চিফ মিনিস্টারকে বাদ দিয়ে মিটিং ডাকার সাহস হয় কোত্থেকে, আপনি নামেই প্রধানমন্ত্রী কামে নন-তোপ মমতার

Main দেশ রাজ্য লোকসভা ভোট 2019
শেয়ার করুন

“আমরা ওনার সব চাকর-বাকর। আমাদের ডেকে পাঠাবেন। ওনাকে রিপোর্ট দিতে হবে।”

“আপনাকে আমি প্রধানমন্ত্রী মানি না। নতুন প্রধানমন্ত্রী হবে তাঁকে বলবো।”

“আজ যা হয়েছে ঐটুকু সামলাবার ক্ষমতা আমাদের আছে। আপনার কাছে ভিক্ষা চাইবার প্রয়োজন নেই।”

সংবাদদাতা-বাপ্পা মন্ডল

ছবি-বাপন ঘোষ

Published on: মে ৬, ২০১৯ @ ২৩:৪৯

এসপিটি নিউজ, গোপীবল্লভপুর, ৬ মে:  ঝাড়গ্রামের নির্বাচনী সভায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন যে তিনি তাঁর ফোন ধরেননি। এমনকী, ঘূর্ণীঝড় নিয়ে ক্ষতির হিসেবে জানতে তিনি রাহ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে মিটিং করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাতে না জানিয়ে দিয়েছেন। আসলে মমতাদিদি উন্নয়নের চেয়ে এসব নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব অভিযোগের জবাব দিয়েছেন গোপীবল্লভপুরের সভায় দাঁড়িয়ে।

নির্বাচনের আগে উনি রাজনীতি করছেন

1) মমতা বলেন- “বিজেপি পঞ্চায়েত ভোটের সময় মানুষকে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা কথা বলে ভোট করিয়েছিল। ওরা মানুষের কথা বলে না করতেও পারে না। এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনের আগে রাজনীতি করছে। তিনি গতকাল একটা চিঠি পাঠিয়ে দিলেন। উনি আসছেন ঝাড়গ্রামে। ওনার প্লেন নামবে কলাইকুণ্ডা। আর আমরা ওনার সব চাকর-বাকর। আমাদের ডেকে পাঠাবেন। ওনাকে রিপোর্ট দিতে হবে। সেজন্য উনি একটা লোক দেখানো মিটিং করবেন। তারপর মিটিং-এ এসে বলবেন এই তো আমাকে সহযোগিতা করলো না।”

কেন আপনার সঙ্গে মিটিং করতে যাবো?

2) “প্রথমেই আমি বলি, প্রধানমন্ত্রী আপনি যখন কলকাতায় ছিলেন আমি তখন খড়গপুরে বসে ছিলাম। আমি কলকাতায় ছিলাম না যে আপনার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ ছিল। আপনি কলাইকুন্ডায় বিমানে নামবেন মিটিং করতে। আমি সরকারি মিটিং আপনার সঙ্গে করতে যাবো? কেন করতে যাবো? আপনি তো নির্বাচনের মিটিং করতে আসছেন। আমি বুঝতাম, আপনি নির্বাচনে মিটিং করতে আসছেন না আমি যেতাম।

“উড়িষ্যায় তো নির্বাচন হয়ে গিয়েছে তাই নবীন পট্টনায়েক আপনার সঙ্গে ঘুরেছেন। আমার এখানে নির্বাচন না থাকলে আমি করতাম না। আমি নির্বাচনের সময় আপনার সঙ্গে ডায়াস শেয়ার করবো না। এটা মাথায় দিয়ে রাখুন। তার কারণ, আপনাকে আমি প্রধানমন্ত্রী মানি না। নতুন প্রধানমন্ত্রী হবে তাঁকে বলবো।”

“আবার তমলুকে কিসব বলেছে। আমার এসব দেখতেও ভালো লাগে না। কাজ নেই কম্ম নেই। তিনি শুধু রাজনীতি করেন আর কিছু করেন না। দিদি যা করেন তার পায়ের নখের যোগ্য আপনি করতে পারতেন?”

কোথায় ছিলেন, এতদিন?

