নামিবিয়া থেকে কুনো ন্যাশনাল পার্কে নিয়ে আসা মহিলা চিতা সাশা’র মৃত্যু

Main দেশ বন্যপ্রাণ ভ্রমণ
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ২৭, ২০২৩ @ ২৩:৪০

এসপিটি নিউজ ব্যুরো: আজ কুনো ন্যাশনাল পার্কে নামিবিয়া থেকে নিয়ে আসা মহিলা চিতা সাশা মারা গেল। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে সাশা কিডনির সংক্রমণে ভুগছিল। গত ৬৪দিন ধরে বিশেষজ্ঞ প্রাণী চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসাও করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। বলা হয়েছে, ভারতে নিয়ে আসার আগে থেকেই চিতাটি কিডনির সংক্রমণে ভুগছিল।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নামিবিয়া থেকে নিয়ে আসা স্ত্রী চিতা সাশা-কে কুনো ন্যাশনাল পার্কে গত ২২ জানুয়ারি, ২০২৩ –এ ছেড়ে দেওয়ার পর মনিটরিং দল তাকে সুস্থ অবস্থায় পেয়েছিল। চিতাকে দেখভালের জন্য তিনজন প্রাণী চিকিৎসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা সাশা-কে পর্যবেক্ষণ করার পর বুঝতে পারে যে সাশা’র বিশ্রামের চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। ওই দিনই সাশা-কে কোয়ারেন্টাইন-এ নিয়ে যাওয়া হয়। এরই মধ্যে তার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়, যা পরে রাষ্ট্রীয় বন বিহার উদ্যানের অবস্থিত ল্যাবরেটরিতে অত্যাধুনিক মেশিনে পরীক্ষা করা হয়। রক্তের নমুনা পরীক্ষার পর জানা যায় যে চিতাটির কিডনিতে সংক্রমণ আছে। এই খবরের পরই ভোপালে বন বিহার রাষ্ট্রীয় উদ্যান থেকে বন্যপ্রাণী চিকিৎসক এবং এক জন অন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে পোর্টেবল আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন নিয়ে কুনো ন্যাশনাল পার্কে পাঠানো হয়। সাশার কিডনির রোগ ভালো করে খতিয়ে দেখা হয়।

দেরাদুনে অবস্থিত ভারতীয় বন্যপ্রাণী সংস্থার অভিজ্ঞ বৈজ্ঞানিক তথা কুনো ন্যাশনাল পার্কের আধিকারিক দ্বারা নামিবিয়ায় চিতা কনজার্ভেশন ফাউন্ডেশন থেকে সাশার চিকিৎসার যাবতীয় হিস্ট্রি সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে জানা যায় যে ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট নামিবিয়া রক্তের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল, তা থেকে জানা যায় যে সেই সময় রক্তে ক্রিয়েটিনিন-এর স্তর ৪০০-র বেশি ছিল, আর তা থেকেই বোঝা যায় যে সাশার কিডনির সংক্রমণ ভারতে নিয়ে আসার আগে থেকেই ছিল।

২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে সাশার মৃত্য পর্যন্ত কুনো ন্যাশনাল পার্কের পদস্থ সমস্ত চিকিৎসক থেকে শুরু করে নামিবিয়ার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ইলাই ওয়াকার রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে সাশার চিকিৎসা করেছেন। এমনকি, নামিবিয়ার চিতা কনজার্ভেশন ফাউন্ডেশন তথা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেশজ্ঞ ডাক্তার অ্যাড্রিয়ান টোর্ডিফ এর সঙ্গে লাগাতর ভিডিও কনফারেন্সিং ও দূরভাষের মাধ্যমে যোগাযোগ করে যাওয়া হয়েছে।

২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১২টি চিতাকে কুনো ন্যাশনাল পার্কে নিয়ে আসার পর ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞ ডা. লৌরি মার্কার, ডা. অ্যাড্রিয়ান টোর্ডিফ, ডা. এন্ডি ফ্রেজার, ডা. মাইক তথা ফিন্ডা গেম রিজার্ভের বরিষ্ঠ প্রবন্ধকের থেকেও সাশা-র বিষয়ে বিস্তারিত চর্চা করা হয়েছে। এদের সকলকেই সাশার বিষয় জানানো হয়েছিল। এমনকি তাদের পরামর্শও নেওয়া হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলার পর তাদের কাছে থেকেও এটাও জানা যায় যে সাশার এত কঠিন অসুখের পরেও তার যথাযথ চিকিৎসার কারণে শরীর অপেক্ষাকৃত ভালো ছিল।

নামিবিয়া থেকে নিয়ে আসা শেষ সাতটি চিতার মধ্যে ৩টি পুরুষ এবং একটি স্ত্রী চিতা স্বচ্ছন্দে ঘোরাফেরা করার জন্য তাদের মুক্ত বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা এখন সম্পূর্ণভাবে সুস্থ ও সক্রিয় থাকার ফলে অল্প বিস্তর শিকারও করছে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে নিয়ে আসা ১২টি চিতা বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও তারা সকলেই সুস্থ ও সক্রিয় আছে।

Published on: মার্চ ২৭, ২০২৩ @ ২৩:৪০


শেয়ার করুন