্নেহময় প্রকৃতি এবং একটি আকর্ষণীয় সোনার আবরণ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এটি সাধারণত একটি পোষা প্রাণী হিসাবে রাখা হয় এবং এটি বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশে সবচেয়ে ঘন ঘন নিবন্ধিত জাতগুলির মধ্যে একটি।”

“রটওয়েলার এই ব্রিডটা আজ অনেক হয়ে গেছে।এরা যদি ভাল জায়গা থেকে আসে অর্থাৎ পেডিগ্রি যদি ভাল থাকে কিন্তু সেটাই আমরা ধুলিসাত করে দিয়েছি।এরা খুব পাওয়ারফুল ডগ। একটা ছোট কুকুর কামড়াক কিছু হয় না। এ যদি কামড়ায় আপনার কিন্তু হাড়টাই ভেঙে যেতে পারে। এই বড় জাতের কুকুর কিনতে গেলে আপনারা তার বাবা-মাকে দেখবেন। তাদের যেমন টেম্পারামেন্ট সেই অনুযায়ী আপনারা নেবেন।”

“বিগল এরা খুবই পপুলার। বিগল হল ছোট ঘ্রাণ হাউন্ডের একটি জাত, যা দেখতে অনেক বড় ফক্সহাউন্ডের মতো। এদের পিছনে কম খরচ। খুব সহজে যত্ন করা যায়।”

Published on: জানু ৮, ২০২৪ at ২১:২৩


শেয়ার করুন