ছিটকুলে চলতি বছরে দ্বিতীয়বার তুষারপাত, পারদ নামল মাইনাস ৫-এ, সাক্ষী থাকল কলকাতার পর্যটকরা

আবহাওয়া দেশ ভ্রমণ
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা- অনিরুদ্ধ পাল, ছিটকুল (হিমাচল প্রদেশ)

 

Published on: এপ্রি ১১, ২০১৮ @ ২১:৩৮

এসপিটি নিউজ, ছিটকুল, ১১ এপ্রিলঃ  এমন অভিজ্ঞতা সচরাচর হয় না। তাও সেটা যে এই এপ্রিল মাসে হয়ে যাবে তা বোধহয় পর্যটকরাও ভাবতে পারেননি। পশ্চিমবঙ্গে এখন পঞ্চায়েত ভোটের ব্যস্ততা। সেই অর্থে এবার তাই হিমাচলপ্রদেশে খুব বেশি বাঙালি পর্যটকদের ঢল চোখে পড়ছে না।কিন্তু যে স্বল্প কয়েকজন বাঙালি পর্যটক এসেছেন তাদের এবার তুষারপাত দেখার সৌভাগ্য হল। বুধবার হিমাচল প্রদেশের কিন্নর জেলার ছিটকুল পাহাড়ি গ্রামে তুষারপাত শুরু হয়ে যায়। তাপমাত্রার পারদ নেমে যায় মাইনাস ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।  পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগেই  পর্যটকরা নিচে নেমে আসেন।

মার্চের শেষ দিকে পর্যটকদের জন্য খুলে যায় ভারত-তিব্বত সীমান্তবর্তী শেষ গ্রাম ছিটকুল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা ১১,৩১৯ ফুট । এখানে ১২ মাসই ঠান্ডা থাকে। তবে এপ্রিল মাসে এখানে সচরাচর তুষারপাত হয় না। গত বছরও এই সময় ছিটকুলে এমনটা হয়নি। এবার সমস্ত কিছুকে ছাপিয়ে গেল  এ দিনের তুষারপাত।

ঘড়িতে তখন সকাল সাড়ে দশটা কি পোনে এগারোটা হবে। কলকাতা থেকে কুণডু স্পেশাল-এর চারটি গাড়ি ঢুকেছে ছিটকুল গ্রামে। আচমকা শুরু হয়ে গেল তুষারপাত। পর্যটকদের কথা বাদ দিলাম ছিটকুল গ্রামের বাসিন্দারা পর্যন্ত এই সময়ে তুষারপাতের ঘটনায় রীতিমতো অবাক।

গ্রামের এক ত্রুণী অঙ্কিতা এই তুষারপাতের ঘটনায় তো বেশ অবাক। তিনি জানালেন, “আমরা খুব বেশি দেখিনি এপ্রিল মাসে এখানে তুষারপাত হতে। এখানে তুষারপাত হলে খুব অসুবিধা হয়ে যায়। এর মধ্যেই আমাদের বাস করতে হয়। তবে এতে আমাদের কোনও অসুবিধা হয় না।“ গ্রামের এক যুবক মহেশ জানালেন, তুষারপাতের ঘটনা এখানে হয়েই থাকে। তবে এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ বারের মতো তুষারপাত হয়েছিল। এরপর এই এপ্রিল মাসে হল এই তুষারপাত।

গ্রামের আর এক তরুণীর সঙ্গে কথা হল। পূজা নামে ঐ তরুণী পেশায় স্কুল শিক্ষিকা। তিনিও বলছিলেন এই তুষারপাতের কথা। কথা বলার সময় তুষারপাত প্রবল বেগে পড়ছিল। ফলে বেশি সময় কথা বলতে পারেননি পূজা। তিনি যাওয়ার সময় বলে যান, এপ্রিল মাসে ছিটকুলে তুষারপাত খুব কম সময় হয়েছে। এটা সত্যিই অবাক করার মতো ঘটনা।

গ্রামের এক কৃষকও বলছিলেন, আপনারা তাড়াতাড়ি এখান থেকে নেমে যান। বেশি সময় থাকবেন না। তুষারপাত যদি বেশি সময় ধরে চলতে থগাকে তবে আপনারা সাংলা পৌঁছতে পারবেন না। রাস্তায় বরফ জমে গেলে গাড়ির চাকা আটকে যাবে।

এটা বুঝতে পেরে  আগেভাগেই কুণ্ডু স্পেশালের ট্যুর ম্যানেজার রাজেশ কর তড়িঘড়ি পর্যটকদের গাড়িতে গিয়ে বসার অনুরোধ করেন। রাস্তা বরফে ঢেকে যাওয়ার আগেই পর্যটকদের নিয়ে কুণ্ডু স্পেশালের টিম সাংলায় পৌঁছে যায়।তবে এদিন কুণ্ডু স্পেশাল একটা জায়গায় আবারও অন্যান্য ট্যুর অপারেটরদের পিছনে ফেলে দিল তা হল-ছিটকুলের তুষারপাত। চলতি মরশুমে তারাই কিন্তু কলকাতার প্রথম ভ্রমণ সংস্থা যারা পর্যটকদের এই বিরল দৃশ্য দেখানোর সাক্ষী করতে পারল। যা নিয়ে পর্যটকদের মধ্যেও দেখা গেল এক দারুন উৎফুল্লতা। কুণ্ডুর সহকারী ম্যানেজার পুষ্পেন্দু মিত্রও জানালেন, তিনিও তার কর্মজীবনে একাধিকবার হিমাচলে এসেছেন। কিন্তু কোনও বার তুষারপাত দেখা হয়নি। এবার সেটা হয়ে গেল।

Published on: এপ্রি ১১, ২০১৮ @ ২১:৩৮

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 7 = 1