আরএসএস-এর ইফতার: অলীক কু-নাট্য রঙ্গ

উত্তর সম্পাদকীয় রাজ্য
শেয়ার করুন

সম্রাট তপাদার

Published on: জুন ৯, ২০১৮ @ ২০:১৩

ইফতার পার্টির আয়োজন করছে আরএসএস। না শুনে হাসবেন না। সত্যি ঘটনা, তবে হাসির নয়।

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ রেখেই যে এ নাটকের চিত্রনাট্য রচিত হচ্ছে নাগপুরে বসে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

উঠতে বসতে যাদের হাতে সামাজিকভাবে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে এ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে দলিতরা, ভূ-লুণ্ঠিত হচ্ছে সর্বোপরি মানবতা;  তাদের লোভী হাত এবার পবিত্র রমজানকে কলুষিত করার ফন্দি আঁটছে। তাই ব্যাপারটা হাসির নয়।

ইফতারের নমাজের সময় সকলের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা জানানো হয় পরম করুনাময়ের কাছে। যে প্রার্থনা সকলের কল্যাণ কামনা করে, যে প্রার্থনা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের কল্যাণে উচ্চারিত হয়, সে প্রার্থনা তো সংঘ পরিবার তার জন্মলগ্ন থেকে কোনোদিনই উচ্চারণ করেনি! একই কথা বৃহত্তর হিন্দু জীবনচর্চারও অঙ্গ: “সর্বে ভবন্তু সুখিনঃ/ সর্বে সন্তু নিরাময়াঃ।” –মানবতার এই জীবনবেদ যারা কোনোদিন আত্মস্থ করতে পারেনি, তারা যখন ইফতারের আয়োজন করে, তখন হাসি পায় না।বরং ভয় লাগে। আশঙ্কা হয়।

প্রতিক্ষণে যারা এ দেশের মুসলিমদের পাকিস্তানে পাঠানোর হুমকি দিয়ে থাকে, প্রতিমুহূর্তে যারা এই বহু  বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির আধার ভারতবর্ষের বুকে সাংস্কৃতিক -জাতীয়তাবাদের নামে ‘এক দেশ-এক জাতি-এক ধর্ম-এক ভাষা’র অবাস্তব তত্ত্বগত সন্ত্রাস চালাচ্ছে, ইফতারের আয়োজন তাদের মানায় না।’

ভোট বড় বালাই। তাই আরএসএসের ইফতার। কিন্তু মেনে নেওয়া আর মনে নেওয়া তো এক নয়। তাই সংঘ পরিবার আগে এদেশের সব মানুষকে মনে গ্রহণ করতে শিখুন, আগে উপলব্ধি করুন এ দেশ- এ মাটির অন্তরাত্মার আবহমান বহুত্ববাদী সংস্কৃতিকে, আগে মানবতার অবমাননার প্রায়শ্চিত্ত করুন…তারপর না হয় ইফতারের কথা ভাববেন।

চিন্তা নেই। যতই চেষ্টা করুন সংঘ পরিবার..দুর্গোৎসব, বড়দিন, বুদ্ধ জয়ন্তী,  ঈদ -উল-ফিতর বছর বছর এ মাটিতে অনুষ্ঠিত হবেই। এ মাটি সকলের-এ দেশ সবার।

Published on: জুন ৯, ২০১৮ @ ২০:১৩


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − 12 =