জুলাই মাসে বাংলার কালো ছাগল ও গাড়ল ভেড়া পালনের প্রশিক্ষণ হবে প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে

Main প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান রাজ্য
শেয়ার করুন

সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ও গোসাবা ব্লকে কিষাণ হাব তৈরি করেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়।

“আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমাদের ৪০০ লক্ষ্যমাত্রা আমরা ছাড়িয়ে যাব।”

“বাংলার কালো ছাগল এবং গাড়ল ভেড়াকে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে যদি আমরা প্রশিক্ষণ দিতে পারি, তবে গ্রামীণ মহিলাদের জীবিকার একটা নতুন দিশা দেখাতে পারব।”

Published on: জুন ২৬, ২০১৯ @ ১৮:৩৬

সংবাদদাতা– ডা. সৌমিত্র পন্ডিত

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২৬জুনঃ সুন্দরবনের গ্রামীণ মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে ফের তাদের জন্য আরও একবার প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ১২ই জুলাই থেকে ১৫ই জুলাই পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন ধরে চলবে এই শিবির।জৈব প্রযুক্তি হাব প্রতিষ্ঠা প্রকল্পের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বাংলার কালো ছাগল ও গাড়ল ভেড়া পালনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

গ্রামীণ অর্থনীতিতে মহিলাদের আয়ের পথ দেখিয়েছে

ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ও গোসাবা ব্লকে কিষাণ হাব তৈরি করেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়। এই দুই ব্লকের থেকে ১০০০ মহিলা কৃষককে বেছে নিয়ে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে রেখে বাংলার কালো ছাগল এবং গাড়ল ভেড়া কিভাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পালন করা হবে তা নিয়ে পাঁচদিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এর আগে ছটি শিবির হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৩৫০ জন মহিলাকে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের ছাগল এবং ভেড়া বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। যা নিয়ে তারা গ্রামে নিজের বাড়িতে রেখে প্রশিক্ষণ শিবিরে শিখে যাওয়া বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সেগুলি পালন করে উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে আয়ের পথ বৃদ্ধি করতে পারবেন। এর জন্য সুষম খাবার, খনিজ লবণ, প্রতিষেধক, ওষুধপত্র সবই প্রজেক্টের খরচায় দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা, সম্প্রসারণ ও খামার অধিকরণ দফতরের অধিকর্তা ডা. অরুণাশীষ গোস্বামী যা বললেন

গত জানুয়ারি মাসের প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা, সম্প্রসারণ ও খামার অধিকরণ দফতরের অধিকর্তা ডা. অরুণাশীষ গোস্বামী প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ও তার প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ডিপার্টমেন্ট অব বায়ো টেকনোলজি বলে ভারত সরকারের একটি সংস্থা আছে তাদের সহযোগিতায় এই প্রকল্পের আওতায় আপনাদের এলাকায় বিগত এক বছর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বাংলার কালো ছাগল ও গাড়ল ভেড়া পালন করার যে প্রশিক্ষণের কাজ চলছে সেটা আরও বাড়ানো যায় কিনা সেটাও আপনারা ঠিক করবেন।মূলত এই কাজের সঙ্গে গ্রামের মহিলারা যুক্ত থাকবেন। মূলত প্রাণী পালন ছাগল এবং ভেড়া তার সঙ্গে শুয়োর তিনটি প্রজাতিকে নিয়ে এই প্রাণী পালনের উপর একটি প্রশিক্ষণ আমরা দেব। প্রশিক্ষণের পর আমরা ওখানে যাব। আপনারা কিভাবে পালন করছেন এবং প্রাণীগুলিকে আমরা বিনা পয়সায় আপনাদের কিনে দেব। তার অসুখ-বিসুখের ওষুধপত্র আমরা দেব।খাওয়ার জন্য আমরা খাদ্য দেব। এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে এই সব কিছু মিলে আমরা দেখে নেব যে ঐ প্রাণী পালনের মাধ্যমে আপনাদের অর্থনৈতিক ভিত্তিটা অর্থাৎ আয়ের পথটা আপনারা ঠিক মতো বাড়াতে পারলেন কি পারলেন না।”

এক বছরে ৪০০জন খামারিকে প্রশিক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা-সহ-অধিকর্তা ড. কেশব চন্দ্র ধারা

সহ অধিকর্তা ড. কেশব চন্দ্র ধারা বলেন- “আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক বছরে ৪০০জন খামারিকে প্রশিক্ষণ দেব। তার মধ্যে ৬০ শতাংশ অন্তত মহিলা রাখতে হবে। ৪০০ জনের মধ্যে ইতিমধ্যেই ৩৪৩জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে গেছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমাদের ৪০০ লক্ষ্যমাত্রা আমরা ছাড়িয়ে যাব।”

কোন অঞ্চলকে এবং কেন বাছা হয়েছে

“জোনটা হল কোস্টাল জোন। সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে আমরা প্রপোজাল দিয়েছিলাম। বায়োটেক কিষাণ হাবের জন্য। সেটাকে মাথায় রেখেই সুন্দরবন এলাকাকেই তারা অনুমোদন দিয়েছে। এখানে মূলতঃ বাংলার কালো ছাগল এবং গাড়ল ভেড়াকে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে যদি আমরা প্রশিক্ষণ দিতে পারি, তাদেরকে জীবিকার একটা নতুন দিশা দেখাতে পারি তাদের ক্ষেত্রে তা খুব কার্যকরী হবে।তাছাড়া সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলকে বাছার কারণ হল-সেখানকার নোনা জলে কৃষিকর্ম সেভাবে হয় না, নেই শিল্পও। সুন্দরবনের গাড়ল ভেড়া যা এখানকার অধিবাসীরা বহুদিন ধরেই পালন করে আসছেন এবং বাংলার কালো ছাগল বা ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট, যা সুন্দরবনে পালনের উপযোগী-এই দুই জাতকেই এদের পালন করতে দেওয়া হচ্ছে, তবে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে।কারণ এখানে যে জলা জায়গা সেখানে বাংলার কালো ছাগল এবং গাড়ল ভেড়া খুব সহজেই বৃদ্ধি হয়। বিশেষ করে মহিলারা তাদের পারিবারিক কাজের সাথে সাথে এই কাজটা করতে গেলে তাদের অধিক পরিশ্রম করতে হবে না। একটা গরু পালন করতে গেলে তাকে নিয়ে যতটা দৌড়-ঝাঁপ করতে হয় অনেক শ্রম ব্যয় হয় তার চেয়ে অনেক কম শ্রম ব্যয় করে ছাগল এবং ভেড়া পালন করা যায় এবং তার চেয়েও লাভ বেশি হয়।” বলেন ড. ধারা।

Published on: জুন ২৬, ২০১৯ @ ১৮:৩৬

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 24 = 34