২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপঃ এই চারজন হয়ে উঠতে পারে ব্রাজিলের জয়ের মূল কারিগর

খেলা বিদেশ
শেয়ার করুন

Published on: জুন ৩, ২০১৮ @ ২৩:১৩

এসপিটি স্পোর্টস ডেস্কঃ ফিফা বিশ্বকাপে ব্রাজিল অন্যতম শক্তিশালী দল। মোট পাঁচবার ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪ ও ২০০২ তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বিশ্বে তারাই একমাত্র দল যারা সবচেয়ে বেশিবার বিশ্বকাপ জিতেছে। তাদের খেলার ধরন আর কৌশল দর্শকদের নজর কেড়ে আসছে। এ পর্যন্ত ব্রাজিল বিশ্বকাপের ইতিহাসে মোট ১০৪টি ম্যাচ খেলেছে। জিতেছে ৭০টি। ড্র করেছে ১৭টি ও হেরেছে ১৭টি ম্যাচে। গোল করেছে ২২১টি। পয়েন্ট ২২৭।

১৯৭০ সালের ব্রাজিল ফুটবল দল ছিল সব থেকে সেরা। তারা একমাত্র দল যারা পাঁচটি মহাদেশেই বিশ্ব কাপ জিতেছেন। তাদের বর্তমান দল হল প্রতিভাবান আর অভিজ্ঞতায় সম্পন্ন।

ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮ তে ব্রাজিল অন্যতম ফেবারিট দল হিসেবে নামতে চলেছে। যাদের এবারও বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ আছে।

এবারের বিশ্বকাপে যাদের উপর নির্ভর করে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হতে পারে তাঁরা হলেন থিয়াগো সিলভা, ফিলিপ্পি কুটিনহো, গ্যাব্রিয়েল জেসাস ও নেইমার।

থিয়াগো সিলভা

থিয়াগো সিলভা এক সুসংহত ডিফেন্ডার।  কোনও বাধা ছাড়াই তিনি প্রতিপক্ষের আক্রমন রুখে দিতে সমর্থ হন। ইউরোপীয় ফুটবলের সবচেয়ে দ্রুত গতিসম্পন্ন ডিফেন্ডারদের মধ্যে তিন অন্যতম। তিনি খুবই শক্তশালী এবং তাঁর বল অনুধাবনের ক্ষমতা প্রখর। তাঁর সবচেয়ে বড় দিক হল-অসাধারণ কৌশলগত বুদ্ধিমত্তা এবং খেলার জ্ঞান,  আর সেইসাথে চমৎকার অবস্থানগত জায়গা পরিবর্তন করে নেওয়ার ক্ষমতা।

তাঁর এইসব দক্ষতার কারণে তিনি অনায়াসে প্রতিপক্ষের আক্রমনের গতিপ্রকৃতি ধরে ফেলে আগেই তা ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম হন। এটা থিয়াগোর এক বিশেষ দিক। সিলভা একজন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবে খেলেন এবং তাঁর ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি) এবং ব্রাজিলের জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করেন। ব্রাজিলের হয়ে তিনি ৬৮টি ম্যাচে ৫টি গোল করেছেন।

২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপে থিয়াগো সিলভার ভূমিকা ব্রাজিলের সাফল্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তাঁর প্রতিরক্ষামূলক দক্ষতা এবং তার নেতৃত্বের দক্ষতা অন্যান্য খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করবে।

এক নজরে থিয়াগো সিলভা

পুরো নাম- থিয়াগো সিলভা         

জন্মস্থান- রিও ডি জেনিরো

জন্ম- ২২ সেপ্টেম্বর,১৯৮৪ 

উচ্চতা- ৬ ফুট

ওজন-৭৮কেজি

ক্লাব-প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন        

জার্সি নম্বর-১৪                                       

 ফিলিপ্পি কুটিনহো

ইনি একজন আক্রমণকারী মিডফিল্ডার। দ্বিতীয়ত, তিনি আবার স্ট্রাইকার। কুটিনহোর সবচেয়ে বড় দিক হল-সহকর্মীদের তিনি অসাধারণ দক্ষতায় সাহায্য করে থাকেন। যেটা দলের পক্ষে অত্যন্ত কার্যকর হয়ে ওঠে। তাঁর ড্রিবলিং ক্ষমতা, গতি এবং চ্যালেঞ্জের কারণে লিওনেল মেসি ও রোনালডিনহোর সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। তাঁর চমৎকার দৃষ্টি আছে, যা থেকে তিনি বুঝে যান কোথা ত্থেকে কাকে পাস বাড়ালে দলের সাফল্য আসবে। কুটিনহোর পাস বাড়ানোর ক্ষমতা বিশ্বমানের।

স্বাভাবিকভাবেই তিনি ডান পায়ে খেলে থাকলেও কুটিনহো উভয় পায়ে খেলতে সক্ষম এবং দূর থেকে ভাল শট নিতে পারেন। তিনি ব্রাজিলের হয়ে এ পর্যন্ত ৩৫টি খেলায় ৯টি গোল করেছেন। কুটিনহোর তীক্ষ্ণ নজর আর এবং পাস বাড়ানোর ক্ষমতা প্রতিপক্ষের রক্ষনভাগকে বেশ চিন্তায় রাখবে। যা ব্রাজিলের জয়ের পথে সহায়ক হয়ে উঠবে।

