বিদেশি এয়ারলাইন কোম্পানিকে কলকাতায় স্বাগত জানাতে চায় পশ্চিমবঙ্গ, শুরু হল উদ্যোগ

Main দেশ বিদেশ বিমান ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জুলা ১২, ২০২২ @ ১১:৫৩
Reporter:Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১২ জুলাই: দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর কলকাতা। কিন্তু তবু এই বিমানবন্দর থেকে বহু বিদেশি এয়ারলাইন কোম্পানি তাদের বিমান চালায় না। বিদেশে যাওয়ার যাত্রীও এখানে কম নয়। এই বিষয়টিকে গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।এবার তাই তারা সমস্ত বিদেশি এয়ারলাইন সংস্থাগুলিকে কলকাতায় স্বাগত জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে। গতকাল রাজ্যের পর্যটন দফতরের সচিব ড. মোহনের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনগুলির। যেখানে হাজির ছিলেন TAFI, TAAI, AOC-র কর্তারা।

কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

উত্তর-পূর্ব ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, চীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই, আবু ধাবি ও দোহার উড়ানের জন্য কলকাতা বিমানবন্দর একটি প্রধান কেন্দ্র। বর্তমানে এটির নাম হয়েছে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিমানবন্দরটি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এয়ারপোর্ট কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল –এর দেওয়া শ্রেষ্ঠ উন্নত মানের বিমানবন্দর শিরোপা অর্জন করে।

যেসব এয়ারলাইন রয়েছে

বর্তমানে এখান থেকে দেশ-বিদেশের একাধিক বিমান চলাচল করে। যার মধ্যে আছে-এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া, এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, স্পাইস জেট, ভিস্তারা, অ্যালায়েন্স এয়ার, গো এয়ার, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ভুটান এয়ারলাইন্স, এমিরেটস এয়ারলাইন্স, ইতিহাদ এয়ারলাইন্স, ফ্লাইবিগ, কাতার এয়ারওয়েজ, থাই স্মাইল, শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইন্স, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স সহ আরও। তবে এখন ইউরোপ এমন কি এশিয়ার অন্যান্য বহু দেশের থেকে সরাসরি কোনও উড়ান কলকাতায় আসে না। যাত্রীদের সেখানে যাওয়ার জন্য যেতে হয় দিল্লি কিংবা মুম্বই।

প্রায় সমস্ত বিদেশি এয়ারলাইন কোম্পানিগুলিকে আমাদের কলকাতায় সমবেত করা

ট্রাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া বা টাফি’র চেয়ারম্যান (পূর্ব) অনিল পাঞ্জাবি এসপিটি-কে জানিয়েছেন- গতকাল পশ্চিমবঙ্গ সরাকের পর্যটন বিভাগের সচিব ড. মোহনের সঙ্গে তাদের একটি বৈঠক হয়েছে। আমাদের রাজ্য সরকার এই মুহূর্তে পর্যটনের প্রসারে প্রভূত কাজ করছে। নানা ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এই মুহূর্তে রাজ্যের লক্ষ্য হল, প্রায় সমস্ত বিদেশি এয়ারলাইন কোম্পানিগুলিকে আমাদের কলকাতায় সমবেত করা। দু’দিনের জন্য তাদের সঙ্গে রাজ্য কথা বলতে চায়। রাজ্য চাইছে যে কলকাতা থেকে সমস্ত বিদেশি এয়ারলাইন কোম্পানিগুলি তাদের পরিষেবা চালু করুক। এজন্য রাজ্য তাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আছে। ইতিমধ্যে বিদেশি কোন কোন এয়ারলাইন সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে তা নিয়ে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এই বৈঠকের পর আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় কলকাতায় তাদের নিয়ে একটি কনফারেন্স করাও হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে টাফি’র চেয়ারম্যান।

শুরু সঠিক উদ্যোগ

কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখন আরও উন্নত। কিন্তু সমস্ত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও এখান থেকে বিদেশি বহু এয়ারলাইন কোম্পানি বিমান পরিষেবা দেয় না। যাত্রী না হওয়ার কারণে অনেক বিদেশি এয়ারলাইন সংস্থা এখান থেকে বিদায় নিয়েছে। কিন্তু যাত্রী না হওয়ারও কারণ নেই। কারণ, অনেক যাত্রী এখান থেকে বিদেশ যায়। ইউরোপেও যান বহু মানুষ। শুধু কলকাতাই নয়- উত্তর-পূর্ব ভারতের মূল কেন্দ্র হওয়ায় অনেকেই এখানে চলে আসে। কিন্তু সরাসরি উড়ান না থাকার ফলে তারা প্রত্যেকেই দিল্লি কিংবা মুম্বই হয়ে বিদেশের গন্তব্যে রওনা হয়ে যায়। এই প্রসংগ তুলে টাফি’র চেয়রাম্যান অনিল পাঞ্জাবি বলেন- আমাদের এখানে সব কিছুই আছে। যেটা ছিল না তা হল সঠিক উদ্যোগ। পরিকাঠামো থাকা সত্তেও কেন চালু করা যাচ্ছে না এটা নিয়ে আমরা ভেবেছি। রাজ্যকে বুঝিয়েছি। রাজ্য সেটা গভীরভাবে উপলব্ধি করছে। তারা এখন চাইছে এখান থেকে বিদেশের সিরাসরি উড়ান চালু হোক।ইউরোপের একাধিক এয়ারলাইন কোম্পানিগুলির তালিকাও তৈরি হচ্ছে। প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলা হবে। আশা করছি, একটা ফলপ্রসূ দিক উঠে আসবে। উপকৃত হবেন যাত্রীরা।

পরিসংখ্যান বলছে

সূত্রের খবর, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের হিসাবে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মোট ২২ মিলিয়ন যাত্রীকে পরিষেবা দান করে। আগের বছর থেকে প্রায় ০.৬ শতাংশ যাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে এটি ভারতের পঞ্চম-ব্যস্ততম বিমানবন্দর। এর মধ্যে ১৯ মিলিয়ন অভ্যন্তরীন যাত্রী এবং ৩ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক যাত্রী ছিলেন। পরিবহন আগের বছরের থেকে ১.১ শতাংশ কমে বর্তমানে ১,৫৩,৪৬৮মেট্রিক টন হয়েছে।

Published on: জুলা ১২, ২০২২ @ ১১:৫৩


শেয়ার করুন