
Published on: মার্চ ৩, ২০১৮ @ ২১:৩০
এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৩ মার্চঃ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)-র নির্বাচন সাম্প্রতিক কালে এক নজির তৈরি করল।যেখানে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পর থেকে পক্ষে ও বিপক্ষে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। এই নির্বাচনের পর ফল ঘোষণা নিয়ে একটা অংশ বলছে ভোটে জালিয়াতি হয়েছে আর একটা অংশ বলছে এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।
শনিবারই বাংলাদেশের সংবাদপত্র নয়া দিগন্ত পত্রিকায় এই বিষয়ে একটি দীর্ঘ সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। যেখানে পক্ষে-বিপক্ষের বিবৃতি উদ্ধৃত করে এই নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।সেখানে ডিইউজে (একাংশ) নির্বাচনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচনী এজেন্টদের এক যৌথ বিবৃতি উল্লেখ করা হয়েছে। সেই বিবৃতিতে নির্বাচনে জাল-জালিয়াতি, অনিয়ম, নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান সহ সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, “ব্যালট বাক্স থেকে ব্যালট শিট বের করার আগেই কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য বিদায় নিয়ে চলে যান। তার ভোট গণনা প্রক্রিয়ার কোনও স্তরেই আর যুক্ত ছিলেন না।” বিবৃতিটিতে আরও বলা হয়েছে, “এবারই প্রথম ভোটারের হাতে ব্যালট পেপার দেওয়া হলেও ভোটারদের টিপসই কিংবা সাক্ষর রাখা হয়নি।”
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ফলাফল গোপনে টাঙানো হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।এই ফলাফল প্রকাশে আমাদের মতামত নেওয়া হয়নি। এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত ও বিস্মিত। এ পরিস্থিতিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে পুনরায় ভোট গ্রহণের আবেদন করছি।”
বিবৃতিদাতারা হলেনঃ জাহাঙ্গীর খান বাবু(সভাপতি প্রার্থী কুদ্দুস আফ্রাদের এজেন্ট), মোঃ মোশারফ হোসেন (সভাপতি ও সাঃ সম্পাদক প্রার্থী জাফর-কামাল প্যানেলের এজেন্ট), মোশারফ হোসেন বাবলু(সভাপতি প্রার্থী আতাউর রহমানের এজেন্ট), মোঃ আনোয়ার হোসেন (সাঃ সম্পাদক প্রার্থী সেবীকা রানীর এজেন্ট), গাউসুল আজম রিপু (সাঃ সম্পাদক প্রার্থী অমিয় ঘটক পুলকের এজেন্ট), কামরুল ইসলাম (সাঃ সম্পাদক প্রার্থী গাজী জহিরুল ইসলামের এজেন্ট), রওশন ঝুনু (সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী), মোঃ শাহাযাদা (সাঃ সম্পাদক প্রার্থী এম এ কুদ্দুসের এজেন্ট)।
তবে এই বিবৃতির বিপক্ষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি তাদের মত ব্যক্ত করেছেন। পত্রিকাটিতে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে-‘ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে একাংশ) নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ১০ প্রার্থীর বিবৃতি পাঠ করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি স্তম্ভিত ও মর্মাহত। কারণ তারা কারচুপির অসত্য অভিযোগ তুলেছেন। তারা পালটা বিবৃতিতে জানিয়েছে, “সুষ্ঠুভাবেই নির্বাচন হয়েছে। ডিইউজের বিদায়ী সভাপতি এবং বিএফিউজের (একাংশ) সভাপতি এ নির্বাচন পর্যবেক্ষন করেছেন। ফলাফল তাদের উপস্থিতিতেই ঘোষণা করা হয়েছে। সারা দুনিয়াতেই ভোটার উপস্থিতির উপরই ভোটের গতি নির্ভর করে। তাই ‘ভোটের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে’ এ অভিযোগ সদুদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে মেনে নিতে পারছে না কমিটি।”
এতসবের পরও কিন্তু ডিইউজে-র আর এক প্রার্থী আলম খায়রুলের সোশ্যাল নেটওয়ার্কে একটি পোস্টকে ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে।তিনি যা পোস্ট করেছেন তা বেশ চাঞ্চল্যকর।তিনি লিখেছেন-
১। সদস্য পদে কথিত ফলে জয়ী জনাবা হালিমা আক্তার লাবন্য , যিনি মনোনয়ন ফরমে স্বাক্ষর করেননি। কারন তিনি দেশে ছিলেন না।
২। আমীর মোহাম্মদ, যিনি দফতর সম্পাদক পদে কথিত ফলে জয়ী, তিনি যে প্রার্থী তা নিজেও জানতেন না। কারণ ওই সময় ভারতে ছিলেন।
৩। আরেক প্রার্থী মাসুদ ঢালী , তিনিও ছেলের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওই সময় মালয়েশিয়া ছিলেন।
দুর্ভাগ্যের বিষয়, এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বরাবর এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলেও তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়নি।এর কি জবাব আছে। তা জানায় অপেক্ষায় থাকতেই হবে।
গত ২৮ তারিখ নির্বাচনের পর থেকে তিন দিন কেটে যাওয়ার পরও যেভাবে এই নিয়ে জল ঘোলা হচ্ছে তা নিয়ে কলকাতার সাংবাদিক মহলেও বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও তারা সকলেই মনে করেন, এটা বাংলাদেশের সাংবাদিকদের আভ্যন্তরীন ব্যাপার। তাই তারাই এর সমাধান সূত্র বের করে বিতর্কের ইতি টানবেন।
Published on: মার্চ ৩, ২০১৮ @ ২১:৩০