3) “বলুন, কোথায় ছিলেন? যখন গোপিগ্রাম ভাসছিলো। গোপীবল্লভপুরের মানুষ কাঁদছিলো। জামবনীর মানুষ কাঁদছিলো। ঝাড়গ্রামের মানুষ কাঁদছিলো। বেল্পাহাড়ির মানুষ কাঁদছিলো। লোধাশুলির জঙ্গল কাঁদছিলো। পিড়কাটার জঙ্গল কাঁদছিলো। লালগড় কাঁদছিলো, নেতাই কাঁদছিলো।কোথায় ছিলেন? আজ ১২ বছরে একবারও এসেছেন? কতদিন ধরে ঘটনা চলছে- ২০ বছর।”

“বিজেপির সরকার তো ২০০১ -০২ সালেও ছিলো। ২০০৪ সালেও ছিলো। তখন তো অঞ্চলগুলো জ্বলছিলো।একবারও এসছিলেন? একবারও খোঁজ নিয়েছিলেন? যে রক্তে রাঙা হয়ে গেছে আমার জঙ্গলমহল। নির্বাচন বড় বালাই। ভোট চাইতে হবে।”

“আগের বার যখন বন্যা হলো, আমি নিজে গিয়ে বললাম টাকা দিন। আমি দু’বার দিল্লি গিয়ে দেখা করে এলাম। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। একটা পয়সা আপনি দেননি। আর আজ যা হয়েছে ঐটুকু সামলাবার ক্ষমতা আমাদের আছে। আপনার কাছে ভিক্ষা চাইবার প্রয়োজন নেই।” বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

“আমার পাঁচ হাজার বাড়ি ভেঙেছে। আর ৩০ হাজার বাড়ি ক্ষতি হয়েছে। ওগুলো আমরা রাজ্য সরকার থেকে করিয়ে দেবো। আপনি দবেন কোথা থেকে? আপনি তো এখন এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী। ওষুধ এক্সপায়ারি হয়ে গেছে। আপনি এখন প্রধানমন্ত্রী নামেই আছেন কামে নেই। কোনও কাজ করবার ক্ষমতা আপনার নেই। বিপর্যয় নিয়ে কাজ করতে আপনি পারেন না সেটা সরকার পারে। কেন আপনার সঙ্গে আমি মিটিং করবো?”

আপনি তো হেরে যাবেন। তখন কে দেবে টাকা?

4) এরপর মমতা প্রশ্ন তোলেন- “আর আপনি কি করে চিফ মিনিস্টারকে বাদ দিয়ে চিফ সেক্রেটারি আর সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে মিটিং করেন? এত সাহস হয় কোত্থেকে? মুখ্য সচিব মুখ্যমন্ত্রীর অধীনস্ত। কখনোই প্রধানমন্ত্রীর অধীনস্ত নয়। জেলা শাসক এবং আইএএস ও আইপিএস এরা সকলেই মুখ্যমন্ত্রীর অধীনস্ত। প্রধানমন্ত্রীর অধীনস্ত নয়। এটা মাথায় রাখবেন। মুখ্যমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে আপনি মিটিং করবেন? ছবি তুলবেন?আর নাটক দেখাবেন। আর বলবেন, আমি এত দিচ্ছি। তারপর আপনি তো হেরে যাবেন। কে দেবে? ওই টাকা তো পাবে না। সুতরাং নাটক করে কি লাভ।”

ভালোই তো আছেন, আরামে আছেন

5) “দিদি আপনার মতো প্লেনে করে এসে বাংলা দেখে না। আপনি রোজ একটা করে প্লেন নিয়ে চলে আসছেন। কোথাও ডিফেন্সের কলাইকুন্ডা, কোথাও ডিফেন্সের পানাগড়, কোথাও ডিফেন্সের হাসিমারা মিলিটারিদের বড় বড় এলাকা আছে সেখানে ঢুকে যাচ্ছেন। ভালোই তো আছেন, আরামে আছেন। লোকে গরমে কষ্ট পাচ্ছেন আর আপনি তিন মাস ধরে প্লেনে ঘুরে বেড়ালেন। তিন মাস ধরে নির্বাচনের তারিখ দিয়েছেন।”

“শুধু আপনার জন্য লোকের এত ভোগান্তি। আপনার জন্য লোকের এত কষ্ট। লজ্জা করে না। বড় বড় কথা! নির্বাচনের আগে দয়া দেখাতে এসছেন? আপনার কোনও দয়া চাই না।” বলেন মমতা।

Published on: মে ৬, ২০১৯ @ ২৩:৪৯


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 3 = 1