ডা. সিদ্দিকি 13 লক্ষ টাকা প্রতারণার শিকার – এই মেডিকেল কোম্পানির বিরুদ্ধে রয়েছে আরও অনেক অভিযোগ

Main অর্থ ও বাণিজ্য এসপিটি এক্সক্লুসিভ দেশ রাজ্য স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান
শেয়ার করুন

  • 2018-র এপ্রিল মাসে আমরা রজত নামে মার্কেটিং-এর জনৈক এক ব্যক্তির মাধ্যমে এজ মেডিকেল সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির খোঁজ পাই।
  • গরিব রোগীদের স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কথা ভেবেই সিটি স্ক্যান মেশিনের জন্য আমি নিজে 13 লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম।জানান ডা. সিদ্দিকি।
  • এরকম ১০ জন ব্যক্তিকে এই মেডিকেল কোম্পানি প্রতারিত করেছে।সমস্ত নথি-প্রমাণ নিয়েই অভিযোগ এনেছেন ডা. সিদ্দিকি।

 Reporter:  Aniruddha Pal & Jayanta Bandopadhyay

Published on: নভে ১৮, ২০১৯ @ ১৩:৩৯

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৮ নভেম্বর:  বিএনআই নিউরোলজি হাসপাতালে ডিরেক্টর থাকাকালীন ডা. সফি ইকবাল সিদ্দিকি একটি সিটি স্ক্যান মেশিন বুক করেছিলেন। এজ মেডিকেল সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি মতো মেশিনের মূল দামের মধ্যে ৫০ শতাংশ হিসেবে তাদের তিনি ১৩ লক্ষ্য টাকা দিয়েছিলেন। যা তিনি একেবারে নিজের থেকে বিনিয়োগ করেছিলেন। এরপর তারা একটি মেশিন বসিয়ে দিয়ে গেলেও সেই মেশিন পরবর্তীকালে কোনও কাজ করেনি। অর্থাৎ মেশিনটা অকেজো থাকায় রোগীরাও আর পরিষেবা পাছেন না।এখন আর তারা যোগাযোগও করছে না মেশিনটাও বদলে দিচ্ছে না। টাকাও ফেরত দিচ্ছে না । বিশিষ্ট নিউরো সার্জেন ডা. সফি ইকবাল সিদ্দিকি এই পরিস্থিতে ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। শুধু তিনি একা নন তাঁর মতো দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মোট দশ জন এই কোম্পানির কাছে প্রতারিত হয়েছেন। এত বড় প্রতারণার পরেও কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

  • কিভাবে তিনি এই কোম্পানির খোঁজ পেয়েছিলেন?
  • কিভাবে তাদের কাছে তিনি প্রতারিত হলেন?
  • কত দিন ধরে তিনি এভাবে তাদের কাছে প্রতারিত হয়ে আসছেন?
  • আর কারা এদের কাছে প্রতারিত হয়েছেন?

– এ সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সংবাদ প্রভাকর টাইমস-এর সামনে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিশিষ্ট নিউরো সার্জেন ডা. সফি ইকবাল সিদ্দিকি। গোটা ঘটনা শোনা যাক তাঁর মুখেই।

যেভাবে কোম্পানির খোঁজ পেয়েছিলেন

“2017-র ডিসেম্বর থেকে আমি বিএনআই নিউরোলোজি হাসপাতালে ডিরেক্টর হিসেবে ওখানে ছিলাম। এখন আমি আপাতত ওখানে নেই। 2018-র এপ্রিল মাসে আমরা রজত নামে মার্কেটিং-এর জনৈক এক ব্যক্তির মাধ্যমে এজ মেডিকেল সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির খোঁজ পাই। যারা রিফাব্রিশ সিটি স্ক্যান ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ন্যায্য মূল্যে সরবরাহ করে থাকেন।”

যে কারণে ডা. সিদ্দিকি নিজের থেকে বিনিয়োগ করেন

“যেহেতু আমাদে্র এটা নিউরো হাসপাতাল সেইজন্য আমার একটা চিন্তা-ভাবনা ছিল যতটা সম্ভব কম মূল্যে আমার ইন্টারনাল পেশেন্টদের জন্য মূলত নিম্ন মধ্যবিত্ত রোগীদের জন্য স্বল্প মূল্যে সিটি স্ক্যানের সুবিধা দেওয়া যায়। আর সেই কথা ভেবেই সিটি স্ক্যান মেশিনের জন্য আমি নিজে বিনিয়োগ করেছিলাম। সবমিলিয়ে ১৩ লাখ টাকা দিয়ে আমি সিটি বুকিং করেছিলাম। মিস্টার রজতের মাধ্যমেই এই কোম্পানির সঙ্গে আমার পরিচয় হয়।”

