ভারতীয় পশু চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চাকরির ” নিয়োগপত্র ” পেয়ে চমকে গেলেন বেকার যুবক-এ কেমন ‘ আচ্ছে দিন ‘

দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

এসপিটি নিউজ, বারাকপুর, ১৪ অক্টোবরঃ একজন বেকার যুবক সরকারি চাকরির আবেদন করে তাকে যে শেষে থানা-পুলিশ-আদালত করতে হবে তা ভাবতেই পারেনি সে। বারাকপুর নোনাচন্দনপুকুরের বাসিন্দা রাহুল কুমার সাহা ভারতীয় পশু চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নামে একটি “নিয়োগ পত্র” আসে।যা দেখে সন্দেহ য়। তিনি তখন বিশিষ্ট আইনজীবী এবং তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট তপাদারের দ্বারস্থ হন। তিনি ব্যতিগতভাবে ইন্ডিয়ান ভেটিরিনারি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের এক কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন ওই নিয়োগপত্র জাল। যা শুনে চমকে যান তিনি। এরপরই টিটাগড় থানায় এফআইআর করেন ওই প্রতারিত যুবক।

তৃণমূল যুব নেতা সম্রাট তপাদার অভিযোগ করেন, “বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রের সরকার প্রতি নিয়ত কিভাবে মানুষের ‘আচ্ছে’ দিনের পরিবর্তে সর্বনাশ ডেকে আনছে এই ঘটনা তার আরও এক বড় প্রমাণ। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের পিছনে সমানে লেগে আছে বিজেপি সরকার। কিছু হলেই আমাদের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে অথচ একটি কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরের অফিসের নামে সরকারি প্রতীক ব্যবহার করে একজন ডিরেক্টরের সাক্ষর জাল করে জাল নিয়োগপত্র দিয়ে বেকার যুবকদের প্রতারিত করা হচ্ছে এর নাম কি আচ্ছে দিন?” রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারে বলে আসছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কিভাবে মানুষকে ঠকিয়ে চলেছে, সেটা কত বড় সত্যি এই ঘটনা তার আরও একটা বড় প্রমাণ।

রাহুল সাহা রবিবার বিকেলে টিটাগড় থানায় গিয়ে এই ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, “২০১৮ সালে তিনি কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে আইভিআরআই দফতরে টেকনিশিয়ান পদের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পরে কোনও জবাব না পেয়ে আশা ছেড়ে দেন। কিন্তু গতকাল আচমকা তার বাড়িতে স্পিড পোস্ট মারফত একটি চিঠি আসে। খামটি খুলে দেখেন ওই সরকারি দফতরে চাকরির সেই আবেদনের ভিত্তিতে নিয়োগপত্র। যা পুরোটাই অদ্ভুতভাবে হিন্দিতে লেখা। যেখানে একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। যেখানে ফোন করলে তার ফোনে এসএমএস মারফত একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যেখানে তাকে নগদ ২৪ হাজার ৭০০ টাকা সিকিউরিটি ডিপোজিট হিসেবে পাঠাতে হবে। এটা তাকে ভাবিয়ে তোলে। কারণ, কোনও সরকারি চাকরির নিয়োগপত্রে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলা হয় না। এরপর আমি আইনজীবী সম্রাট তপাদারের দ্বারস্থ হই।খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হই যে নিয়োগপত্রটি সঠিক নয়। জাল। এরপরই থানায় অভিযোগ করি।”

আইভিআরআই-এর কলকাতায় ইস্টার্ন রিজিওনাল অফিসের এক কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বলেন, আইভিআরআই-এর গ্রেটার নয়ডাতে কোনও অফিস নেই এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। তবে এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।

আইভিআরআই-এর আরও একজনকে ফোন করে জানা গেল, কলকাতার কারও নিয়োগপত্র আসবে ইংরেজিতে। সেটা এমন হিন্দিতে লেখা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। আর তাছাড়া সিকিউরিটি ডিপোজিট দেওয়ার ব্যাপারটা বোধগম্য হচ্ছে না।নিয়োগপত্রে ডিরেক্টর আর কে সিং-এর সাক্ষরটাও নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

এখন প্রশ্ন, তাহলে এর আগেও তো এমন নিয়োগপত্র আরও অনেকের কাছে পোঁছেছে। অনেকেই চাকরির জন্য হয়তো ওই টাকা জমাও দিয়ে ফেলেছে। তাদের কি হবে? তাছাড়া, একটা সরকারি দফতরের নাম করে অশোকস্তম্ভ ব্যবহার করে এমন কাজ করে যাচ্ছে কিভাবে? এর পিছনে কারা? এসব প্রশ্ন কিন্তু পুলিশকে ইতিমধ্যে ভাবিয়ে তুলেছে। শুরু করেছে তদন্ত।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − = 17