পিআইবি কলকাতার উদ্যোগে ‘মিট দ্য অ্যাচিভার্স’ অনুষ্ঠানে সফল চার মহিলা বললেন তাদের কথা

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ৬, ২০২৩ @ ২২:৫৫

কলকাতা, পিআইবি, ৬ মার্চ: নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাঁরা সকলেই সফল। এমনকি নিজেদের পেশার জগতেও তাঁরা উৎকর্ষের অধিকারী। শুধু তাই নয়, গৃহকোণেও তাঁদের সাফল্য কম কিছু নয়। নিজেদের সন্তানদের দক্ষতার সঙ্গে লালনপালনের পাশাপাশি স্ত্রী, পুত্রবধূ, কন্যা এবং ভগিনী হিসেবেও সুচারুরূপে তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।

এমনই একঝাঁক সফল মহিলাদের নিয়ে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আজ সাক্ষী রইল কলকাতা শহর। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি)-র উদ্যোগে কলকাতার প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য অ্যাচিভার্স’ শীর্ষক এই বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এই সফল মহিলারা। তাঁরা হলেন – জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (জেডএসআই)-এর ডিরেক্টর ডঃ ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়, আইসিএমআর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কলেরা অ্যান্ড এনটেরিক ডিজিজেস (নাইসেড)-এর ডিরেক্টর ডা. শান্তা দত্ত, অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হেলথ অ্যান্ড পাবলিক হাইজিন (এআইআইএইচঅ্যান্ডপিএইচ)-এর ডিরেক্টর ডা. মধুমিতা দোবে এবং ২০১৫ সালে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করার ক্ষেত্রে একমাত্র সফল মুসলিম মহিলা প্রতিনিধি শ্রীমতী তেহরিনা নাসরিন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন আয়কর আধিকারিক। সমস্ত রকম সামাজিক বিরূপ সমালোচনা ও প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েও ১২ ঘন্টা ৩৮ মিনিট সময়কালের মধ্যে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেন তিনি। তাঁর সাফল্যের মুকুটে আরও একটি পালক যোগ হয় যখন তিনি ২০২২ সালে ৪ ঘন্টা ২৩ মিনিটে অতিক্রম করেন জিব্রাল্টার চ্যানেল। হাওড়ার উলুবেড়িয়ার একটি ছোট্ট গ্রাম থেকে এইভাবেই খ্যাতির শীর্ষে উঠে এসেছেন তিনি।

আজকের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডা. শান্তা দত্ত বলেন, দেশের মহিলাদের সামাজিক তথা সাংস্কৃতিক পরিসরের সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যে শুধুমাত্র সরকারি প্রচেষ্টাই যথেষ্ট নয়। এজন্য এগিয়ে আসা উচিত বেসরকারি সমস্ত পক্ষেরই। মহিলাদের সম্পর্কে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতে যে আজ অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে একথা যেমন সত্য, তেমনই সত্য একথাও যে মহিলাদের প্রতি ইতিবাচক সাহায্য ও সহযোগিতার হাত আরও প্রসারিত করা উচিত।

ডঃ ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে মহিলাদের মানসিকতাকে আরও ইতিবাচক করে তোলার ওপর জোর দিয়ে বলেন যে ডারউইনের বিবর্তনবাদের কথা এই প্রসঙ্গে স্মরণে রাখতে হবে। তিনি বলেন, মহিলারা এখন অনেক ক্ষেত্রেই পারদর্শী। একাধারে তিনি যেমন জননী, অন্যদিকে তিনি কারোর না কারোর স্ত্রী, কন্যা, পুত্রবধূ, ভগিনী এবং ভ্রাতৃবধূ। শুধু তাই নয়, কোনও না কোনও সংস্থায় একজন দক্ষ কর্মী হিসেবেও তাঁরা যথেষ্ট সাফল্যের ছাপ রেখেছেন। পুরুষদের পাশাপাশি এইভাবেই তাঁরা অনেক দায়িত্বই সামলান।

মহিলাদের আয়ু পুরুষদের থেকে যে অনেক বেশি, একথা একটি বৈজ্ঞানিক সত্য। এই কারণেই হয়তো একইসঙ্গে তাঁরা অনেক দায়িত্বই সামলাতে পারেন। আজ এমনটাই জানালেন ডা. মধুমিতা দোবে। তিনি বলেন, আজকের দিনে যা প্রয়োজন তা হল মহিলাদের সম্পর্কে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

শ্রীমতী তেহরিনা নাসরিন বলেন, যে পরিবেশে তিনি বড় হয়ে উঠেছেন সেখানে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হওয়ার পাশাপাশি এক সময় অনেক বঞ্চনারও তাঁকে শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু, যাকে তিনি তাঁর জীবনে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন সেই মাসাদুর রহমান বৈদ্যের সাহায্য ও অনুপ্রেরণাতেই তিনি আজ এতদূরে আসতে পেরেছেন। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে তিনি স্নাতকোত্তর হয়েছেন এবং ইংলিশ চ্যানেলের ৬.৯ মিটার পর্যন্ত উঁচু ঢেউয়ের মোকাবিলা করে একজন মুসলিম মহিলা হিসেবে রেকর্ড গড়ে তুলেছেন। তবে এজন্য সমাজের ভ্রূকুটিকেও উপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁকে।

Published on: মার্চ ৬, ২০২৩ @ ২২:৫৫


শেয়ার করুন