১০ বছর পর ফের কলকাতায় হতে চলেছে “ইন্ডিয়ান ভেটেরিনারি কংগ্রেস”-বেরিয়ে আসতে পারে প্রাণী সংক্রান্ত বহু প্রশ্নের উত্তর

দেশ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা- ডা. সৌমিত্র পন্ডিত

Published on: জানু ২৪, ২০১৯ @ ২০:৪৭

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২৪ জানুয়ারিঃ এই তো সেদিনের ঘটনা- কথাগুলো ঘুরে ফিরে মনে পড়ছিল সালটা ২০০৮। কিভাবে ১০টি বছর পার হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। সেবারও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদের হাট বসেছিল। সারা দেশের নানান প্রান্তের ছাত্র-শিক্ষক-বিজ্ঞানীরা এসেছিলেন যোগ দিতে “অষ্টম ইন্ডিয়ান ভেটেরিনারি কংগ্রেস”এ। পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য  বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় ও ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অফ ভেটেরিনারি রিসার্চ (IAAVR) -এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল “XV-Annual Conference of IAAVR and National Symposium on- “Public Private Partnership (PPP)-in Veterinery Research and Education Sector”. আমার বেশ মনে আছে কারণ এটাই ছিল আমার প্রাণী চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পর্বের প্রথম সম্মেলন বা সমাবেশ বা কংগ্রেস যাই বলুন। ফের ১০ বছর পর আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নব নির্মিত প্রেক্ষগৃহে ১৯তম ইন্ডিয়ান ভেটেরিনারি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

আবারও শিরোণামে বিশ্ববিদ্যালয়- কারণটা বলি বর্তমান গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রাণীপালনের গুরুত্ব অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। কিছুদিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রেক্ষাগৃহে দুটি বড় মাপের সম্মেলন সাফল্যের সাথে সারা বিশ্বের দরবারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়ানুগ ক্রিয়াকলাপ তুলে ধরতে পেরেছে। প্রাণী-মৎস্য বা দোহ বিজ্ঞান প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে। মাংস-মাছ-ডিম-দুধের উৎপাদন নয় তার সঠিক সংরক্ষণ করা যায় তাও জনসমক্ষে তুলে ধরা হয়। অর্থাৎ এই বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে যে একটু আলাদা তা আর একবার তুলে ধরার সময় এসেছে। তাই তো আগামী ১-২রা ফেব্রুয়ারি সারা দেশের প্রায় ৫০০ জনেরও বেশি ছাত্র-শিক্ষক-গবেষকের সমাগম হতে চলেছে। যেখানে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হল- “innovative progress in animal health and production for safe and secured food under one health perspective” অর্থাৎ এক স্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত খাদ্যের জন্য পশু স্বাস্থ্য এবং উৎপাদন উদ্ভাবনী অগ্রগতি।

প্রাণীপালনের সাথে সাথে তাদের যে রোগ ব্যাধি হচ্ছে তার প্রতিকারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে কিভাবে তাদের উৎপাদন বাড়ানো যাবে এবং একই স্বাস্থ্য তথা প্রাণী ও মানুষের স্বাস্থ্যের যে ধারা যে সকল রোগব্যাধী উভয়কে ক্ষতি করে সেগুলি কিভাবে প্রতিকার করা যায় এবং পরিবেশকে রোগমুক্ত করে বাসযোগ্য করা যায় সেখানে রোগের ঝুঁকি থাকবে না। এছাড়াও প্রাণীবিজ্ঞানে যে সকল যুগান্তকারী আবিষ্কার বা নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ হচ্ছে এবং আগামিতে হবে তা এই সম্মেলনে আলোচিত হবে। ভারতবর্ষের নানা প্রান্তে যে সকল গবেষণা চলছে তার ফল খামারি বা প্রাণীপালনের দোরগোড়ায় পৌঁছনোর লক্ষ্যে এই সম্মেলন।

বর্তমানে মানুষের মনে যে মাংস খাওয়ার জন্য ভীতির সঞ্চার হয়েছে অর্থাৎ ভাগাড় কাণ্ডের পর যে মাংসের প্রতি অনীহা জন্মেছে তা কিছুটা কাটানো গেলেও সম্প্রতি সারমেয় বা কুকুর ছানাকে পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা সারা দেশের মানুষকে চমকে দিয়েছে। তার কারণ- আগামীতে এই আচরণ কিভাবে বন্ধ করা যায় তা নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে এই সম্মেলনে।সম্মেলনের আহ্বায়ক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শুভাশীষ বটব্যাল এবং সম্মেলনটি যে মানুষটির অনুপ্রেরণায় হতে চলেছে তিনি হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য অধ্যাপক পূর্ণেন্দু বিশ্বাস। দু’জনে খুবই আশাবাদী যে এই আগত সম্মেলন বিগত দুটি সম্মেলনের মতোই মানুষের মন ছুঁয়ে যাবে এবং যে দিকগুলি এই সম্মেলনে আলোচনা হওয়ার কথা তা বর্তমান পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখে অর্থাৎ প্রানীবিজ্ঞানের নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তিগুলি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার, চিকিৎসা বিজ্ঞানের তুলে ধরার মধ্য দিয়ে -মাংস উৎপাদন প্রক্রিয়াকরণ স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাদ্যের সুরক্ষা প্রভৃতি বিষয়গুলি আলোচিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। বর্তমানে মানুষের মধ্যে অসিহষ্ণুতা যে হারে বেড়ে চলেছে এবং প্রাণীদের প্রতি যে অত্যাচার হচ্ছে তা কিভাবে বন্ধ করা যায় বা মানুষকে কিভাবে সচেতন করা যায় তাও আলোচিত হতে পারে এই সম্মেলনে।

Published on: জানু ২৪, ২০১৯ @ ২০:৪৭


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 2 = 2