বিজেপি সরকারে এলে আমফানের দুর্নীতিগ্রস্তদের জেলে পাঠানো হবে-কাকদ্বীপে বললেন অমিত শাহ

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: ফেব্রু ১৮, ২০২১ @ ২১:৩৮

এসপিটি নিউজ, দঃ ২৪ পরগনা, ১৮ ফেব্রুয়ারি: কাকদ্বীপের জনসভায় দাঁড়িয়ে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজেপি-র সর্বভারতীয় নেতা অমিত শাহ।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করেই বলেছেন যে এ রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কিছুই করতে পারেনি। এখন বলছে ভোট দিতে পারবে না। আপনাদের আমি কথা দিচ্ছি- ভোটের দিন রাস্তায় তৃণমূল কংগ্রেসের একজন গুন্ডাও থাকবে না। একই সঙ্গে বলে যেতে চাই- এখানে বিজেপি সরকার গঠন হওয়ার পর আমরা আমফানের দুর্নীতির উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করে যারা টাকা খেয়েছে তাদের জেলে পাঠাবো।

কেন এই পরিবর্তন যাত্রা?

এদিনের সভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানালেন- “এই পরিবর্তন যাত্রা সেই পরিবর্তনের জন্য, যাতে মৎস্যজীবী ভাইদের তাদের নৌকা চালানোর জন্য কাউকে ঘুষ দিতে না হয়, জঙ্গলে আদিবাসীদের বেঁচে থাকার জন্য কাউকে কাটমানি দিতে না হয়, আমফানের ক্ষতিগ্রস্থদের অধিকার অন্য কেউ যেন নিয়ে না যায়, ফড়েরা নয় কৃষকরাই যেন তাদের ফসলের সঠিক মূল্য পান।”

সরকারি কর্মচারীদের কি সুরাহা হবে?

“তৃণমূল কংগ্রেস বাংলার অবস্থা খুবই খারাপ করে দিয়েছে। বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা এতটাই ভেঙে পড়েছে যে বাংলার কোনো সরকারি কর্মচারীরাই সপ্তম পে কমিশনের সুবিধা পান না।বাংলায় বিজেপি সরকার গঠন হলেই আমরা সপ্তম পে কমিশন বাস্তবায়ন করব।” বললেন অমিত শাহ।

বাধা হয়েছে কারা?

অমিত শাহ সিন্ডিকেটের কথা তুলে ধরে বলেন- “এই লড়াই আমাদের বুথ কার্যকর্তা আর তৃণমূলের সিন্ডিকেটের মধ্যের লড়াই। মোদিজি যে চাল ও আমফানের জন্য সহায়তা পাঠান তা মাঝপথ থেকে আটকে দেওয়া হয়। আপনাকে যদি সিমেন্ট কিনতে হয় তাহলে এরা সেটাকে ব্যয়বহুল বানিয়ে দেয়।এই সিন্ডিকেটের লোকেরাই মানুষকে সরাসরি সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত করে।”

পার্শ্ব-শিক্ষকদের কি বার্তা দিলেন?

পার্শ্ব-শিক্ষকদের কথা টেনে অমিত শাহ তাদের আশ্বস্ত করে বলেন- “বাংলার সমস্ত শিক্ষক ভাইদের বলতে চাই যে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরই আপনারা যাতে ন্যায্য সম্মান পান সেদিকে খেয়াল রেখে এক কমিটি গঠন করা হবে।” একই সঙ্গে সরকারি চাকরি নিয়ে বলেন- “সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ৩৩ শতাংশের বেশি করা হবে।”

মৎস্যজীবীদের কি সুবিধা পাবেন?

মৎস্যজীবীদের বিষয়ে বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন- “আমরা মৎস্যজীবীদের জন্য একাধিক প্রকল্প আনছি। ভারতীয় জনতা পার্টির বাংলায় সরকার তৈরি হওয়ার পর চার লক্ষ মৎস্যজীবীদের কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্পের মতো মৎস্যজীবী সম্মান নিধি নামে ৬ হাজার টাকা করে প্রদান করা হবে।মৎস্যজীবী প্রডিউস অর্গানাইজেশন গঠন করা হবে।এজন্য এক আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা হবে।”

দুর্যোগ মোকাবেলায় কি করা হবে?

