ভারতীয় সংবাদপত্রগুলিতে অনেকের চাকরি যেতে পারে, কমতে পারে বেতন-রয়টার্স

অর্থ ও বাণিজ্য কোভিড-১৯ দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

  • ইতিমধ্যে অষ্ট্রেলিয়ায় একাধিক সংবাদপত্র তাদের মুদ্রণ সংস্করণ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা এখন অনলাইন সংস্করনের দিকে জোড় দিয়েছে।
  • বিজ্ঞাপন না আসায় প্রভাব পড়েছে সংবাদপত্রগুলির উপর। বাধ্য হয়ে তারা তাদের কর্মী সংকোচন এবং বেতন হ্রাসের দিকে ঝুঁকেছে।
  • ভারতে শীর্ষ সংবাদপত্র গ্রুপের মধ্যে দ্য টাইমস গ্রুপ এবং এবিপি গ্রুপ থেকে প্রকাশিত কয়েকটি শীর্ষ দৈনিকে বিজ্ঞাপনের রাজস্ব অস্বাভাবিক হারে কমে গিয়েছে বর্তমানে।
  • ভারতীয় কোম্পানিগুলি গত বছর বিজ্ঞাপনের পিছনে প্রায় 9 বিলিয়ন ডলার খরচ করেছিল যার মধ্যে তারা প্রিন্ট মিডিয়ায় বিজ্ঞাপ্নে খরছ করেছিল 2.6 বিলিয়ন ডলার।

Published on: এপ্রি ১৭, ২০২০ @ ২১:০৩

এসপিটি নিউজ ডেস্ক:   করোনাভাইরাস নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্র তাদের নিজস্ব বিভাগকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিভাবে তারা ঘুরে দাঁড়াবে তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে চিন্তাভাবনা। কিন্তু যারা নিজের জীবন বাজি রেখে দিন-রাত এক করে কাজ করে চলেছেন সংবাদপত্রের সেইসব প্রতিনিধিদের ভবিষ্যৎ কি আদৌ সুরক্ষিত? এই প্রশ্ন কিন্তু আজ উঠতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে -যেখানে বলা হয়েছে ভারতীয় একাধিক সংবাদপত্রে অনেকেরই চাকরি যেতে পারে, এমনকি কমতে পারে বেতনও। তাও আবার নামিদামি সংবাদপত্রগুলিতে। তাহলে ছোট মাপের সংবাদপত্রগুলির কি অবস্থা হতে পারে- বাড়ছে আশঙ্কা।

সমস্যার মুখে সংবাদপত্রগুলি

করোনাভাইরাস মহামারী সংবাদপত্রগুলিকে সমস্যার মুখে ঠেলে দিয়েছে। ইতিমধ্যে অষ্ট্রেলিয়ায় একাধিক সংবাদপত্র তাদের মুদ্রণ সংস্করণ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা এখন অনলাইন সংস্করনের দিকে জোড় দিয়েছে। তবে ভারতীয় সংবাদপত্রগুলির সকলেরই অনলাইন সংস্করণ রয়েছে। তবে এখানে মুদ্রণ সংস্করণ বন্ধ করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সংবাদপত্রগুলির গ্রাহক সংখ্যা যে কমেছে তা বলাই বাহুল্য। কেননা সংক্রমণের জেরে অনেকেই পেপার নেওয়া বন্ধ রেখেছে লকডাউনের মধ্যে। তার উপর বিজ্ঞাপনেও টান পড়েছে। অনেকেই টাকা দিতে পারছে না। ফলে বাধ্য হয়ে বিজ্ঞাপন আসছে না। আর এর প্রভাব পড়েছে সংবাদপত্রগুলির উপর। বাধ্য হয়ে তারা তাদের কর্মী সংকোচন এবং বেতন হ্রাসের দিকে ঝুঁকেছে।

