
এসপিটি নিউজ, হাড়োয়া, ১ ডিসেম্বরঃ ভারত সরকার কথা দিক আঁধার লিঙ্ক করার পর সেই ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অপর কেউ যদি টাকা লোপাট করে দেয়্ তবে সেই টাকা আবার ফেরত পাওয়া যাবে তবে আমি আঁধার লিঙ্ক করব।তা না হলে প্রয়োজনে মোবাইল ব্যবহার করব না তাও ভাল তবু মোবাইলে আঁধার নম্বর দেব না। আঁধার নিয়ে এভাবেই নিজের অবস্থান আরও একবাড় পরিষ্কার করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সারা দেশে বিজেপির ভূমিকা নিয়ে ফের সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দুপুরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাড়োয়ায় এক সভায় দাঁড়িয়ে বিজেপি ও তাদের সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। মমতা বলেন, ‘মানুষের পাশে থাকা এটা আমাদের ধর্ম। এই কথাটাই রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বলেছিলেন সর্ব ধর্ম সমন্বয়।’ তাঁর প্রশ্ন- স্বামী বিবেকানন্দের চেয়েও বড় হিন্দু এরা? তারপরেই তিনি নিজেই জবাব দেন-হিন্দু ধর্মের বদনাম করা এদের কাজ। হিন্দু ধর্মকে ছোট করা এদের কাজ।হিন্দু ধর্মের নামে মতলব করা এদের কাজ। একথা বলার পরই উদাহরন টেনে বলেন- ‘স্বামী বিবেকানন্দ মুসলিমদের ঘরে গিয়ে হুকো টনে দেখেছিলেন জাত যায় কিনা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গান গেয়েছিলেন-বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু বাংলার ফল পূণ্য হউক হে ভগবান।রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বলেছিলেন-‘ ওরে মা মানে তো মা, মা-কে কেউ বলে মা, কেউ বলে মাদার আবার কেউ বলে আম্মি।’ এই তো কথা আর তো কিছু কথা নয়।কেউ বলে জল, কেউ বলে পানি আবার কেউ বা বলে ওয়াটার-এই তো আর তো কিছু নয়।’ এক নাগাড়ে কথাগুলি বলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলে ওঠেন-‘তাহলে আমি কার কথা শুনব- রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কথা শুনব, স্বামী বিবেকানন্দের কথা শুনব, আম্বেদকরের কথা শুনব, মৌলানা আবুল কালাম আজাদের কথা শুনব, ভগত সিংয়ের কথা শুনব, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা শুনব, নজরুলের কথা শুনব, না কয়েকজন কুৎসাবাজ জন্মিয়েছে যারা ভারতবর্ষকে ভাবছে যা ইচ্ছে তাই করব এসব দাঙ্গাবাজদের কথা শুনব। আমি আমার মনীষিদের কথা শুনব।সারি যাহা সে আচ্ছা হিন্দুস্থা হামারা্…..আমি ইকবালের কথা শুনব।’
মোদির নাম না করে তাঁকে উদ্দেশ্য কোড়ে বলতে থাকেন- ‘বড় বড় কথা এদের, এত বড় বড় কথা বলছে জিজ্ঞাসা করুন, চার বছর তো হয়ে গেল কি করেছেন জনগণে্র কেন্দ্র? লোকের টাকা কেড়ে নিয়েছে। রোজ রোজ ভয় দেখাচ্ছে। ৭৫ হাজার ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট দেশ ছেড়ে চলে গেছে।যে টাকা দেশ থেকে চলে গেছে তা নিয়ে আসবেন বলেছিলেন নিয়ে আসতে তো পারেননি উপরন্তু তার থেকে বেশি টাকা দেশ থেকে বেড়িয়ে চলে গেছে।’
সভার শেষে আধার কার্ড নিয়েও সরব হন মমতা। বলেন- ‘আধার কার্ড করেছে। এবার বলছে আধার কার্ড ব্যাঙ্কে লিঙ্ক দিয়ে দেবে।আপনার মোবাইলে লিঙ্ক দিয়ে দেবে।এটা জানেন না, আধার কার্ডের নাম কিভাবে চলে যাচ্ছে। আধার কার্ডের নাম দিয়ে ব্যাঙ্কের টাকা তুলে নিচ্ছে।হঠাত একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন আপনার ব্যাঙ্কের যে গচ্ছিত টাকা তা আছে তা তুলে নিয়ে যাওয়া হল। কিন্তু ব্যাঙ্ক আর মোবাইলে লিঙ্ক কেন? ব্যাঙ্কের টাকা তুলে নেবে। ভারত সরকার কথা দিক-যদি কেউ ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নেয় তুমি সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে তবেই আমি ব্যাঙ্কে লিঙ্ক করব। আমার টাকা যদি কেউ তুলে নিয়ে যায় তুমি কি দায়িত্ব নেবে?’ এরপরই মমতার সংযোজন- ‘মোবাইন ব্যবহার করব না তাও ভাল তবু আমি মোবাইলে আধার কার্ডের নম্বার দেব না। ওরা সবাইকে কন্ট্রোল করতে চায়। সবাই কন্ট্রোল হলেও কিছু কিছু মানুষ আছে তাদের কন্ট্রোল করা যায় না। ভয় দেখিয়ে কন্ট্রোল করা যায় না, আমি তাদের মধ্যে একজন।ভয় দেখিয়ে, মুখ বন্ধ করে, এজেন্সি দিয়ে,অপবাদ করে, কুৎসা করে, চরিত্রহীনতা করে, কিচ্ছু করা যাবে না। যতক্ষন বেঁচে থাকব মানুষের কথা বলব, মানুষের কথা ভাবব, মানুষের জন্য লড়্ মানুষের জন্য বাঁচব, মানুষের জন্য মরব। আর যদি তাতে সব চলে যায় যব চলে যাক। কিচ্ছু যায় আসে না মানুষের কাছে তো থাকব।’ ছবি সৌজন্যে ফেসবুক