“এই এলাকায় বহুবার ঝড়-দুর্যোগ আসে। আমি আজ এখানে আপনাদের বলে যেতে চাই যে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার তৈরি হওয়ার পর জিরো ক্যাজুয়ালিটি টাস্ক ফোর্স এই রাজ্যে আমরা তৈরি করবো। যাতে ঝড়ের সময় একজনেরও প্রাণ না যায়। এই দিকে মাথায় রেখে আমরা কাজ করবো। ” বলেন অমিত শাহ।

আমফানের দুর্নীতি গ্রস্তদের কি শাস্তি হবে?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন- “আমি আপনাদের এখানে বলে যেতে চাই যে আমফানের পর যে দুর্নীতি হয়েছে তা নিয়ে উচ্চ স্তরের তদন্ত করে লুঠেরাদের জেলের হাওয়া খাওয়াবো। মোদিজি ৩৫০০ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন কিন্তু কিছুই হয়নি। টিএমসি-র একটাই স্লোগান- ভাইপোর উন্নতি ঘটাও।  ভাইপোর উন্নতি ছাড়া তৃণমূলের সামনে অন্য কিছুই নেই।”

রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে কি বললেন অমিত শাহ?

“এখানে যে রাজনৈতিক হিংসা হয়েছে তাতে ভারতীয় জনতা পার্টির ১৩০জন কার্যকর্তা মারা গেছে। আমি বলে যাচ্ছেই এদের বলিদান ব্যর্থ হবে না। বাংলার মাটিতে পূর্ণ শক্তিতে পদ্ম ফুটতে চলেছে। আর যে সব গুন্ডারা মমতা দিদির অনুগত হয়ে লুকিয়ে আছে তাদের আমি হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে যাচ্ছি- যেখানে পারো লুকিয়ে থাকো। ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার তৈরি হলে পাতালে গিয়ে তোমাদের খুঁজে বের করে জেলের ভিতরে ঢুকিয়ে ছাড়বো।”

ভোট নিয়ে কি বার্তা দিলেন?

ভোট নিয়ে অমিত শাহ তৃণমূলকে সতর্ক করে দিয়ে মানুষকে আশ্বস্ত করে বলেন- “তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা বলছে নাকি তারা ভোট দিতে দেবে না। আমাকে আপনারা বলুন তো- আপনারা কি ভয় পাচ্ছেন। আপনারা কি মমতার গুন্ডাদের ভয় পাচ্ছেন? আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি- ভোটের দিন রাস্তায় তৃণমূলের একজন গুন্ডাকেও দেখতে পাবেন না।সোনার বাংলা তৈরি করতেই হবে।”

সরকারে এলে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কি করবেন?

শেষে রাজ্যকে পাঠানো অর্থের হিসেব দিয়ে অমিত শাহের বলেন- “মোদিজি অনেক অর্থ পাঠিয়েছে এ রাজ্যের উন্নয়নে। কিন্তু বাধা হয়েছে দিদির সিন্ডিকেট। কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার থাকার সময় এ রাজ্যে ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছিল। নরেন্দ্র মোদির সরকার পাঁচ বছরের জন্য ৩ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছে। আপনাদের গ্রামে কিছু উন্নয়ন হয়েছে? কোথায় গেল এই টাকা? এই টাকা ভাইপো আর তার গুন্ডা লোপাট করে দিয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার তৈরি হলে এসব দুর্নীতির আমরা তদন্ত করবো আর যারা বাংলার গরিবদের টাকা খেয়েছে তাদের আইনের হাতে সঁপে দেওয়ার কাজ বিজেপি সরকার করবে।”

Published on: ফেব্রু ১৮, ২০২১ @ ২১:৩৮


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 3 = 5