মমতার প্রশ্ন-গদা নিয়ে কার মাথা ফাটাবেন, তরোয়াল নিয়ে কার গলা কাটবেন- জবাবে দিলীপ কি বললেন জানেন

রাজ্য লোকসভা ভোট 2019
শেয়ার করুন

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন-“ধর্ম নিয়ে আমরা রাজনীতি করি না। প্রয়োজন পড়ে না।যতসব সৃষ্টিছাড়া, বাঁধনহারা, দাঙ্গাবাজ।”

তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে দিলীপ ঘোষ বলেন-“ কেউ বাধা দিলে এর ফল ভুগতে হবে। মুখমন্ত্রীর ভয় হচ্ছে তাই বন্ধ করতে চাইছেন।

সংবাদদাতা-বাপ্পা মন্ডল

ছবি-বাপন ঘোষ

Published on: এপ্রি ১৩, ২০১৯ @ ২৩:২২

এসপিটি নিউজ, শিলিগুড়ি ও মেদিনীপুর, ১৩ এপ্রিলঃ রামনবমীতে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের রোড-শোয়ে গদা-তরোয়াল হাতে নেওয়া নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়িতে বাঘাযতীন পার্কে এক জনসভায় দাঁড়িয়ে বিজেপি ও দিলীপ ঘোষের নাম না করেই প্রশ্ন তোলেন-গদা নিয়ে কার মাথা ফাটাবেন? তরোয়াল নিয়ে কার গলা কাটবেন? মুখ্যমন্ত্রী যখন এমন প্রশ্ন তুলছেন তখন দিলীপ ঘোষ নিজের চিরাচরিত ভঙ্গিতেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নকে নিজের মতো করেই জবাব দিলেন।তিনিও নাম না করে বললেন-অনেকেই তাঁকে ভয় পান। এজন্য তাঁর কি বা করার আছে। যারা ভয় পান তাদের তাঁর দিকে না তাকালেই হল। সেই সঙ্গে দিলীপের পাল্টা কটাক্ষ- মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বললেন

1) আজ শিলিগুড়িতে বাঘাযতীন পার্কের জনসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে বিজেপি ও দিলীপ ঘোষ সম্পর্কে তাঁর ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন-“ধর্ম মানে হিংসা নয়। ধর্ম মানে মানবতা। কিন্তু ইদানীং আমরা লক্ষ্য করছি ধর্মের নামে সৃষ্টি ছাড়া, বাঁধনহারা, অত্যাচারী সমাজকে কলঙ্কিত করার জন্য এক নতুন ধর্মের আমদানি করেছে। তারা এই মিথ্যে ধর্মের আমদানি করে যা বাংলার কালচারে মিল খায় না, বাংলার সংস্কৃতিতে মিল খায় না, ভারতের সংস্কৃতিতে মিল খায় না তারা একে অপরের উপর অত্যাচার করছে। সন্ত্রাস করছে।”

“এটা তো বাংলার নির্বাচন নয় এটা দিল্লির নির্বাচন। এখানে অনেক নতুন ছেলে-মেয়ে এসেছে। তাদের তো মাই শিখিয়ে দিই নি। আজ একটি দল যারা পাঁচ বছর দেশ চালালো তাদের ভ্রস্টাচার, অন্যায়, অত্যাচার, দুরাচার দেশে সর্বনাশ করে চলেছে। আজকে তাদের কৈফয়ত দিতে হবে।”

2) মমতা বলেন- “ধর্মকে আমরা সম্মান করি। ধর্মকে নিয়ে আমরা রাজনীতি করি না। প্রয়োজন পড়ে না। আমি শুনলাম কেউ তরোয়াল নিয়ে কেউ গদা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন ভোট চাইতে। রাজনীতির সঙ্গে কার সম্পর্ক। গদা নিয়ে কার মাথা ফাটাবেন? আর তরোয়াল নিয়ে কার গলা কাটবেন?” এরপরই মমতার হুঁশিয়ারি-” মনে রাখবেন। এটা বাংলা। বাংলায় এসব করে ভোট হয় না।এসব কারা করবে যারা ত্যাগ করবে, যারা তিতিক্ষা করবে, যাদের মধ্যে পবিত্রতা থাকবে। এরা কারা সৃষ্টিছাড়া বাঁধনহারা দাঙ্গাবাজ।”

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ যা বললেন

3) মেদিনীপুর লোকোসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী খড়্গপুরের তালবাগিচা ও সেটেলমেন্ট এলাকায় রামনবমী উৎসবে সামিল হন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সকাল থেকে দুপুর খড়্গপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে দেখলেন রামনবমী পুজো। বিকেলে মেদিনীপুরের টিভি টাওয়ার মাঠ থেকে বাইক মিছিলে যোগ দেন। একটি ঘোড়ার গাড়িতে দাঁড়িয়ে রোড-শো এর আদলে কখনো হাত নেড়ে, কখনো প্রণাম জানিয়ে নিজের ভোট প্রচারও সেরে নেন তিনি।

4) মিছিলের ঝাঁঝ বাড়াতে তাঁকে বলতে শোনা যায়-“নির্বাচন আসবে, অন্য অনেক কিছু আসবে- এরজন্য উৎসব বন্ধ করা যায় না। যখন নির্বাচন কমিশন ছিল না, রাজনৈতিক দল ছিল না এরও আগে থেকে রামনবমী উৎসব পালিত হয়ে আসছে। ”

5) দিলীপ ঘোষ বলেন-” রামন্দির আন্দোলনের আবেগ , পরম্পরার ফলে বাংলাতেও রামভক্তির প্রচার বেড়েছে। রাম সকলের।  চাপে পড়ে এখন তৃণমূলকেও রামনবমী পালন করতে হচ্ছে। দু’দিন পরে সিপিএমও করবে। যে সরকার বাধা দেবে সেই সরকার আর থাকবে না।”

6) শনিবার খড়্গপুরের তালবাগিচায় রামনবমীর পুজোর সময় অস্ত্র হাতে তুলে নিলেন দিলীপ ঘোষ।  তা চারদিকে ঘুরিয়ে দেখালেনও। কর্মী-সমর্থকদের আবদার মেটাতে ছবিও তুললেন।  ভোটের প্রাক্কালে এভাবে অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়া যায় কিনা এ প্রশ্ন শুনে তাঁর ঝাঁঝালো জবাব- ” আখড়া কমিটিতে এসে খালি রসগোল্লা খাব আর হাতিয়ার ধরব না তা হয় নাকি ? তবে অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় ঘোরাফেরা করা বেআইনি। অনুমতি সাপেক্ষে আখড়ার শোভাযাত্রায় অস্ত্রের ব্যবহার চলে আসছে। প্রতিবছর রামনবমী শোভাযাত্রায় যেভাবে অস্ত্র থাকে এবারেও তা থাকবে।   প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই সব হচ্ছে।”

তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে দিলীপ ঘোষ বলেন-” কেউ বাধা দিলে এর ফল ভুগতে হবে। মুখমন্ত্রীর ভয় হচ্ছে তাই বন্ধ করতে চাইছেন। ”

Published on: এপ্রি ১৩, ২০১৯ @ ২৩:২২


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − = 10