সংবাদদাতা– বাপ্পা মন্ডল
ছবি-বাপন ঘোষ, গুগল
Published on: মে ২৪, ২০১৯ @ ১৭:৪৪
এসপিটি নিউজ, খড়্গপুর, ২৪ মে: এ আবার কেমনতর ব্যাপার হল! বৃহস্পতিবার রাতেও যারা তৃণমূল ছিল শুক্রবার সকাল হতেই তারা বিজেপি-র হয়ে গেল।তৃণমূলের কার্যালয়ে বিজেপির পতাকা লাগিয়ে দিয়ে সামিল হয়ে গেল তাদের বিজয় মিছিলে। নির্বাচনের আগে যে তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্লোগান তুলেছিল- ২০১৯ বিজেপি ফিনিশ। সেই স্লোগান রাতারাতি ‘২০১৯ তৃণমূল ফিনিশ’-এ বদলে দিয়ে তৃণমূলের কার্যালয় শেষে দখল হয়ে গেল। যা দেখে হতবাক তৃণমূলের নেতা থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা পর্যন্ত।
মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত খড়্গপুর গ্রামীণ বিধানসভা কেন্দ্র। যেখানে হাতিহল্কা, রামনগর, বাজারবাগান সহ বেশ কিছু এলাকায় তিনি কিন্তু লিড পাননি। এমনকী সাম্প্রতিককালে যেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই এলাকার তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের রাত পোহাতেই এ কি হল? দল বেঁধে তারা দিদির হাত ছেড়ে মোদি আর অমিত ভাই-এর হাত ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন!গতকাল রাতেও যারা তৃণমূল জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়েছিলেন রাতারাতি তারাই আবার নিজের হাতে বিজেপির পতাকা লাগিয়ে দিলেন তৃণমূলের কার্যালয়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা যে নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। সকলেই যে হতবাক।
মেদিনীপুর লোকসভার এগরা, দাঁতন, নারায়ণগড়, কেশিয়াড়ি, মেদিনীপুর ও খড়্গপুর এলাকায় লিড পান দিলীপ ঘষ। শুধু মাত্র খড়্গপুর গ্রামীণ বিধানসভা কেন্দ্রের ৫০টি বুথের ভোটাররা তৃণমূল প্রার্থী মানস ভুইঞাকে লিড দেয়।
একই ছবি ধরা পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা ৩ নম্বর ব্লকের সুকনাতোর এলাকায়। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর জয়ের খবর নিশ্চিত হতেই,কার্যত হুড়োহুড়ি পড়ে যায় এক দল থেকে অন্য দলে যাওয়ার,সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা যায় গড়বেতায়। এই দিন গড়বেতার ৩ নম্বর ব্লকের ৬ নম্বর শঙ্করকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান সিরাজুল পাঠান ও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রুনা গায়েন সহ ৩০০০ কর্মী-সমর্থক বিজেপির দলীয় পতাকা হাতে তুলে নেন।
এ দিন সিরাজুল পাঠান বলেন, ‘সারা দেশ সহ রাজ্যে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারই শরিক হতে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিলাম। বিজেপি নেতা চয়ন রায় বলেন- মোদি যেই ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন,তাই রোজ ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ বিজেপিতে যোগদান করছেন।মজার বিষয় হল, তৃণমূল কংগ্রেস এতদিন যেভাবে সংখ্যালঘু ভোটারদের মোদি বিরোধী আখ্যা দেওয়ার কথা বলে আসছিল এবারের ফল বের হতেই কিন্তু সেই সংখ্যালঘু ভোটাররাই বিজেপিতে যোগ দিয়ে মোদিতে আস্থা রাখার নিদর্শন দেখাল।
আর এসব দেখেই এলাকার মানুষ বিশেষ করে জঙ্গলমহনের মানুষ বলতে শুরু করেছেন- দিদির তোলা ‘২০১৯ বিজেপি ফিনিশ’ অস্ত্র যে শেষে ‘২০১৯ তৃণমূল ফিনিশ’ করেই ছাড়ল। এ যে দিদির কাছেই বুমেরাং হয়ে ফিরে গেল।
Published on: মে ২৪, ২০১৯ @ ১৭:৪৪