কুপওয়ারাতে তুষারঝড়ের ধাক্কায় উল্টে গেল টাটা সুমো, মৃত্যু হল অফিসারের, উদ্ধার ১০ মৃতদেহ

আবহাওয়া দেশ ভ্রমণ
শেয়ার করুন

Published on: জানু ৬, ২০১৮ @ ১২:০৮

 

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে কাশ্মীর উপত্যকার প্রত্যন্ত কয়েকটি স্থানে তুষারপাত শুরু হয়েছে। এজই মধ্যে কুপওয়ারাতে শুক্রবার বিকেলে ভয়াবহ তুষারঝড় হয়। ঝড়ের গতি এতই তীব্র ছিল যার ফলে যাত্রীবাহী একটি টাটা সুমোকে উড়িয়ে এনে ফেলে দেয়। আর উড়ে আসা সেই টাটা সুমোর ধাক্কায় নিহত হন বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন বা বিআরও-র এক অফিসার। একই সঙ্গে নিখোঁজ হয় আটজন। যাদের খোঁজে তল্লাশি চালিয়েও শনিবার সন্ধে পর্যন্ত ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

প্রতিকূল আবহাওয়ায় বিপজ্জনক সড়কের পাশে ট্র্যাফিক সীমাবদ্ধতা জন্য সতর্কতা জারি আছে; কাশ্মীরের উচ্চতর এলাকাগুলি তুষারপাতের ঝুঁকিতে রয়েছে; আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা আছে।

শুক্রবার বিকেলে উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা-তংধর সড়কের সাধনা পাসে আচমকা তুষারঝড় আকাশপথে আঘাত হানার পর একটি যাত্রীবাহী টাটা সুমোকে ধাক্কা দিয়ে সীমান্ত সড়ক সংস্থার প্রকল্পের ‘বেইকন’ নামের একটি অফিসারের উপর পড়ে, তিনি নিহত হন এবং আটজন নিখোঁজ হয়।

নিহত বেকন অফিসারকে পরে শনাক্ত করা হয়।তিনি ১০৯ আরআরসি-র থেকে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর নাম মঙ্গল প্রসাদ সিং।

গ্রেটার কাশ্মীর খবরের সূত্র অনুযায়ী, একটি আধিকারিক জানাচ্ছে, টাটা সুমো গাড়িটি (জেকে০৯এ -৩২৪৯) তাংধারের দিকে যাওয়ার সময় ‘খুনি নাল্লা’ র কাছে গিয়ে পড়েছিল, যখন ঘড়িতে বেজেছিল দুপুর আড়াইটে। সেই টাটা সুমোতে সাতজন লোক ছিল। তুষারঝড়ের সময় তারা সকলেই বাইরে ছিল। তুষারঝড়ের অনেক আগে থেকেই তারা নাকি সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করছিলেন। তুষারঝড় প্রথম তিনজনের উপর আঘাত আনে।

ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটোনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে, প্রথমে এক শিশুকে উদ্ধার করা সম্ভব হয় এবং উপ-জেলা ক্রালপোরা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। ক্রালপোরা পুলিশ স্টেশনের অফিসার অয়াসিম আহমেদ গ্রেটার কাশ্মীরকে বলেন, তুষারঝড়ে আঘাত হানার সময় তিনজন লোকের মধ্যে শিশুটিও ছিল।আচমকাই ঘটে যায় ঘটনাটি। তিনি ঐ বেকন অফিসারের মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করেন।

এ পর্যন্ত যা জানা গেছে, তা থেকে শফিকা বেগম (তার এক বছরের বাচ্চা), নাহিদা বানু, ফজল হোসেন শাহ, চাপা বেগম ও ফরিদ হুসেন-কার্ণাহের বাসিন্দা হিসেবে চিহ্নিত করা গেছে। কুপওয়ারা জেলার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট পুলিশ সামশের হুসেন গ্রেটার কাশ্মীরকে যে বিবৃতি দিয়েছেন তা থেকে জানা যাচ্ছে যে এই হিমবাহ যেখানে আঘাত হেনেছে সেই জায়গাটি ঘন বনের মধ্যে অবস্থিত।তিনি বলেন, “তুষারঝড়ের সময় গাড়িটি কিন্তু চলমান অবস্থায় ছিল না”।তিনি বলেন, চালক গাড়ির ভিতরে ছিলেন না এবং নিরাপদ ছিলেন। তিনি কার্নার ছেটরাকোটের মাকসুদের ছেলে জহুর আহমদ খানের নাম উল্লেখ করেন।হুসেন বলেন যে এলাকার ঘন কুয়াশার কারণে কোন দৃশ্যমানতা নেই এবং উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।তিনি বলেন, “এখনও এলাকাটিতে তুষারপাত হচ্ছে”, তিনি বলেন, সন্ধ্যা থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী উদ্ধার কাজে তৎপর রয়েছে।

জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি আজ এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন, একজন সরকারি মুখপাত্র পিটিআই-কে একথা জানিয়েছেন।নিহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি তার সহানুভূতি্র কথাও ব্যক্ত করেছেন তিনি।

মুখপাত্রটি আরও জানিয়েছেন, আহতদের সব সম্ভাব্য চিকিৎসার সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য কুপওয়ারা জেলা প্রশাসনকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ পুনর্বাসন ও পুনর্নির্মাণ ও ফুল চাষের মন্ত্রী জাভেদ মুস্তফা মীর আজ রাজ্যের দুর্যোগের ত্রাণ তহবিলের (এসডিআরএফ) ৪ লাখ টাকা নিহতদের আত্মীয়দের কাছে ক্ষতিপূরণখিসেবে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।

তিনি বলেন, আহতদের প্রত্যেককে ১২ হাজার ৬০০ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের কথাও বলেন মন্ত্রী। তিনি দুঃখজনক পরিবারগুলোর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন এবং রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সম্ভাব্য সব সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।মির আহতদের ভাল চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন, বলেন মুখপাত্রটি।সূত্রঃ গ্রেটার কাশ্মীর ও পিটিআই

Published on: জানু ৬, ২০১৮ @ ১২:০৮

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

22 − 18 =