- সারা দেশে ৬৫ হাজার এগ্রিকালচারাল সেন্টার হয়েছে।
- ফিশারিজ সেন্টারের অগ্রগতিতে বরাদ্দ করা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা।
- প্রাণীসম্পদ উন্নয়নে বরাদ্দ হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা।
- আয়ুষ্মান ভারত মন্ত্রণালয় যারা কোভিড-১৯ ওষুধ তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৪ হাজার কোটি টাকা।
Published on: জুন ২২, ২০২০ @ ২২:২৪
Reporter: Aniruddha Pal
এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২২জুন: ভারতের হাতে সেই ক্ষমতা আছে যা নিয়ে তারা বিশ্বের মধ্যে নজর কাড়তে পারে।বিশেষ করে কৃষিতে আমাদের সেই ক্ষমতা আছে। এখন দরকার তার যথাযথ মূল্যায়ন এবং কার্যকর করা। বিশ্বের মধ্যে নেদারল্যান্ড খাদ্য ও কৃষিজাত পণ্যের প্রক্রিয়াকরণে এক অথবা দুই নম্বর স্থান দখল করে থাকে। আমাদের দেশ ভারতের সেই ক্ষমতা আছে। সব কিছু ঠিক মতো চললে আমরাও পারি সেই জায়গায় পৌঁছতে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের অর্থনীতির পুনর্গঠনে যেভাবে এগিয়ে এসেছে এর ইতিবাচক ফল মিলবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন আলোচনায় উপস্থিত বিশিষ্ট বক্তারা।
গতকাল রবিবার সহকার ভারতের ব্যবস্থাপনায় সংবাদ প্রভাকর টাইমস-এর উদ্যোগে জুম মিটিং-এর আয়োজন করেছিল রিতম বাংলা।যেখানে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, সেন্ট্রাল বোর্ডের ডিরেক্টর, সহকার ভারতীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সতীশ মারাঠে, রাজ্যসভার সদস্য ড. স্বপন দাশগুপ্ত এবং সহকার ভারতীর পূর্ব ক্ষেত্রের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি বিবেকানন্দ পাত্র।
বিবেকানন্দবাবু গ্রামীণ অর্থনীতির বর্তমান রূপ তুলে ধরেন
সভার শুরুতে প্রথম বক্তা হিসেবে বিবেকানন্দবাবু গ্রামীণ অর্থনীতির বর্তমান রূপ তুলে ধরেন। বিশেষ করে কোভিড -১৯ মহামারীর পর গ্রামীণ এলাকার মানুষের মধ্যে যে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে তা নিয়ে পর্যালোচনা করেন। বিশেষ করে তিনি ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেন। এই মানুষগুলি আজ কাজ হারিয়ে যে ভয়ানক পরিস্থিতির সামনে এসে দাঁড়িয়েছে সহকার ভারতীর এই সব শ্রমিকদের পাশে আছে বলে তাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেন। সেই সঙ্গে তিনি – সেই সমস্ত শ্রমিকদের সহকার ভারতীর সঙ্গে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন- “সহকার ভারতী দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্ত মানুষদের জন্য বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে কাজ করে চলেছে। সমবায় গোষ্ঠী গড়ে তুলে আমরা তাদের সাহায্য করছি। এবারও আমরা ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিক যারা কাজ হারিয়ে ফিরে এসেছে তাদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি এর ফলে তারা সুবিধা পাবেন।”
মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন সতীশ মারাঠে
- আলোচনায় খুবই মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন আরবিআই, সেন্ট্রাল বোর্ডের ডিরেক্টর ও সহকার ভারতীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সতীশ মারাঠে।ভারতের কৃষি ক্ষেত্র যে বিশ্বের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সেকথা মনে করিয়ে দেন। কিন্তু বর্তমানে কোভিড-১৯ মহামারীর পর কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন ২০ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রক্রিয়াকরণে যা থাকে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। বিশেষ করে এশিয়ার যে দেশগুলি কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদনে নজর কাড়ে সেই দেশগুলি যেমন- দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েত্নাম, মালয়েশিয়া কৃষিজাত পণ্যের প্রক্রিয়াকরণ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ থাকে।
- তিনি আরও বলেন- “আমাদের কৃষিজাত পণ্যের সুবিধা থাকলেও সারা দেশে বেসরকারি কোম্পানিগুলি কৃষিক্ষত্রে মাত্র ২ শতাংশ বিনিয়োগ করে থাকে। অন্যান্য সকলে মিলে করে ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ। বাকি ৭০-৮০ শতাংশ কৃষকরা নিজেরাই করে থাকে। এর মধ্যেও আমাদের দেশ কৃষি ক্ষেত্রে অগ্রগতি ঘটিয়েছে। দেশের বর্তমান সরকারের আমলে কৃষকদের কথা গুরুত্ব সহকারে ভাবা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সারা দেশে ৬৫ হাজার এগ্রিকালচারাল সেন্টার হয়েছে।”
- এরপর সতীশ মারাঠে এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার দেশের গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে এক বিশাল অঙ্কের টাকা অনুমোদন করেছে। যার মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি আত্মনির্ভর ভারতের রূপকে সার্থক করে তুলতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন-“প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কোভিড-১৯ মহামারীর পর দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে মজবুত করে তুলতে এই ক্ষেত্রগুলিতে মোটা অঙ্কের টাকা বরাদ্দ করেছেন। সেই মতো ফিশারিজ সেন্টারের অগ্রগতিতে বরাদ্দ করা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। প্রাণীসম্পদ উন্নয়নে বরাদ্দ হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা। এমনকী আয়ুষ্মান ভারত মন্ত্রণালয় যারা কোভিড-১৯ ওষুধ তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু করছেন তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৪ হাজার কোটি টাকা। এমনকী, ই-মার্কেট-এর উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে।”
- কৃষিজাত পণ্যের প্রক্রিয়াকরণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে এক্মাত্র দেশ নেদারল্যান্ড নিজেদের অবস্থান শীর্ষ ধরে রেখেছে। কখনও তারা এক আবার কখনও তারা দুই নম্বর স্থানে থাকে। এতটুকু এক ছোট্ট দেশ যেভাবে এই কাজে অগ্রগতি ঘটিয়েছে তা দেখার মতো। আমাদেরও এই বিষয়ে এগিয়ে যেতে হবে।” বলেন সতীশজী।
রাজ্যসভার সাংসদ ড. স্বপন দাশগুপ্ত বলেন
এই বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ ড. স্বপন দাশগুপ্ত বলেন-“নেদারল্যান্ড অতি ক্ষুদ্র একটি দেশ। যার এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছনো সম্ভব। সেই দেশ কী অভূতপূর্ব ভাবে কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেছে। আমাদের দেশেও সেই ক্ষমতা আছে। এওতদিন তা নিয়ে ভাবা হয়নি। বর্তমান সরকার এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে। এপিএমসি আইন বাতিল হয়ে যাওয়ায় এখন আর সমস্যা থাকছে না। নতুন আইনে বাধা কমবে। নতুন বিনিয়োগ আসবে। প্রক্রিয়াকরণের সুবিধা আরও বাড়বে। আশা করব, আগামিদিনে ভারতও নেদারল্যান্ডের মতো জায়গাত পৌঁছতে পারবে। এটা সম্ভব।” অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সহকার ভারতীর মিডিয়া সেলের পক্ষে জয়দীপ রায় ও অরিন্দম চক্রবর্তী।
Published on: জুন ২২, ২০২০ @ ২২:২৪