শুভেন্দু অধিকারী ফের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন- “আরও অনেকে আসবে। সাগর রেডি হয়ে গেছে। কাকদ্বীপ রেডি হয়ে গেছে। পাথরপ্রতিমা রেডি হয়ে গেছে। রায়দিঘিতে পরিবর্তনের হাওয়া। মগরাহাট ভাঙতে হবে। ক্যানিং ভাঙতে হবে। ভাঙড়ে ঢুকতে হবে। দক্ষিণ ২৪ পগনায় একত্রিশে ৩১ করতে হবে।”
Published on: ফেব্রু ২, ২০২১ @ ২১:৪০
এসপিটি নিউজ, বারুইপুর, ২ ফেব্রুয়ারি: ভোট যতই এগিয়ে আসছে ততই শুভেন্দু-অভিষেক দ্বৈরথ চরমে পৌঁছচ্ছে। বারুইপুরে বিজেপির যোগদান মঞ্চে দাঁড়িয়ে মঙ্গলবার ফের শুভেন্দু অধিকারী নাম না করে তৃণমূল যুন কংগ্রেস সভাপতি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন।বলেন- আম,অরা তো হলাম শ্রমিক মৌমাছি। আর আপনি হলেন রানী মৌমাছি। এগারো সালের পর ল্যান্ড করেছেন দিল্লি থেকে। একই সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পগনা জেলায় তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাতদের নাম করে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন- ভোটের সময় এরা কেউ রাস্তায় থাকবে না। আপনারা সবাই ভোট দিতে পারবেন।
প্রথম পরিবর্তন নন্দীগ্রামের পর দুটো জেলায় এসেছিল-শুভেন্দু
দক্ষিণ ২৪ পগনার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বলতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন- “প্রথম পরিবর্তন নন্দীগ্রামের পর দুটো জেলায় এসেছিল। নদীর এপার আর ওপার। পূর্ব মেদিনীপুরে আমরা ছিলাম। আর এদিকে শোভনদারা ছিল। দু’পারে প্রথম জেলা পরিষদ এসেছিল। পরিবর্তন ২০০৮ এ এখান থেকে শুরু হয়েছিল। অথচ সেই তৃণমূলের বুদ্ধি আজ এত ভোঁতা হয়ে গেছে যে বিহার থেকে ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে বুদ্ধি ধার করতে আনতে হয়েছে।”
তোলাবাজ ভাইপোর যিনি পিএ তিনি ইডি থেকে ফোন পেয়ে গেছেন-শুভেন্দু
এরপরেই শুভেন্দুর প্রশ্ন- ” এখানে যারা তৃণমূল করে তারা তৃণমূলের মূল সংগঠন করতে পারেন? ওসিরা কি বলে- এই যুব কর, তৃণমূল করা যাবে না।” এরপরেই কয়লা কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে বলেন-” একটু আগে মেসেজ পেলাম – তোলাবাজ ভাইপোর যিনি পিএ তিনি ইডি থেকে ফোন পেয়ে গেছেন। বলছে বিনয় মিশ্র কোথায়? তৃণমূল কয়লাতে, বালিতে আছে। আমার নামে বড় বড় কথা বলে এসছে কুলতলিতে। মাইক নিয়ে একবার এদিক যায় আর একবার ওদিকে যায়। বলে ঘুষখোর শুভেন্দু। প্রমাণ করতে পারবে?”
সমঝদার কা ইশারাই কাফি হ্যায়
না থেমে শুভেন্দু বলতে থাকেন- “আমি সেদিন বলেছিলাম, কয়লার টাকা কোথায় কোথায় যায়? কয়লার লালার টাকা থাইল্যান্ডে যায়। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে যায়। নাসিকর্ণ ব্যাঙ্কের শাখাতে যায়। সেদিন বলেছিলাম না দেখাবো, দেখুন। এরপর হাতে একটা প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেন। বলতে হবে তোলাবাজটা কে? ভালো করে স্টাডি করুন- ম্যাডাম নারুলাটা কে? গত লোকসভা ভোটের সময় কলকাতা এয়ারপোর্টে সোনা নিয়ে ধরা পড়েছিলেন যিনি তিনি হলেন ম্যাডাম নারুলা। সমঝদার কা ইশারাই কাফি হ্যায়।”
শুভেন্দু প্রশ্ন তোলেন- এই জেলা চালাচ্ছে কে?
