সাঁকরাইলের ডাহি গ্রামে এ কোন জন্তুর পায়ের ছাপ, পাতা হল খাঁচা

এসপিটি এক্সক্লুসিভ দেশ বন্যপ্রাণ রাজ্য
শেয়ার করুন

শনিবার রাতে ডাহি গ্রামে একজনের বাড়ির গোয়ালঘরে থাকা সাতটি ভেড়া আর্তনাদ শুরু করে।

এর আগে বন দফতরের আধিকারিকরা পায়ের ছাপ দেখে বলেছিলেন প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি হায়না অথবা নেকড়ের।

সংবাদদাতা-বাপ্পা মন্ডল
ছবি-সুদীপ্ত মাহাত

Published on: জুলা ২৮, ২০১৯ @ ১৮:১১

এসপিটি নিউজ, সাঁকরাইল, ২৮জুলাই: গভীর রাতে ভয়াবহ গর্জন। ঘর থেকে বেরিয়ে দেখা যায় গোয়াল ঘরে থাকা সব কটি ভেড়া মরে পড়ে আছে। তাদের কারও শরীর অর্ধেক খাওয়া, কারও খুবলে খাওয়া আবার কারুকে মেরে কামড়ে শরীর থেকে সব কিছু বের করে দিয়েছে।পাশে দেখা গেছে পায়ের ছাপ। যা দেখে ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইলের ডাহি গ্রামের মানুষ রীতিমতো আতঙ্কিত। সবার মুখে শুধু একটাই প্রশ্ন- তবে কি এক বছর আগের লালগড়ের সেই বাঘের আতঙ্কই ফিরে এল?এ কোন জন্তুর পায়ের ছাপ? ইতিমধ্যে জঙ্গলে খাঁচাও পেতেছে বন দফতর।

লালগড়ের সেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার

এইসব নানা প্রশ্ন এখন তাড়া করে বেড়াচ্ছে সাঁকরাইলের মানুষজনকে। কারণ, ঠিক এক বছর কয়েক মাস আগে ঠিক এভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছিল গোটা লালগড়ে।সেদিনও ঠিক একইভাবে গরু, ছাগল, ভেড়ার উপর হামলা হয়েছিল। তাদের ছিঁড়ে-খুবলে খেয়েছিল সেই হিংস্র জন্তুটি। আতঙ্কে বন্ধ হয়ে গেছিল একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। অবশেষে সেই জন্তুটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার হিসেবে সকলে জানতে পারে। এরপর তাকে ধরার নানা চেষ্টা চালিয়েও বাঘটিকে ধরতে ব্যর্থ হয় বন দফতর। অবশেষে কৌশলে বাঘটিকে হত্যা করা হয়। যারা এই হত্যালীলা চালায় তাযে আশ্চর্যজনকভাবে রক্ষাও পেয়ে যায়। এমন অভিযোগ তুলে ক্ষোভও প্রকাশ করেছিল বেশ কয়েকটি পশুপ্রেমী সংগঠন।

সবাই মনে করছে জন্তুটি বাঘ, বন দফতর বলছে না

যাইহোক সেদিনের সেই আতঙ্ক কি তবে ফের ফিরে এল এবার সাঁকরাইলে? এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, এখনও পর্যন্ত জন্তুটির বিষয়ে কেউই সেভাবে সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। বন দফতরের কাছেও সেভাবে কিছু আসেনি। যা দেখে তারা বলতে পারে যে জন্তুটি সত্যিই কি। শুধু পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। সাধারণ মানুষের এ বি্ষয়ে সেভাবে ধারণা না থাকায় তারা অবশ্য পায়ের ছা্পটিকে ‘বাঘ’ বলে জিগির তুলে খামোখা আগে থেকে একটা আতঙ্ক তৈরি করা শুরু করে দিয়েছে। এর আগে বন দফতরের আধিকারিকরা পায়ের ছাপ দেখে বলেছিলেন প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি হায়না অথবা নেকড়ের।তবে এখনও পর্যন্ত ফরেন্সিক রিপোর্ট এসে না পৌঁছনোয় সঠিক তথ্য এখনও জানা যায়নি। যার ফলে সেই বাঘের আতংকই তাড়া করে চলেছে সাঁকরাইলবাসীকে।

গভীর রাতে ভেড়ার আর্তনাদ

জানা গেছে, শনিবার রাতে ডাহি গ্রামে একজনের বাড়ির গোয়ালঘরে থাকা সাতটি ভেড়া আর্তনাদ শুরু করে। ঘুম ভেঙে যায় সকলের। ছুটে গিয়ে বাড়ির লোকজন তাদের গোয়ালঘরের দিকে তাকাতেই চোখ কপালে উঠে যায়। সেখানে একটিও ভেড়া নেই। কিছুটা দূরে কয়েকটি ভেড়া ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পরে ছটফট করছে। কিছু সময়ের মধ্যে সেগুলি মারা যায়। তাদের কারও শরীরের মাংস খুবলে নিয়ে গেছে। আবার কারও গলায় কিংবা পেটে কামড় লাগিয়েছে।জঙ্গলের দিকে চলে গেছে রক্তের দাগ। মাটিতে বড় বড় পায়ের ছাপ। দেখে মনে হবে যেন বাঘের পায়ের ছাপ।

রাত জেগে চলছে পাহারা

ডাহিগ্রামের মানুষের দাবি- তারা নাকি শনিবার রাতে জঙ্গলের ভিতর থেকে অজানা জন্তুর বিকট আওয়াজ শুনতে পেয়েছে। সেই আওয়াজ শোনার পর থেকে কেউ তারা চোখের পাতে এক করতে পারেনি। সকলেই বাড়ির সামনে বসে রাত পাহারা দিয়েছে। সকলের ধারণা লালগড়ের সেই আতঙ্কই বোধ হয় ফিরে এল। ডাহি গ্রামের বাসিন্দা সুবল মাহাত বলেন-‘অজানা জন্তুটি বেশ বড় ধরনের হবে। জঙ্গলে পায়ের ছাপ দেখে তেমনই মনে হয়েছে। আর সেটা যদি বাঘ হয় অবাক হব না।’

Published on: জুলা ২৮, ২০১৯ @ ১৮:১১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

67 + = 76