সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল ছবি-রামপ্রসাদ সাউ
Published on: মার্চ ৯, ২০১৮ @ ২১:২৩
এসপিটি নিউজ, গোয়ালতোড়, ৯ মার্চঃ এক সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে গেল তার আর দেখা নেই। তিনি আছেন তার মতোই। সুন্দরবনে যিনি দক্ষিণ রায় নামে খ্যাত সেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার স্বাধীনভাবেই চলাফেরা করে বেড়াচ্ছে গোটা জঙ্গলজুড়েই। বন দফতর এক, দুই, তিন, চার করে খাঁচার সংখ্যা যেমন বাড়িয়ে চলেছে ঠিক তেমনভাবেই রয়্যাল বেঙ্গলটিও নিজের বিচরন ক্ষেত্র প্রসারিত করে চলেছে। এতদিন লালগড়, গুড়গুড়িপাল, শালবনীতেই দেখা গেছিল তার পদচারনা। এবার সেই তালিকায় যোগ হল গোয়ালতোড়।ড্রোন নামিয়েও তার অবস্থান জানা তো দূর অস্ত বরং গ্রামবাসীদের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে এই ধূর্ত রয়্যাল বেঙ্গলটি।
গত এক সপ্তাহ ধরে ঠায় ঘাঁটি গেড়ে বসে আছেন নেদিনীপুর রেঞ্জের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহ সহ অন্যান্য বন আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে জঙ্গলে বসানো হয়েছে সাতটি ট্র্যাপ ক্যামেরা। সেই ২ মার্চ শেষবারের মতো রয়্যাল বেঙ্গলের ছবি ধরা পড়েছিল তাতে। তার পর দেখতে দেখতে এক স্পতাহ কেটে গেল কোথায় যে গেল বাঘটি তা নিয়ে রীতিমতো হয়রান বন দফতর। বাঘটি না ধরা পর্যন্ত যে তাদেরও চোখেওমুখে শান্তি নেই। সবসময়ই তাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে কি হয় কি হয় ভাব।
এর মধ্যে বাঘটি যেভাবে অতি ধূর্ততার সঙ্গে তার জায়গা বদল করে একের পর এক নতুন জায়গা পছন্দ করে চলেছে তা নিয়েও বেশ বিব্রত হয়ে পড়েছে সুন্দরবন থেকে বাঘ ধরার কাজে অভিজ্ঞ বনকর্মীরাও।তারাও এখনও পর্যন্ত বাঘটি ধরতে ব্যর্থ। গত এক সপ্তাহ ধরে বাঘটি কিন্তু তার নিজের চারিত্রিক নিয়মেই একের পর এক জায়গা বদল করে নিজের বিচরন ক্ষেত্র বাড়িয়ে চলেছে। বাঘ বিশেষজ্ঞ্রা বলছেন, এটা রয়্যাল বেঙ্গলের চারিত্রিক নিয়মের মধ্যেই পড়ে। কারণ, তারা একদিনে অনায়াসেই ১৫-২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারে। দেখা গেছে, লালগড় থেকে মেদিনীপুর সদর থানার গুড়গুড়িপাল থানার বক্সির জঙ্গলের দূরত্ব আবার গুড়গুড়িপালের বক্সির জঙ্গল থেকে শালবনীর লক্ষণপুরের জঙ্গলের দূরত্ব আর সেখান থেকে কিংবা লালগড়ের ঝিটকার জঙ্গল থেকে গোয়ালতোড়ের পাথরপাড়ার জঙ্গলের দূরত্ব অতটাই। কাজেই সহজেই অনুমেয় ঐ বাঘটাই তার আপন নিয়মেই এইসব এলাকায় চলাফেরা করে বেড়াচ্ছে।
শুক্রবার সকালে গোয়ালতোড়ের পাথরপাড়ার জঙ্গলে ফের বাঘের পায়ের ছাপ দেখে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। গ্রামবাসী গোবিন্দ মান্না ও রাজীব মান্না বলেন, বাঘের পায়ের ছাপ একাধিক জায়গায় দেখার পর গ্রামবাসীরা রাস্তায় চলাফেরা বন্ধ করে দিয়েছে।জঙ্গল লাগোয়া একটি জলাশয়ে বাঘটি এদিন সকালে জল খেতে এসেছিল বলেও কেউ কেউ জানিয়েছে। জলাশয়ের কাছে বাঘটির পায়ের বেশ কয়েকটি ছাপও দেখা গেছে।
বন দফতরকে খবর দিলেও গ্রামবাসীরা জানিয়েছে, এভাবে ঘুমানো যায় না। রাতে তাই তারা ঠিক করেছে, না ঘুমিয়ে রাত জেগেই তারা বাঘের উপর নজর দারি চালাবে। রাতে কোনওভাবেই যাতে বাঘটি কোথাও আক্রমণ করতে না পারে সেদিকেই নজর রাখবেন তারা।
Published on: মার্চ ৯, ২০১৮ @ ২১:২৩