সংবাদদাতাঃ বাপ্পা মণ্ডল
এসপিটি নিউজ, গড়বেতাঃ সবুজ গাছপালায় ঘেরা মনোরম পরিবেশে ঘেরা গড়বেতা। যেখানে আছে রাজবল্লভপুর গ্রাম। এই গ্রামের ভিতর দিয়ে বয়ে গেছে শিলাবতী নদী। সেই নদীতেই বৃহস্পতবার দুপুরে মাছ ধরতে গেছিল গ্রামের কয়েকজন যুবক। আচমকা তাদের নজর চলে যায় নদীর মাঝখানে, যা দেখে তারা বিস্ম্যে হতবাক হয়ে যায়। নদীর বুক চিড়ে বেরিয়ে এসেছে প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ।স্থানীয় সিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে ইতিহাসবিদও কৌতূহল প্রকাশ করে এর প্রকৃত পরীক্ষানিরীক্ষা করতে পরামর্শ দিয়েছেন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতায় শিলাবতী নদীর মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসেছে প্রাচিন আমলের ধ্বংসাবশেষ।দেখা যেচ্ছে, ঐ ধ্বংসাবশেষে কোন পুরনো আমলের বাড়ির গাঁথনির ইট। গড়বেতা থানার রাজবল্লভপুরে শিলাবতী নদীর মাঝে এমন ঘটনাকে ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। বিষয়টি হাওয়ার মতো ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন ছূটে এসে ভিড় জমায়। খবর পেয়ে সেখানে আসেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা। আসে সন্ধিপুর ফাঁড়ি ও গড়বেতা থানার পুলিশ।
এদিন শিলাবতী নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিল রাজবল্লভপুর গ্রামের কয়েকজন যুবক।নদীঘাট থেকে প্রায় ৩০০ মিটার পূর্বদিকে আচমকা চোখ যেতেই তারা দেখে, সেখানে নদীর মাঝখানে বেরিয়ে আছে প্রাচীন আমলের কোনও বাড়ির ধ্বংসাবশেষ। এরপরই ধীরে ধীরে নদীর পাড়ে ভিড় জমতে শুরু করে। কাউকে ডেখা গেছে ওই ধ্বংসাবশেষের উপর দাঁড়িয়ে স্নান করতে, কেউ বা আবার ওর উপর দাঁড়িয়ে ছবিও তুলেছে। তবে,সবার মনেই প্রশ্ন জাগে, নদীর বুকে এই প্রাচীন ধ্বসাবশেষ এল কোথা থেকে? নদীর বুক চিড়ে এতদিন বাদে যা বেরিয়ে এসেছে তা কোন সময়ের নিদর্শন?বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরেই চলে গ্রাম জুড়ে এই জল্পনা-কল্পনা।
রাজবল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক মঙ্গল প্রসাদ মাইতি বলেন, “নদীর প্রায় মধ্যবর্তী অংশে ২০-২২ ফুট লম্বা প্রায় আড়াই ফুট চওড়া ইটের ভাঙাচোরা দেওয়ালের মতো দেখা গেছে। মনে হচ্ছে, কোন প্রাচীন মন্দির বা রাজার গড় বা বসতবাড়িও হতে পারে, যা নদী গর্ভে চলে যেতে পারে।” গ্রামবাসীদের দাবি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী সহ এলাকাটিকে ভাল করে খনন করা হোক, এমনকি প্রত্নতাত্ত্বিকদের নিয়ে এসে এলাকায় পরীক্ষানিরীক্ষা করা হোক।
গড়বেতার পুরাতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করা ইতিহাসবিদ তারাশঙ্কর ভট্টাচার্য্য বলেন, “একসময় গড়বেতা, বগড়ি এলাকায় অচল সিংহের রাজত্ব ছিল। তাঁর কোনও গোপনগড় বা আস্তানা হতে পারে, কিংবা রাজবল্লভপুর গ্রামের পাশে মালবাঁন্দিতে নীলকর সাহেবদের আস্তানাও থাকতে পারে। তবে, পরীক্ষানিরীক্ষা করা দরকার।”
গড়বেতা ১ নম্বর ব্লকের যুগ্ম বিডিও বিশ্বনাথ ধীবর বলেন, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথাও বলছি। তবে এখনও এই কাণ্ডের কোনো সূত্র বের হয়নি আজ রাত পর্যন্ত।নদীর ধারে আজ শুক্রবারও দেখা গাছে কৌতূহলী মানুষের ভিড়।ছবিঃ রামপ্রসাদ সাউ