যেভাবে চুক্তি এগোয়

“এই কোম্পানির সিইও ছিলেন মিস্টার জয়বর্ধন। তার সঙ্গে একটা মৌখিক চুক্তি করা ছিল। প্রথমে মিউচুয়াল করা ছিল পরে মেইলের মাধ্যমে আমরা একটা রেট এস্টিমেশন নিয়েছিলাম। সেটা জিএসটি নিয়ে সিঙ্গল স্লাইস সিমেন্সের রিফ্যাব্রিশ সিটি স্কান যার দাম ছিল 28 লক্ষ টাকা। আমাদের বোঝাপড়া এরকম ছিল যে 50 শতাংশ পেমেন্ট করে সিটি বুকিং করা হবে। এবং সিটি স্ক্যান ইনস্টলেশনের পর আমরা 12টা ইনস্টলমেন্টে বাকি 50শতাংশ পরিশোধ করব। আমার শর্ত এটাই ছিল সিটি মেশিন আসবে সেটা ইনস্টল হবে ফাংশানিং হবে তবে আমি সম্পূর্ণ 50 শতাংশ পরিশোধ করব। তার মানে 14 লাখ টাকা পরিশোধ করার পরিকল্পনা ছিল আমি ১৩ লাখ টাকা দিয়ে অলরেডি সিটি স্ক্যান বুকিং করেছিলাম।”

সিটি মেশিন দেওয়ার পরেও কোনও কাজ হয়নি আজ পর্যন্ত

“2018 সালের নভেম্বর পর্যন্ত 13 লাখ টাকা পরিশোধ করা ছিল। তার তিন মাস পর ওরা সিটি মেশিন ডেলিভারি করে। কিন্তু সেই সিটি মেশিন দেখা যায় সম্পূর্ণভাবে অকেজো। ওনাদের সিটি ইঞ্জিনিয়াররা এসেও তার কোনও সুরাহা বের করতে পারে নি। রিপিটেড টেলিফোনিক কমিউনিকেশন, লেটার এবং ই-মেলের মাধ্যমে ওদের সঙ্গে কম্যিনিকেট করেও ওরা সেকেন্ড টাইম কোনরকমে সিটি মেশিন ই্নস্টল করাতে পারেনি।এখন পর্যন্ত ওরা আমার কাছ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেছে বিএনআই হাসপাতালের মাধ্যমে। চেকের মাধ্যমে। তার ডি্টেইলস আমার কাছে আছে। কিন্তু এখন ওরা ফোনও রিসিভ করে না কোনওরকমভাবে কোনও যোগাযোগ করে না। সিটি মেশিন ওরকমভাবেই পড়ে আছে। এবং পরিষেবা দিতে পারছি না।রোগীরা এর চরম ফল ভোগ করছেন।”

আইনি পথে সুবিচার চাইছেন ডা. সিদ্দিকি

“এই কোম্পানি সম্পর্কে যখন আমি সন্ধান লাগাই তখন জানতে পারি আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। আমার আরও বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আছেন। রাইপুরে যেমন একজন আছেন ডা. অরুণ- তিনি একজন স্বনামধন্য পেডিয়াট্রিক সার্জেন, ওনার নিজস্ব হাসপাতালেও এই কোম্পানির মাধ্যমে তিনি একইভাবে প্রতারিত হয়েছেন।তার ডিটেইলসও আমার কাছে আছে। এরকম 10 জন ব্যক্তিকে এই মেডিকেল কোম্পানি প্রতারিত করেছে। সিটি স্কান- নন ফাংশানিং, ম্যাল ফাংশানিং-সিটি স্ক্যান দিয়ে টাকা-পয়সা আদায় করেছেন এবং পরবর্তী কালে সার্ভিস দেননি। আমি চাইছি, অবিলম্বে এর সুরাহা হোক। প্রতারণার এই মারাত্মক অপরাধের আইনি সুবিচার চাইছি এই কোম্পানির বিরুদ্ধে।”

Published on: নভে ১৮, ২০১৯ @ ১৩:৩৯


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

75 − 73 =