সংবাদদাতা-ড. সৌমিত্র পন্ডিৎ
এসপিটি নিউজ, কলকাতাঃ দুধের মতো সুষম খাদ্যকে নিয়ে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী ভুল বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, যা অত্যন্ত ক্ষতিকর-আগামিদিনে এসব বন্ধ হওয়া দরকার।বেঙ্গল ভেটেরিনারি কলেজের ১২৫তম প্রতিষ্ঠাদিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এগ্রিকালচার সায়েন্টিস্ট রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে শ্রীবাস্তব এর বিরুদ্ধে সরব হন।একই সঙ্গে তিনি অপুষ্টিতে ভোগা শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের কাছে আরও বেশি করে প্রাণীজ প্রোটিন পৌঁছে দেওয়ার দিকটিও তুলে ধরেন। সেই লক্ষ্য পূরণে বাংলার মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে মাছ-ডিম-মাংস-দুধ উৎপাদনের উপর জোর দিয়েছে তাতে আগামিদিনে আমরা আরও বেশি স্বাবলম্বী হতে পারব বলে মনে করেন অধ্যাপক শ্রীবাস্তব।অনুষ্ঠানে ১২৫ বছর বেঙ্গল ভেটেরিনারি কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে ঐতিহাসিক “পোস্টাল স্ট্যাম্প”-এর উদ্বোধন করেন দক্ষিণবঙ্গ শাখার পোস্টমাস্টার জেনারেল সঞ্জীব রঞ্জন। সেইসঙ্গে একটি স্ট্যাচুর উদ্বোধন করেন দুই মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও স্বপন দেবনাথ।
অনুষ্ঠানে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাণীসম্পদমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ একই সুরে প্রাণী চিকিৎসকদের গ্রামমুখী হওয়ার পরামর্শ দেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যের প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করে বেরোবেন তাদের চাকরির অভাব নেই, অভাব গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা করার মানষিকতা-সবাই ভাল কাজ করছে তাই আমরা আজ চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ফারাক অনেকটাই মেটাতে সমর্থ হয়েছি। গ্রামে এখনও অনেক প্রাণী চিকিৎসকের অভাবে মানুষ সমস্যায় পড়েছে বলে জানান।
পার্থবাবু বলেন, গ্রাম এগোলেই শহর এগোবে। এত পড়াশোনা করে সরকারি ক্লার্ক হলে- না হল পড়াশোনার প্রতি বিচার, না হল পেশার প্রতি দায়বদ্ধতা। তাই গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা করালে আমরা গ্রামীণ মানুষের সর্বপরি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারব।ডিম-দুধ-মাছ-মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচেষ্টার কথা স্বীকার করে উপাচার্য অধ্যাপক পূর্ণেন্দু বিশ্বাসকে অনুরোধ করেন-ছাত্রদের বলুন গ্রামে গিয়ে কাজ করতে। শহরে না বসে থেকে গ্রামের কৃষিজীবী মানুষের সেবা করার মধ্য দিয়ে পেশাগত শিক্ষার মর্যাদা লাভ করতে।
একই সুর শোনা যায় প্রাণীসম্পদমন্ত্রী স্বপন দেবনাথের গলাতেও। তিনি বলেন, নতুন ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে-কলমে শিক্ষার মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষের সেবার কাজও করতে হবে।তবেই আমরা মাছ-ডিম-দুধ-মাংস উৎপাদনে স্বনির্ভর হব।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য পূর্ণেন্দু বিশ্বাস জানান গ্রামীণ অর্থনীতির প্রসারে আরও কয়েকটি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র খোলার কথা জানান। তিনি বলেন, আগামিদিনে সরকারি সহায়তায় দুটি নতুন কলেজ চালু করা হবে জলপাইগুড়িতে, সঙ্গে তিনটি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র এবং নতুন একটি কলেজ খোলার প্রচেষ্টা চলছে। এগুলিকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীদের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে গ্রামীণ খেটে খাওয়া মানুষজনের উন্নতি সাধনে সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দেন। বেলগাছিয়ায় আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবার সাথে সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতেনাতে শেখার সুযোগ তৈরি হওয়ায় তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাজ্যের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয় এখন এক নম্বরে। আগামিদিনে দেশের মধ্যে এক নম্বর হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।