এরপরই শুভেন্দু দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাদের নাম করে তাদের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন।। প্রশ্ন তোলেন- “এই জেলা চালাচ্ছে কে? মাননীয় জাহাঙ্গীর, মাননীয় মেহেবুব,মাননীয় সওকত, আর ডায়মন্ড হারবারের মাননীয় জি অধিকারী। আপনাদের লড়তে হবে। এবারে ভোট হবে। কেন্দ্রীয় পুলিশ ভোট করাবে। ইলেকশন কমিশনকে ভোট করতে দিতে হবে। বড় বড় কথা না। ৭০ হাজারের জেতা সিট। তিন লাখে জিতেছি। ওই ডায়মন্ডহারবারের সিট টা তো সিপিএমের ছিল। আবুল হাসনাত খান, শমীক লাহিড়িরা জিতত। সোমেন মিত্র যিনি প্রথমবার এই দুর্গটা ভাঙেন আপনাদের সাহায্য নিয়ে।”
জাহাঙ্গীর এন্ড কোম্পানিরা রাস্তায় থাকবে না-শুভেন্দু
“গত লোকসভায় ভোট হয়েছে? কোথাও ভোট দিতে পেরেছেন কেউ? গণতন্ত্র বিপন্ন। কথা বলার অধিকার নেই। ভোট দিতে পারবেন। এই জাহাঙ্গীর এন্ড কোম্পানিরা সওকত এন্ড কোম্পানিরা তোলাবাজ ভাইপোর সাগরেদরা রাস্তায় থাকবে না। জনগণ থাকবে ভোট দেবেন আপনারা। এখানে আর একটা ছোট তোলাবাজ আছে গৌতম তার নাম। আগে বারুইপুর পেয়ারার জন্য বিখ্যাত ছিল। এখন তোলাবাজ গৌতমের জন্য বিখ্যাত। ওরা কালো পতাকা নিয়ে নিশানা দেখাচ্ছে আমাদের। আমি গাড়ি স্লো করে নমস্কার করে এসছি। কারণ মুখগুলো তো চিনে রাখা দরকার।মে মাসের পর এখানেই তো আসতে হবে আপনাদের। তাই মুখগুলো চিনে রাখলাম।” বলেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু বলেন-এর পরের অভিযান কুলতলিতে হবে
বিজেপি নেতৃত্বের কাছে এরপর মঞ্চে দাঁড়িয়েই শুভেন্দু বলেন-“এর পরের অভিযান কুলতলিতে হবে। আমি বলব, তোলাবাজ ভাইপো যে মাঠে মিটিং করেছিল ঐ মাঠেই ব্যবস্থা করবেন। কী বলছে, মধু খেয়েছি। আরে আমরা তো শ্রমিক মৌমাছি। আমরা তো এগারোর আগের পার্টি। নন্দীগ্রাম করা লোক। জঙ্গলমহল করা লোক। কলেজে ছাত্র সংসদ করা লোক। একুশে জুলাই লোক নিয়ে গেছি। আর আপনি তো রানী মৌমাছি, এগারো সালের পর ল্যান্ড করেছেন দিল্লি থেকে। এগারোর একুশে জুলাই হাতে খড়ি তৃণমূল যুবার। আপনি তো মধুটা খেয়েছেন। সেজন্য তো আপনার ছোট ভাঙা বাড়িটা আজ শান্তিনিকেতন। আজ পাড়ায় পাড়ায় লোক দেখতে পাচ্ছে কী হয়েছে।”
সব শেষে শুভেন্দু অধিকারী ফের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন- “আরও অনেকে আসবে। সাগর রেডি হয়ে গেছে। কাকদ্বীপ রেডি হয়ে গেছে। পাথরপ্রতিমা রেডি হয়ে গেছে। রায়দিঘিতে পরিবর্তনের হাওয়া। মগরাহাট ভাঙতে হবে। ক্যানিং ভাঙতে হবে। ভাঙড়ে ঢুকতে হবে। দক্ষিণ ২৪ পগনায় একত্রিশে ৩১ করতে হবে।
Published on: ফেব্রু ২, ২০২১ @ ২১:৪০