পুলিশের নজর এড়িয়ে দাহ করার চেষ্টা, চিতা থেকে দেহ নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হল ময়নাতদন্তে, আটক ২

রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

Published on: জানু ১৬, ২০১৮ @ ২১:৩৭

এসপিটি নিউজ,বারুইপুর,১৬ জানুয়ারিঃ নেই মৃতের শংসাপত্র। তার উপর গলায় দড়ির দাগ। এমন ব্যক্তিকে পুলিশের নজর এড়িয়ে শ্মশানে দাহ করার ব্যবস্থা হয়। গোটা প্রক্রিয়াটা আবার স্থানীয় এসইউসিআই পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে ঘটছিল।খবর পাওয়া মাত্রই জয়নগর থানার পুলিশ সেখানে পৌঁছে গেছিল।অবস্থা বুঝে তারা মৃতদেহ দাহ করার কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর চিতা থেকে মৃতদেহ নামিয়ে পুলিশ তা নিয়ে যায় ময়নাতদন্তে। আইনকে ফাঁকি দিয়ে মৃতদেহ দাহ করা ও তাতে সাহায্য করার অভিযোগে পুলিশ মৃতের ছেলে ও স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যকে আটক করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম হারু সরদার(৫৫)।ঘটনাটি ঘটে মঙ্গনবার সকালে জয়নগর থানার রাজাপুর –করাবেগ পঞ্চায়েতের ঘোষের চক এলাকায়।মৃতের গলায় দড়ির দাগ দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশ ঘটনার জেরে ছোট ছেলে বিজয় সরদার ও করাবেগ পঞ্চায়েতের এসইউসিআই-এর পঞ্চায়েত সদস্য গৌর হরি হালদারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে । মৃতদেহ পুলিশকে না জানিয়ে গোপনে দাহ করার চেষ্টা চলছিল এসইউসিআইয়ের পঞ্চায়েত সদস্যর উপস্থিতিতে।পরিবারের লোকজন মৃতদেহের ডেড সার্টিফিকেট দেখাতে পারেনি পুলিশকে,পুলিশকে ভাবায় এক প্রতিবন্ধি ব্যাক্তি কিভাবে আত্মহত্যা করতে পারে তাই ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। 

।পরিবারের লোকজন মৃতদেহের ডেড সার্টিফিকেট দেখাতে পারেনি পুলিশ কে ,পুলিশকে ভাবায় এক প্রতিবন্ধি ব্যাক্তি কিভাবে আত্মহত্যা করতে পারে তাই ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ । পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, অসুস্থ প্রতিবন্ধি বাবার চিকিৎসার খরচ চালাতে না পেরে বাবাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হতে পারে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।

এই প্রসঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে খবর, জয়নগরের রাজাপুর করাবেগ পঞ্চায়েতের ঘোষের চকের বাসিন্দা হারু সরদার কলকাতায় দিন মজুরের কাজ করত। এক বছর আগে কোন দুর্ঘটনায় তিনি মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধি হয়ে যান। হাত-পা নাড়ার ক্ষমতা ছিল না তার।  হারুবাবুর দুই ছেলে যুধিষ্ঠির ও বিজয়,দুই মেয়ে। বড় ছেলে বিয়ে করেনি।

পরিবার সুত্রে জানা যায়, হারুবাবু সোমবার সন্ধ্যায় মারা যায়। তারপর দেহ মঙ্গলবার সকালে কিছু দূরে গোঁড়ের হাটে শ্মশানে নিয়ে যায় তার ছেলেরা। এসইউসিআইয়ের পঞ্চায়েত সদস্য সব দেখাশোনা করে। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে পুলিশ শ্মশানে গিয়ে এদিন সকালে চিতা থেকে দেহ নামিয়ে ময়নাতদন্তে পাঠায়। গ্রামবাসীরা পুলিশকে জানায় হারুবাবুর দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল বারান্দায়। হারুবাবুর স্ত্রী চাঁপা সরদার জানায়, “আমার স্বামী প্রতিবন্ধী।কিভাবে মারা গেল জানি না।আমি সোমবার বাড়িতে ছিলাম না।স্বামীর গলায় দাগ আছে। কেউ মেরে দিয়েছে আমার স্বামীকে।” এই প্রসঙ্গে হারুবাবুর বড় মেয়ে সাগরিকা শিকারি জানায়, বাবার জায়গা বন্ধক দিয়ে বাবার চিকিৎসা হত। দুই ভাই চাষ করে। ঠিক মত উপার্জন করে না। বাবা কয়েকদিন ধরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। কাল কেউ বাড়িতে ছিল না।কিভাবে মারা গেল জানিনা। আমরা খবর পেয়ে আসি।

গ্রামবাসীরা জানায়, বাবার চিকিৎসার খরচ আর চালাতে পারছিল না, শেষে কয়েক মাস আর চিকিৎসা হত না।দুই ছেলে এক বউ দেখত না। সব মিলিয়ে এই মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বাঁধছে।

Published on: জানু ১৬, ২০১৮ @ ২১:৩৭

 

 

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 5 = 2