বাগদায় ৩ লক্ষ চাষির মাথায় হাত- কাঁটা তারের ওপারে ফসল তোলায় নিষেধাজ্ঞা

Main এসপিটি এক্সক্লুসিভ কোভিড-১৯ দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

  • বিএসএফ জানিয়ে দিয়েছে-কাঁটাতার পেরিয়ে এখন সেখানে ফসল তুলতে যেতে পারবে না কোনও চাষি।
  • আজ দুপুরে স্থানীয় বিধায়ক দুলাল বর ফোন করে সংবাদ প্রভাকর টাইমস-কে এই অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন- এ তো ভয়ংকর অবস্থা।

Published on: এপ্রি ১০, ২০২০ @ ১৮:২১

রিপোর্টার: অনিরুদ্ধ পাল

এসপিটি নিউজ, বাগদা, ১০ এপ্রিল: এ সত্যিই এক দুঃসময়। না হলে কেন এমন হবে? মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এখন রুটি-রুজিতে টান পড়েছে। জারি করা হয়েছে কড়া আইন। যেমনটা হয়েছে বাগদায়। সেখানে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে প্রতিদিন চাষিরা যান ক্ষেতের কাজ করতে। আজ সেই চাষিদের উপর জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে- কাঁটাতার পেরিয়ে এখন সেখানে ফসল তুলতে যেতে পারবে না। যা শোনার পর মাথায় হাত পড়েছে তিন লক্ষেরও বেশি চাষির।এই কাজে তাদের বাধা দিয়েছে বিএসএফের ৯৯ নম্বর ব্যাটেলিয়ন। স্থানীয় বিধায়ক দুলাল বর ফোন করে সংবাদ প্রভাকর টাইমস-কে এই অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন- এ তো ভয়ংকর অবস্থা।

বাগদার বিধায়ক দুলাল বর ক্ষোভে ফেটে পড়লেন

“এ তো ভয়ংকর দুঃসংবাদ। এখন ধান তোলার সময়। বাগদা বিধানসভা মূলতঃ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া। এখানে ফসলের জমি-জমা বেশিরভাগই রয়েছে কাঁটাতারের ওপারে। প্রতিদিনই বিএসএফের অনুমতি নিয়ে এখানকার চাষিরা সেখানে যায় ক্ষেতের কাজ সারতে। ৯২ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে ফসলের ক্ষেত। যেখানে ধান, সবজি থেকে শুরু করে ফুলের চাষও হয়। এখন সময় হয়েছে ধান তোলার।এই ধান এখন না তুললে সব পুড়ে খাক হয়ে যাবে। ক্ষেতের পর ক্ষেত জুড়ে আছে পটল। তাও যাবে সব নষ্ট হয়ে। এমনকী যে বিস্তীর্ণ এলা্কাজুড়ে ফুলের চাষ হয়েছে প্রচুর ফুল হয়েছে তাও সব পচে যাবে। এতে চাষিরা যে বিপুল পরিমান ক্ষতির মুখোমুখি হবে তা কিভাবে সামাল দেওয়া হবে, বলতে পারেন? এখনই এর বিহিত না হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর আকার নিতে বাধ্য হবে।” এ ভাবেই ক্ষোভ উগরে দেন বিধায়ক দুলাল বর।

অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে

বাগদার বিজেপি বিধায়ক দুলাল বর এই পরিস্থিতিতে সব ক্ষোভ উগরে দেন বিএসএফের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ- “বাগদায় বিএসএফের ৯৯ ব্যাটেলিয়ন থেকে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। তারা আজ সকাল থেকে কোনও চাষিকে কাঁটাতারের বেড়া পেরোতে দিচ্ছে না। ফলে বাগদা বিধানসভা এলাকার সিন্দ্রানী থেকে শুরু করে সুটিয়া পর্যন্ত ৯২ বর্গকিলোমিটার চাষের জমি এখন অসহায় অবস্থায় পড়ে আছে। সেখানে ফসল আজ রোদের তাপে পুড়তে শুরু করেছে। এখনই যদি এর বিহিত না করা যায় তাহলে চাষিদের সঙ্গে সব ফসল ছাড়খার হয়ে যাবে। তখন কিভাবে এর প্রতিকার করা হবে?”

বিধায়কের প্রস্তাব

“আমরা বুঝতে পারছি যে এখন দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। লকডাউনে ঘর ছেড়ে কেউ যাতে না বের হয় সেটাও দেখতে হবে। সবাইকে এই সময় সচেতন থাকতে হবে। দেশ বাঁচলে তবেই আমরা বাঁচব। কিন্তু দেশকে বাঁচাতে হলে দেশের মানুষকেও কিছু ভূমিকা পালন করতে হবে। এখন ধান তোলার সময়। তাই বিএসএফ একেবারে চাষিদের ফসল তোলায় নিষেধাজ্ঞা জারি না করে যদি সারা দিনে কয়েক ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন আর সেই সময় তারা যদি নির্দিষ্ট সংখ্যক চাষিদের সেখানে ফসল তোলার কাজের অনুমতি দেন তাহলে আইনও রক্ষা হবে আবার চাষিদের কাজও হবে। একই সঙ্গে বিঘের পর বিঘের ফসলও পুড়ে খাক হয়ে যাবে না। এগুলি যদি করা যায় তাহলে রক্ষা পেতে পারে ৩ লক্ষ চাষির জীবন।”


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

61 − = 55