Published on: সেপ্টে ২৪, ২০২১ @ ১৭:৪৭
Reporter: Aniruddha Pal
এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২৪ সেপ্টেম্বর: ওদের কেউ দুই, কেউ-বা পাঁচ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সেইফ হোমে আটকে ছিলেন। এদের কেউ পাচার কিংবা অবৈধধভাবে কিংবা ভুল করে চলে এসেছিল ভারতে। এরপর বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনকে জানানো হয়। এরপর পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দফতরের অধীন প্রতিষ্ঠিত নারী ও শিশু পাচার রোধ বিষয়ক বিশেষ টাস্কফোর্সের যৌথ উদ্যোগে বিষয়টির একটি সমাধানের প্রচেষ্টা চালানো হয়। অবশেষে সেই প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় ভারতে পাচারের শিকার ৩৭জন নারী ও শিশুকে গত ২০ সেপ্টেম্বর পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এই খবর জানিয়েছে।
যেভাবে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে
বাংলাদেশে উপ-হাইকমিশনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রায় দেড়শতাধিক বাংলাদেশি নারী ও শিশু বিভিন্ন সময়ে পাচার কিংবা অবৈধভাবে বা ভুলক্রমে ভারতে এসে আটক হয়ে বিভিন্ন সেইফ হোমে অবস্থান করছেন। আটককৃত এ সব নারী ও শিশুদের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডিরেক্টরেট অব চাইল্ড রাইটস এন্ড ট্রাফিকিং বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, কলকাতাকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় অবহিত করে। বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতা এসব সেইফ হোমসমূহ পরিদর্শন করে আটককৃত বাংলাদেশি নারী ও শিশুদের তথ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে। পরবর্তীতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পাদনের পর বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, কলকাতা ট্রাভেল পারমিটের প্রমাণীকরণ, ডকুমেন্টেশন ইস্যু করার মতো একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া অতি দ্রুততম সময়ে সম্পাদন করে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
সেইফ হোমে আটকে থাকা এই সব নারী ও শিশুর সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু পাচার রোধকল্পে প্রতিষ্ঠিত বিশেষ টাস্কফোর্সের যৌথ উদ্যোগে গৃহীত পদক্ষে্প নেওয়া হয়েছে। এই কারণে বছরের পর বছর ভারতের বিচারিক আদালতের মামলার কারণে বিভিন্ন সেইফ হোমে আটকে থাকা এই সব নারী ও শিশুর সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে বলে ঐ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই প্রক্রিয়া জারি থাকবে
বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো এই ৩৭ জন নারী ও শিশুর মধ্যে ৪ জন পূর্ণবয়স্ক নারী সহ আরও ১২জন নারী ও ২১জন পুরুষ রয়েছে যাদের বয়স ১৮ বছরের নীচে এবং যারা ভারতের বিভিন্ন সেইফ হোমে প্রায় দুই বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত আটকে ছিলেন। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি আরও ৩৮ জন নারী ও শিশুকে ফেরত পাঠানোর পর বড় পরিসরে এই ধরনের এটি দ্বিতীয় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এবং আটকে থাকা অবশিষ্ট বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার এই প্রক্রিয়া জারি থাকবে।এমনটাই বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বেনাপোল সীমান্তে যারা উপস্থিত ছিলেন
বেনাপোল সীমান্তে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নিকট ৩৭জন নারী ও শিশুকে হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এইসময় সেখানে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতার প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান মিজ শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতির প্রতিনিধিত্বে জনাব মোঃ সানিউল কাদের, প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) সহ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতার একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে এবং ভারতের বিভিন্ন সংস্থা, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং বিএসএফ সহ বাংলদেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরাও।
Published on: সেপ্টে ২৪, ২০২১ @ ১৭:৪৭