নিঃসঙ্গ-অসহায়দের পিঠে-পুলি খাইয়ে আর বস্ত্র দান করে মকর সংক্রান্তির এক “পুণ্য সেবা স্নান” সারলেন বারাকপুরের সম্রাট সহ মেদিনীপুরের শিক্ষা-সমাজকর্মীরা

রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জানু ১৪, ২০১৮ @ ২০:৩২

এসপিটি নিউজ ব্যুরোঃ আজ মকর সংক্রান্তি। বাঙালিদের কাছে এ এক প্রাচীন পরব। মন্দিরে পুজো দেওয়া, মন্ত্রোচ্চারনের মাধ্যমে গঙ্গা জলে ডুব দেওয়া আরও কত কী! তবে এর পাশাপাশি আছে গরিব, অসহায়দের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। যেটার আজ বড়ই অভাব। “আমি খাব-আমি পড়ব-আমি দেখাব”র মাঝে সেই মানুষগুলি আজ বড়ই অবহেলিত। রাস্তাঘাটে-অনাথ আশ্রমে-বৃদ্ধাশ্রমে যারা নীরবে বয়ে নিয়ে চলেছে এক রাশ কষ্ট আর যন্ত্রণা।আজ সেই মানুষগুলির পাশে থেকে তাদের পিঠে-পুলি খাইয়ে আর বস্ত্র তুলে দিয়ে সংক্রান্তির এক “পুণ্য সেবা স্নানে” নিজেদের ব্যস্ত রাখলেন বারাকপুরের সম্রাট তপাদার থেকে শুরু করে মেদিনীপুরের কয়েকজন যুবক-যুবতী।

বারাকপুরের সম্রাট তপাদারের কাছে এটা কোনও নতুন কিছু নয়।প্রায় সময়ই তিনি গরিব-আর্ত-অসহায় মানুষের পাশে থেকে নিজের সাধ্যমতো করার চেষ্টা করে থাকেন।সবাই যখন নাচে-গানে-জলে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ব্যস্ত ছিলেন সেইসময় বারাকপুরের এই সম্রাট বিরিয়ানির প্যাকেট আর কম্বল তুলে দিয়েছিলেন রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে শীতে ঠকঠক করে কাঁপতে থাকা সহায়-সম্বলহীন মানুষগুলির হাতে। সেদিন এভাবেই সে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।আর সেটা ছিল একেবারে নীরবে, সেটা কোনও টিভি ক্যামেরার সামনে নয়। পরদিনও সম্রাট বছরের প্রথম দিনটি ভাগ করে নিয়েছিলেন বৃদ্ধাবাসের সেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা আর অনাথ আশ্রমের শিশু-কিশোরদের সঙ্গে।

ঠিক তেমনই আজও একইভাবে তিনি পিঠে-পুলি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বারাকপুর বৃদ্ধাশ্রম আর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়। সম্রাট এদিন সেইসব মানুষকে খাইয়ে আসেন পিঠে-পুলি। বারাকপুর বৃদ্ধাশ্রমের ১১৫জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মুখে পিঠে-পুলি তুলে দিতে পেরে যারপরনাই তৃপ্ত সম্রাট। তিনি বলেন, “জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। মকর সংক্রান্তি মানে বাঙালীদের ঘরে ঘরে পুলি পিঠে খাওয়ার আনন্দ।এই আনন্দের থেকে বঞ্চিত থাকে আমাদের সমাজের বহু মানুষ।কর্ম ক্ষমতা থাকার সময় যারা আমাদেরকে পুলি পিঠে করে খাওয়াতেন(প্রবীণ নাগরিক) তারা আজ নিঃসঙ্গ ও অসহায়।সংক্রান্তির দিনে বারাকপুর বৃদ্ধাশ্রমে ১১৫ জন সেইসমস্ত অসহায় প্রবীণ নাগরিকদের হাতে তুলে দিলাম একটু পুলি পিঠে।ভাগ করে নিলাম মকর সংক্রান্তির আনন্দ।বারাকপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ১৫০ প্রান্তিক মানুষের হাতে তুলে দিলাম পিঠে পুলি।তাদের চোখে আনন্দ দেখে নিজেও আনন্দিত হলাম।”

সম্রাটের মতোই এদিন মেদিনীপুর কুঈজ কেন্দ্র সোস‍্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটিও মকর সংক্রান্তির দিনটিকে আর এক ভাবে উপভোগ করলেন।রবিবার তারা মেদিনীপুর শহরের গান্ধী ঘাটে আসা দুঃস্থ মানুষজনের হাতে তুলে দিলেন শীত ও সাধারণ বস্ত্র। এই কর্মসূচিতে যোগ দেন শ‍্যামসুন্দর পাটনা হাইস্কুলের শিক্ষক “শিক্ষারত্ন” গৌতম বোস, রোশেনারা খাঁন,মৌপাল দেশপ্রাণ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূন পড়িয়া, শিক্ষক স্নেহাশীষ চৌধুরী, শিক্ষিকা আল্পনা দেবনাথ বসু,শবরী বসু, সুভাষ জানা, অন্তরা বসু,সৌনক সাউ, শান্তনু ঘোষ, মৃন্ময়ী খাঁড়া,সাগরময় ঘোষ প্রমুখ। সংস্থার পক্ষে সুদীপ কুমার খাঁড়া জানান, আগমীদিনে তাঁরা​ আরও বেশি মানুষের হাতে বস্ত্র তুলে দেওয়ার​ চেষ্টা করবেন।

Published on: জানু ১৪, ২০১৮ @ ২০:৩২


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

59 − 55 =