মুকুল রায়ের নাম না করে তাকে “চাটনি দাদু” বলে ব্যঙ্গ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের
মুকুলের বিরুদ্ধে তোপ অভিষেকের- “ওঁর একটি বুথে জেতার ক্ষমতা নেই, অর ক্ষমতা থাকলে একটা বুথে গ্রামপঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়লাভ করে দেখাক।”
“চাটনি দাদু” বাংলায় ভোটার তালিকা থেকে নাম সরিয়ে দিল্লিতে নাম তুলেছে। সবং-এর মানুষ “চাটনি দাদু”কে উপযুক্ত জবাব দেবেন।
সংবাদদাতা- বাপ্পা মণ্ডল
এসপিটি নিউজ, সবং, ১৬ ডিসেম্বরঃ ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই পারদ চড়তে শুরু করেছে সবং উপ-নির্বাচনে। আজ তৃণমূলের জনসভা থেকে বিজেপি সাড়াশি আক্রমণ করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। যেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে হাজির ছিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের এই দুই নেতাই আজ মুকুল রায়ের নাম না করে তাকে “চাটনি দাদু” বলে কটাক্ষ করেন।পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, কাজ নেই, কর্মসূচি নেই, “চাটনি দাদু” সবং ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কোনও লাভ হবে না। “চাটনি দাদু” আর “জিভ কাটা দিলীপ” যাকে প্রার্থী করেছে ২০১৬ সালের বিধানসভার নির্বাচনে তার বুথে মাত্র ১৪টি ভোট পেয়েছিলেন, বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।কটাক্ষ করে তিনি বলেন, বাম জমানায় হাত কাটা, কানকাটা দিলীপের নাম শোনা যেত, এখন বিজেপি হাজির করেছে “জিভ কাটা দিলীপ”কে।
শনিবার সবং ব্লকের চাঁদকুড়ি হাইস্কুল মাঠে সবং কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী গীতারানী ভুঁইয়ার সমর্থনে এক নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, সাংসদ ডাঃ মানস ভুঁইয়া, বিধায়ক দীনেন রায়, প্রদ্যোত ঘোষ, শ্রীকান্ত মাহাত, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি ও তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি ও দলের প্রার্থী গীতারানী ভুঁইয়া সহ অন্যান্যরা।
সমাবেশে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মুকুল রায়ের নাম না করে বলেন, “চাটনি দাদু” সবং-এ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পদ্মফুল তো দূরের কথা একটি কুঁড়িও ফোটাতে পারবে না। বিভীষণকে সামনে নিয়ে বিজেপি চলছে। কাজ নেই, কর্মসূচি নেই, তাই “চাটনি দাদু” সবং ঘুরছেন। তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য খেটে খাওয়া মানুষের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়ছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর বলেছিলেন-আচ্ছে দিন আসছে।কিন্তু মানুষের আচ্ছে দিনের বদলে জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলছে কেন্দ্র সরকারের জনস্বার্থ বিরোধী নীতি। তিনি আরও বলেন, স্বার্থান্বেষী ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে এফ আর ডি আই বিল আনছে কেন্দ্র সরকার। ঐ বিল প্রত্যাহার না করা হলে তৃণমূল কংগ্রেস লাগাতর আন্দোলন চালিয়ে যাবে। সবং কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী গীতা রানী ভুঁইয়াকে ঘাসের উপর জোড়া ফুল চিহ্নে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান।
সমাবেশের প্রধান বক্তা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ভাষণে বলেন, সবং কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে গীতা রানী ভুঁইয়ার জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র, তিনি ৭০ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতবেন বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মানস ভুঁইয়া যখন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন সেদিন মুকুলবাবুও ছিলেন। যদি মানসবাবু দুর্নীতিগ্রস্ত তাহলে তার পরদিন কেন উনি দল ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন না। বিজেপি উচ্ছিষ্টদের নিয়ে নাচানাচি করছে। হার্মাদদের নেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য্যকে প্রার্থী করেছে। তিনি মুকুল রায়ের নাম না করে বলেন, ওঁর একটি বুথে জেতার ক্ষমতা নেই, আর ক্ষমতা থাকলে একটা বুথে গ্রামপঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়লাভ করে দেখাক। ২০০১ সালে জগদ্দল থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে ছিল, ওর জামানত জব্দ হয়েছিল।
অভিষেক বলতে থাকেন, বাম জমানায় হাত কাটা, কানকাটা দিলীপের নাম শোনা গিয়েছিল, এখন বিজেপি হাজির করেছে জিভ কাটা দিলীপকে। “চাটনি দাদু” আর “জিভ কাটা দিলীপ” যাকে প্রার্থী করেছে ২০১৬ সালের বিধানসভার নির্বাচনে তার বুথে মাত্র ১৪টি ভোট পেয়েছিল। তিনি বলেন, “চাটনি দাদু” বাংলায় ভোটার তালিকা থেকে নাম সরিয়ে দিল্লিতে নাম তুলেছে। সবং-এর মানুষ “চাটনি দাদু”কে উপযুক্ত জবাব দেবেন। তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে সিবিআই, ইডি-র ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। তৃণমূল কারও চোখ রাঙানিকে ভয় করে না। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু যদি চুপ করে থাকতেন তাহলে এদেশ ছেড়ে ব্রিটিশরা যেত না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি চুপ করে থাকতেন তাহলে সিপিএমের বন্দুকের নলের ডগায় আমাদের থাকতে হত।
অধীর চৌধুরীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, সকালে সিপিএম রাতে বিজেপি। তাই কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্ব বাংলায় নেই।সিপিএমের হার্মাদরা বিজেপি দলে যোগ দিয়েছে, তাই তিনি দলের কর্মী, সমর্থকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে আছে, মানুষ চাইলে তৃণমূল আরও ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকবে। গেরুয়া-লালের মধ্যে পার্থক্য নেই। তাই বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করে সবং-এর উপ-নির্বাচনে গীতারানী ভুঁইয়াকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বান জানান অভিষেক। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জনস্বার্থ বিরোধী নীতির সমালোচনা করে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজকর্মের খতিয়ান তুলে ধরেন তিনি।
ছবিঃ রামপ্রসাদ সাউ