২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপে কুটিনহোর প্রতিভা ও সক্ষমতার প্রকাশ ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এক নজরে ফিলিপ্পি কুটিনহো

পুরো নাম- ফিলিপ্পি কুটিনহো        

জন্মস্থান- রিও ডি জেনিরো

জন্ম- ১২ জুন,১৯৯২        

উচ্চতা- ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি

ওজন-৭০.২৯ কেজি

ক্লাব-বার্সেলোনা 

জার্সি নম্বর-১১   

গ্যাব্রিয়েল জেসাস

গ্যাব্রিয়েল জেসাস একজন প্রতিভাধর এবং বহুমুখী খেলোয়াড় যা একাধিক আক্রমনের জায়গার মধ্যে খেলতে পারেন।তিনি একজন ফরোয়ার্ড হিসাবে অথবা একটি আক্রমণকারী মিডফিল্ডার হিসাবে,  আউট স্ট্রাইকার হিসাবে, একজন উইঙ্গার অথবা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলে থাকেন।

জেসাস তাঁর গতি, কারিগরি দক্ষতা, ড্রিবলিং ক্ষমতা, সৃজনশীলতা, ফিনিশিং টাচ, মুভমেন্ট এবং খেলার ধরনের জন্য বিখ্যাত। তিনি ম্যানচেস্টার সিটির একটি সফল খেলোয়াড়। এবারে সফল ফুটবল মরশুম শেষ করেছেন তিনি। এবছর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ২৯ ম্যাচে ১৩টি গোল করেন। কনমেবল বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ার-এর মধ্যে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন জেসাস। ১০ ম্যাচে ৭টি গোল আছে তাঁর।

তার প্রতিভা এবং ক্ষমতা ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপে ব্রাজিলের পক্ষে সহায়ক হয়ে উঠবে।ভাল লভ্যাংশ দেবে বিশ্ব কাপে তাঁর প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য জেসাসের সামনে বড় সুযোগ তৈরি হতে চলেছে।

এক নজরে গ্যাব্রিয়েল জেসাস

পুরো নাম- গ্যাব্রিয়েল জেসাস       

জন্মস্থান- সাও পাওলো

জন্ম- ৩০ এপ্রিল,১৯৯৭    

উচ্চতা- ৫ফুট৯ইঞ্চি

ক্লাব-ম্যাঞ্চেস্টার সিটি      

জার্সি নম্বর-৯    

নেইমার

নেইমার মূলত একজন সেন্ট্রাল স্ট্রাইকার। দ্বিতীয়ত, তিনি একজন স্ট্রাইকার, উইঙ্গার বা মাঝে মাঝে আক্রমণকারী মিডফিল্ডার হিসেবে খেলে থাকেন। নেইমারের মূল বৈশিষ্ট্য হল তাঁর সৃজনশীলতা, দৃষ্টি, ক্ষণস্থায়ী, ফিনিশিং টাচ , ড্রিব্লিং, ফিন্টস এবং টেকনিক, যা সবদিক থেকেই বিদ্যুতের ঝলকানির মতো এবং বিস্ফোরক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

তার ড্রিবলিং দক্ষতা, কৌশল এবং খেলা তৈরি করার ক্ষমতা স্বদেশী রোনাল্ডিনহোকে মনে করিয়ে দেয়। স্বাভাবিকভাবেই ডান পায়ে খেলে থাকলেও, তিনি উভয় পায়ে খেলার জন্য পারদর্শী।  তবে তাঁর বড় দিক হল খেলার মধ্যে উপর থেকে ভেসে আসা বল মাথা দিয়ে গোলের ভিতর পাঠানোর অসামান্য দক্ষতা, পাশাপাশি ফ্রি-কিক থেকে গোল করার কৌশল এবং পেনাল্টি নেওয়া। যা ব্রাজিল দলের কাছে অত্যন্ত কার্যকর হয়ে উঠবে। নেইমার ব্রাজিলের হয়ে ৮৩ ম্যাচে ৫৩টি গোল করেছেন।

এখন দেখার বিষয় যে ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপে তাঁর গোল করার ক্ষিদে কতটা সক্রিয় থাকবে এবং কত সময় তিনি মাঠে নিজের সক্ষমতাকে জারি রাখতে পারবেন, এর উপর নির্ভর করছে এবার ব্রাজিল দলের ভাগ্য।

এক নজরে নেইমার

পুরো নাম- নেইমার 

জন্মস্থান- মোগি দাস ক্রুজেস

জন্ম- ৫ ফেব্রুয়ারি,১৯৯২  

উচ্চতা- ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি

ক্লাব- প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন       

জার্সি নম্বর-১০

Published on: জুন ৩, ২০১৮ @ ২৩:১৩   

 

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 1 = 3