Published on: মে ১, ২০১৮ @ ২০:৩০
এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ ইদানীং ধর্মীয় উন্মাদনার খবর খুব শোনা যায়। এই নিয়ে বহু জায়গায় হানাহানিও কম হয় না। কিন্তু এসবের বাইরেও যে এক অপার শান্তির স্থান আছে, আর তা আছে আমাদের দেশ ভারতেই তা অনেকেই বোধ হয় জানেন ন। বিবিসি নিউজ সেই অসাধারণ খবরই তুলে ধরেছে। যেখানে হিন্দু আর শিখরা মিলে মসজিদ বানিয়ে দিয়েছে। হ্যাঁ, এমন অনন্য নজির গড়ে সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে পাঞ্জাবের মুম নামক এক গ্রাম।
বিবিসি নিউজ সূত্রে জানা গেছে, পাঞ্জাবের ঐ গ্রামে নাজিম রাজা খান নামে মুসলিম রাজমিস্ত্রী শিব মন্দির নির্মাণ করছিলেন। সেইসময় তার মনে হয়, তিনি একজন মুসলিম হয়ে হিন্দুদের মন্দির নির্মাণ করছেন।গ্রামে তো একটি পুরনো মন্দির আছে। এবার নতুন একটি মন্দির হবে। অথচ তাদের জন্যগ্রামে কোনও মসজিদ নেই। যেখানে গিয়ে তারা একটু শান্তিতে নামাজ পড়তে পারেন।
গ্রামে তাদের আত্মীয়রা এলে খুব অসুবিধা হয়।এসব তিন ভাবছিলেন।
আসলে গ্রামে মাত্র চারশো ঘর মুসলিম সম্প্রদায়ের বাস। যারা খুব গরিব। শ্রমিকের কাজ করে দিন গুজরান হয় তাদের। মসজিদ বানানোর পয়সা কোথায় তাদের!কিভাবে হবে তাহলে মসজিদ? শিখদের গুরুদুয়ারা আছে। হিন্দুদের আছে মন্দির। শুধু তাদের প্রার্থনা জানানোর জন্য আজ পর্যন্ত কোনও মসজিদ গড়ে উঠল না। বড়ই দুঃখ নাজিম রাজা খানদের।রোজই শিবমন্দির নির্মাণের কাজে যান। মন দিয়ে মন্দির গড়ার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। কিন্তু বড়ই খেদ, যদি তাদের জন্য একটি মসজিদ থাকতো তাহলে বড়ই ভাল হত। এভাবেই চলছিল।
একদিন কাজে গিয়ে নাজিম রাজা খানের মনে হল, আজ আর কোনও সংশয় রাখবেন না। মন্দির কমিটির কর্মকর্তার কাছে কথাটা পেরেই ফেলবেন বলে ঠিক করলেন। আর তারপরই তিন সেই কর্মকর্তার কাছে বলে বসলেন, আপনারা তো শীঘ্রই একটি নতুন মন্দির পাবেন।আগের মন্দিরও আছে। কিন্তু আমাদের তো প্রার্থনা জানানোর কোনও জায়গাই নেই। মসজিদ বানানোর জায়গা ও পয়সা কিছুই নেই। আপনারা কি আমাদের জন্য জমি দেবেন?
কয়েক দিনের মধ্যে এই প্রশ্নের জবাব পেয়ে গেলেন নাজিম রাজা খান। মন্দিরজ কতৃপক্ষ মসজদ গড়ার জন্য নশো স্কোয়ার ফুটের জমি দিলেন। নাজিম বলছিলেন, এ কথা শোনার পর আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছিলাম। কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা খূঁজে পাইনি।
এরপর সেই মসজিদ গড়ার কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল গ্রামের হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। হাত লাগালো তারাও। অর্থ দিয়ে সাহায্য করল শিখেরা। পাঞ্জাবের মুম নামক এই গ্রাম সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। যে শিক্ষা এই প্রত্যন্ত গ্রাম দিল তা সত্যি শিক্ষনীয়।
মজা করে গ্রামে নাজিমের বন্ধু স্কুল শিক্ষক ভারত শর্মা বলছিলেন, “ভাগ্যিস এই গ্রামে কোনও রাজনীতিবিদ ছিল না।”
Published on: মে ১, ২০১৮ @ ২০:৩০
ছবি ও সূত্রঃ বিবিসি