শীর্ষ সংবাদপত্রগুলি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে

  • রয়টার্স-এর রিপোর্ট বলছে- ভারতে শীর্ষ সংবাদপত্র গ্রুপের মধ্যে দ্য টাইমস গ্রুপ এবং এবিপি গ্রুপ থেকে প্রকাশিত কয়েকটি শীর্ষ দৈনিকে বিজ্ঞাপনের রাজস্ব অস্বাভাবিক হারে কমে গিয়েছে বর্তমানে।লকডাউনে সংবাদপত্রগুলিতে এর ফলে বিজ্ঞাপনের ব্যয় আরও হ্রাস পাবে বলে জানিয়েছেন তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।বাংলা ভাষায় প্রকাশিত শীর্ষ সংবাদপত্র আনন্দবাজার পত্রিকার প্রকাশকারী এবিপি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী ডি ডি পূর্বকায়স্থ উদ্বেগ প্রকাশ করে রয়টার্সকে জানান- “আমাদের মুদ্রণে বিজ্ঞাপনের যা আয়, তা আমাদের মোট আয়ের 80 থেকে 85 শতাংশ প্রায় শূন্যে নেমে গিয়েছে এই লকডাউন পিরিয়ডে।
  • প্রায় একই ছবি উঠে এসেছে টাইমস গ্রুপের ক্ষেত্রেও। সেখানেও দেখা গিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া, বিশ্বের বৃহত্তম ইংরাজি ভাষার দৈনিক সংবাদপত্র তাদের কাগজের পাতার সংখ্যা কমিয়ে 16 পৃষ্ঠা করেছে। কোম্পানিগুলির বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আগের 40 পাতার কাগজ তারা এখন এভাবেই সঙ্কুচিত করে এনেছে।এই সপ্তাহে টাইমস তার রবিবারের ম্যাগাজিনের টিমের কিছু কর্মীকে ছেড়ে দিয়েছে। দুই সাংবাদিক রয়টার্সকে জানিয়েছে যে আরও অনেকের চাকরি চলে যেতে পারে বলে কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।”ভয় অনেকের মধ্যেই তাড়া করে বেড়াচ্ছে।কি হবে কেউ জানে না।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাইমস গ্রুপের এক বিজনেস সাংবাদিক এমনই আশঙ্কা করেছেন।
  • রয়টার্সের এক অভ্যন্তরীণ মেমো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার অপর শীর্ষস্থানীয় প্রকাশক হিন্দুস্তান টাইমস বলেছে যে এটি কোম্পানির পারফরম্যান্সের সাথে যুক্ত ভেরিয়েবল বেতনের 5 থেকে 15 শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
  • 88 বছরের প্রাচীন সংবাদপত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এই মাসে কিছু কর্মীর বেতন 30শতাংশ কাটার কথা ঘোষণা করেছেন।পরে আরও কিছু ছাড়তে হতে পারে বলে তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।”পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে তবে বেতন কেটে নেওয়ার এই সংকটটি আমাদের পক্ষে যথেষ্ট হবে না,” রয়টার্সের দেখানো একটি অভ্যন্তরীণ স্টাফের মেমো এমনটাই বলেছে।
  • দৈনিক ভাস্কর গ্রুপ, যে হিন্দি সংবাদপত্রটি ভারতে সর্বাধিক প্রচারিত হয়েছে, তারা বলেছে যে তারা প্রায় 1000 কর্মচারীদের বা তাদের 12% কর্মীর জন্য বেতন পুনর্গঠন করেছে, এই গ্রুপের কার্য সম্পাদনের উপর নির্ভরশীল একটি ভেরিয়েবল উপাদান প্রবর্তন করে।গ্রুপের এইচআরডি প্রধান রবি গুপ্ত বলেছেন, “এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।”

পিচ ম্যাডিসনের বিজ্ঞাপনের প্রতিবেদনে

এই বছর পিচ ম্যাডিসনের বিজ্ঞাপনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় কোম্পানিগুলি গত বছর বিজ্ঞাপনের পিছনে প্রায় 9 বিলিয়ন ডলার খরচ করেছিল যার মধ্যে তারা প্রিন্ট মিডিয়ায় বিজ্ঞাপ্নে খরছ করেছিল 2.6 বিলিয়ন ডলার।প্রায় এক হাজার প্রকাশকের প্রতিনিধিত্বকারী ইন্ডিয়ান নিউজপেপার সোসাইটি অনুমান করেছে যে আগামী ছয় থেকে সাত মাসে এই শিল্পটি প্রায়  2 বিলিয়ন ডলার হারাতে পারে। এটি সরকারি বিজ্ঞাপনের হারে 50% বৃদ্ধির মাধ্যমে ফেডারেল সমর্থন চেয়েছে।

করোন ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ভারত এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী লকডাউন বাড়িয়েছে। এ পর্যন্ত 12,000 এরও বেশি সংক্রামিত হয়েছে এবং 400 জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভারত সরকার জানিয়েছে-২০ শে এপ্রিলের পরে তারা কয়েকটি শিল্প খোলার অনুমতি দেবে।

Published on: এপ্রি ১৭, ২০২০ @ ২১:০৩


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

62 − 61 =