
Published on: মার্চ ১০, ২০১৮ @ ০০:২২
এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ সারা পৃথিবীতে এমন ঘটনা অনেক আছে। আমাদের আশপাশেও প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে এমন অনেক লড়াই-এর কাহিনি। বেশির ভাগই আড়ালে চলে যায়।কিন্তু মহারাষ্ট্রের পুনের বীড জেলার লিম্বারুই গ্রামের যুবক ওম পাইথানে এক অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন। প্রমাণ করে দিলেন নিজের ইচ্ছা আর অনুপ্ররণা থাকলে জীবনে কঠিন আর অসম্ভব বলে কোনও শব্দ থাকে না।না হলে একজন ওলা ড্রাইভার হয়ে যে ছেলেটি এতদিন কত মানুষকে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় পোঁছে দিয়েছে আজ সেই ছেলেই দেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশবাসীর সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করতে চলেছেন। স্বপ্ন বোধহয় এবাবেই সত্যি হয়!
এই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পিছনে ওম আজ একজনের অনুপ্রেরণার কথা জানাতে ভোলেননি। তিনি হলেন অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা অফিসার কর্ণেল বক্সি। যিনি তাঁকে এই পথে নিয়ে এসেছেন। তাঁর অনুপ্ররণা না পেলে এই স্বপ্ন কোনওদিনও সত্যি হত না, জানান ওম। বলছিলেন, সেদিনের কথা- ‘জানেন, আমি তখন ওলা ক্যাব চালাচ্ছি। একজন ভদ্রলোক এলেন। গাড়িতে চাপলেন। তাকে নিয়ে আমি যখন গাড়ি চালাচ্ছি, তিন আমাকে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদানের ব্যাপারে অনেক পরামর্শ দিয়েছিলেন। জানান সুযোগের কথা এবং তিনি আমাকে কমবাইনড ডিফেন্স সার্ভিস(সিডিএস) পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করতে পরামর্শ দেন। তিনি আমাকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল গণেশ বাবুর কাছে পাঠিয়েছিলেন।’
তখন আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স সিলেকশন অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম-এর ডিরেক্টর ছিলেন কর্ণেল গণেশবাবু। কর্ণেল বকশীর উপদেশ অনুসরণ করে, ওম ২০১৬ সালে তার প্রথম প্রচেষ্টায় কম্বাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং পরবর্তীতে ভোপালের সিরিস সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতে যোগদান করেন।
ওম পাইথনে ১০ মার্চ চেন্নাইয়ের অফিসার্স ট্রেনিং একাডেমিতে ভর্তি হওয়ার কথা, যেখানে শর্ট সার্ভিস কমিশনের জন্য অফিসার নিয়োগ করে থাকে। জানা যায়, ওম পাইথানের বাবা উত্তম পাইথানে বলেছিলেন যে তিনি সবসময়ই চেয়েছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে কারণ এটি তাঁর স্বপ্ন ছিল এবং অবশেষে তিনি তা অর্জন করেছেন ছেলের মধ্যে দিয়ে। ওম-এর বাবা নিজেই একজন চালক যিনি এই পেশায় ২৫ বছর ধরে আছেন এবং যিনি তার পরিবারের জন্য রুটি এবং মাখন জুগিয়ে গেছেন। পাইথানের বাবাও উল্লেখ করেছেন যে অবশেষে তিনি তাঁর পরিবারের জন্য গর্বিত, সে এখন তার দেশের সেবা করতে সক্ষম হবে।
এই সফল ও অনুপ্রেরণামূলক গল্পের কথা বলতে গিয়ে, ওম পাইথনের ছোট ভাই আদিনাথ বলেন যে পাইথনে প্রেরণা ও উৎসর্গীকরণের সাথে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। পরিবারের কথা চিন্তা করে সে দুটো কাজই করে গেছেন। একদিকে চাকরির জন্য পড়াশুনো চালিয়ে গেছেন, পাশাপাশি পরিবারের জন্য ওলা ক্যাবের গাড়িও চালিয়ে গেছেন।
আদিনাথের মতে, “আমার বাবা প্রায় ২৫ বছর ধরে চালক ছিলেন এবং আমাদের এই পেশাতে যুক্ত করতে চাননি এবং চেয়েছিলেন আমরা যেন আরও শিক্ষিত হই। ওম বাবার কাছ থেকে লুকিয়ে পরিবারের স্বার্থে চালকের কাজ করে গেছেন।”
সত্যি আজ এই গরিব লড়াকু পরিবার হয়ে উঠেছে সারা দেশের কাছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
জয় হিন্দ, ওম পাইথানে-তোমাকে জানাই অভিনন্দন।
Published on: মার্চ ১০, ২০১৮ @ ০০:২২